অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


চরফ্যাশনে বৃদ্ধি পাচ্ছে মোবাইল ফোন আসক্ত শিশুদের সংখ্যা


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১লা সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত ০৯:১৭

remove_red_eye

১১৫৪

 

আমিনুল ইসলাম, চরফ্যাশন : রওজাত বীনতে ইসলাম। বয়স ৩ বসর। মর্ডান পাড়া, পৌরসভা ৪নং ওয়ার্ড, চরফ্যাশন, ভোলা। বাসায় ঢুকতেই দেখাগেল স্মার্টফোনে মটু পাতলু সিরিয়াল দেখায় ব্যস্ত সে। এ সময় আমার সাথে শিশুটির মামাও ছিল। মামার সাথে নতুন খেলনা। খেলনা দেয়ার জন্য অনেক ডাকাডাকির পরেও মামার কাছে আসে নাই। এভাবেই মোবাইল ফোনের আসক্তির ফলে পারিবারিক বন্ধন হালকা হচ্ছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক বিকাশ।

অনুসন্ধানে দেখা যায়, রওজাত বীনতে ইসলামের মত চরফ্যাশনে শিশুদের মাঝে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে মোবাইল ফোন আসক্তি। পড়ালেখা ও খেলা ধুলার পরিবর্তে মোবাইল ফোনে মটু পাতলু, গোপালভাড়, পটল কুমার গানওয়ালা, রাখি বন্ধন, চাঁদের বুড়িসহ বিভিন্ন ধরনের গেমের মধ্যে ডুবে থাকে সব সময়। আর এই ভিডিও ডাউনলোড বা মেমোরি কার্ডে লোড করে দেন শিশুর পিতা মাতাই।

অসচেতন অভিভাবকগন শিশুদের শান্ত রাখার জন্য, খাবার ও ঔষধ খাওয়ানোর সময়, গোসল করানোর সময় এমনকি ঘুম পড়ানোর সময় শিশুকে মোবাইলে ভিডিও দেখিয়ে থাকেন। এর ফলে আস্তে আস্তে মোবাইল আসক্ত হয়ে পরে এই সকল শিশুরা।

চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মাহাবুব কবির জানান, অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের ব্যবহার শিশুদের জন্য ভয়াবহ বিপদ ডেকে আনবে। ভিডিও দেখার ফলে শিশুদের চোখের জ্যোতি নষ্ট, মস্তিষ্কের সমস্যা, স্মৃতি শক্তি লোপ, হার্টের সমস্যা, বিষন্নতা, ঘুমের সমস্যা, কানে কম শোনাসহ ক্রিমিনাল গেমস শিশুদের কচি মনে বা সরল মনে প্রভাব ফেলে।

দুলারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কানিজ ফাতেমা বলেন, অনেক শিশু শিক্ষার্থীরা হোম ওয়ার্ক ঠিক ভাবে করেনা। অধিকাংশ সময় মোবাইল ফোন নিয়ে ব্যস্ত থাকে এমন অভিযোগ আমাদের কাছে অনেক। আবার খেলাধুলাও ঠিক ভাবে না করার ফলে শারীরিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মোবাইল ফোন ব্যবহারে ক্ষেত্রে অভিভাবকদের আরো সচেতন হতে হবে।

টিবি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলা শিক্ষক জহিরুল ইসলাম জানান, চরফ্যাশনে মাধ্যমিক পর্যায়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অধিকাংশের হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। মোবাইল ফোনের কারনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফেসবুক নেশা চরম আকার ধারন করেছে। ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইমো ইত্যাদির মাধ্যমে দেশের অজানা ছেলে মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব করতে পারছে। অশ্লীল বার্তা ও নগ্ন ছবি আদান প্রদান করছে। এতেকরে চরিত্র গড়ার আগেই নষ্ট হচ্ছে তাদের চরিত্র।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, সন্তানদের মোবাইল ফোন দেওয়ার সিদ্ধান্তটি নেওয়ার আগে তার অভিভাবককে অবশ্যই অনেক ভাবতে হবে। ১৮ বছর বয়সের আগে কেন সন্তানের মোবাইল ফোন লাগবে বা এর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু, এ ফোন তারা ২৪ ঘন্টার মধ্যে কত সময় ধরে ব্যবহার করছে এতে তাদের কি কি ক্ষতি হচ্ছে তা অভিভাবকের বিশ্লেষন করে দেখা দরকার। আমরা ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে সচেতনামূলক আলোচনার ব্যবস্থা করব।