অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ১২ই জানুয়ারী ২০২৫ | ২৯শে পৌষ ১৪৩১


সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ: মৃত্যু বেড়ে ৬, আহত ২৫


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৪ঠা মার্চ ২০২৩ রাত ১০:৩৪

remove_red_eye

১৫৮

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বেসরকারি সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে; ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় এ নিয়ে ছয়জন নিহত হওয়ার খবর এল এবং আহত হয়েছেন ২৫ জন।

শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সোনাইছড়ি ইউনিয়নে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে ওই প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ঘটে।

বিস্ফোরণের পরপরই ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে বলে জানান সীতাকুণ্ডের ইউএনও শাহাদাত হোসেন।

ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক শাহজাহান শিকদার জানান, বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটে তাদের কাছে সীমা অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে। ৪টা ৫৫ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট সেখানে পৌঁছায়। পরে আরও ৮টি ইউনিট সেখানে যোগ দেয়। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় ছয়জন নিহত হয়েছেন বলে রাত ৯টার পরে জানান চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান। এদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় মিলেছে। আরেকজন অজ্ঞাত।

এর আগে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ৫ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন।

বিস্ফোরণের খবর শুনেই ঘটনাস্থলে যান তিনি। সেখানে আগুন নেভার পর সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের হতাহতের তথ্য জানান।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে শনিবার বেসরকারি একটি অক্সিজেন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণের ঘটনায় হতাহতদের স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায় চট্টগ্রাম মেডিকেলে।

জেলা প্রশাসক জানান, এই বিস্ফোরণ তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাকিব হাসানকে প্রধান করে ৩ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাও থাকবেন।

নিহতদের মধ্যে পাঁচজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট বাংলাবাজার এলাকার বাসিন্দা ফরিদ (৩৪), সীতাকুণ্ডের কদমরসুল এলাকার শামসুল আলম (৬৫), নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার ছোট মনগড়া গ্রামের মিকি রেঙি লখরেটের ছেলে রতন লখরেট (৪৫), নোয়াখালীর সুধারাম থানার অলিপুর গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আবদুল কাদের (৫০) এবং লক্ষ্মীপুরের মো. সালাউদ্দিন।

নিহত শামসুলের বড় ভাই ওবায়দুর মোস্তফা জানান, ঘটনাস্থল থেকে ৫০০ গজ দূরে একটা লাকড়ির দোকানে শামসুল বসেছিলেন।

“২৫০ থেকে ৩০০ কেজি ওজনের একটা টুকরা দোকানের উপর এসে পড়ে। তার চাপায় ওনার প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হয়।”

 
 

বিস্ফোরণে পুরো প্ল্যান্টটিই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিকট বিস্ফোরণে অনেকের দেহের বিভিন্ন অংশ উড়ে যেতে দেখেছেন তারা।

আহতদের অধিকাংশকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহসান সাংবাদিকদের বলেন, চট্টগ্রাম মেডিকেলে মোট ২১ জনকে আনা হয়েছে, তাদের মধ্যে ৩ জন মৃত।

আহতদের অবস্থা বর্ণনা করে তিনি বলেন, “আহতদের বেশিরভাগেরই আঘাতজনিত সমস্যা। দুজন মস্তিষ্কে আঘাত পেয়েছেন। আমাদের সকল চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী প্রস্তুত আছেন। চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রক্ত, স্যালাইন ও ওষুধপত্র ব্যবস্থা করা হয়েছে।”

আহতদের চিকিৎসার খোঁজ নিতে সন্ধ্যায় মেডিকেলে যান জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আহতদের চিকিৎসার সব খরচ ও ওষুধ দেওয়া হবে।”

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।