অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনে অন্যের রক্তের প্রয়োজনে নিজের রক্ত বিলান হুমায়ূন কবীর স্বরবর্ণ


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩ই জুন ২০২৪ রাত ০৮:৫৭

remove_red_eye

৩৪২

                     আগামীকাল শুক্রবার বিশ্ব রক্তদাতা দিবস

লালমোহন প্রতিনিধি: আগামীকাল (শুক্রবার) ১৪ জুন। বিশ্বব্যাপী এ দিনটি রক্তদাতা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। যারা স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে রক্তদান করে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ বাঁচাচ্ছেন তাদেরসহ সাধারণ জনগণকে রক্তদানে উৎসাহিত করার জন্যই মূলত এই দিবসটি পালন করা হয়।
ভোলার লালমোহন উপজেলার এমনই একজন রক্তদাতা মো. হুমায়ূন কবীর (স্বরবর্ণ)। তিনি উপজেলার রমাগঞ্জ ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব চরউমেদ এলাকার মৃত আব্দুল ওয়াদুদ মাস্টারের ছেলে। এছাড়া তিনি লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়নের হাজী রশীদ আহমেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। হুমায়ূন কবীর স্বরবর্ণের এখন বয়স ৪১। এ পর্যন্ত তিনি ৫১ বার স্বেচ্ছায় ও বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের রোগীকে রক্তদান করেছেন। এছাড়াও তিনি ঝড়পরধষ ঝবৎারপব ্ ইষড়ড়ফ উড়হধঃরড়হ (ঝঝইউ) নামে একটি সামাজিক এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরিচালনা করছেন। যার মাধ্যমে শত শত মানুষের রক্তের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন হুমায়ূন কবীর (স্বরবর্ণ)।
এই স্কুল শিক্ষক ও স্বেচ্ছাসেবী জানান, আমার রক্তের গ্রুপ ‘এ পজেটিভ’। আমার রক্তদানের শুরু ২০০২ সাল থেকে। তখন ভোলা সরকারি কলেজে বাংলা বিষয় নিয়ে অর্নাসে অধ্যয়নরত। কলেজের রোভার স্কাউটে যোগ দেওয়ার পর থেকে রক্তদানে আরো উৎসাহি হই। এরপর ভোলা জেলার সিনিয়র রোভারমেট হিসেবে দীর্ঘক্ষণ দায়িত্ব পালন করার সুবাদে ভোলা জেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় নিজেও রক্ত দেই এবং রক্ত সংগ্রহ করার ব্যবস্থা করি। যা এখনও চলমান আছে রয়েছে। আমার বয়স এখন ৪১ বছর, এরমধ্যে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৫১জনকে আমি রক্ত দিয়েছি। যাদের রক্ত দিয়েছি তাদের মধ্যে আছেন- ডেলিভারি, থ্যালেসেমিয়া, ক্যান্সার, রক্তশূন্যতা ও দুর্ঘটনায় আহত রোগী।
রক্তদাতা হুমায়ূন কবীর (স্বরবর্ণ) আরো জানান, আমার দেওয়া রক্তে একটি পরিবারের মুখে হাসি ফুটছে, বেঁচে যাচ্ছে একটি জীবন। এর চাইতে বড়প্রাপ্তি আর কিছুই হতে পারে না। তাই যতদিন রক্তদানের সুযোগ থাকে এবং ততদিন স্বেচ্ছায় অসহায় রোগীদের রক্ত দিয়ে যাবো ইনশাআল্লাহ। অন্যদিকে সামাজিক ও মানবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে নিজ এলাকার স্থানীয় কিছু যুবকদের নিয়ে ঝড়পরধষ ঝবৎারপব ্ ইষড়ড়ফ উড়হধঃরড়হ (ঝঝইউ) নামে একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছি। যার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত মানুষের প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা করে দেওয়া হচ্ছে রক্ত। আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন আমাদের এই সংগঠনেরও মানবিক কার্যক্রমগুলো চলমান থাকবে।
রক্তদানের বিষয়ে লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. অতনু মজুমদার বলেন, যেহেতু আমাদের শরীরের লোহিত রক্ত কনিকা ১২০দিন পরপর পরিবর্তন হয়ে যায়। তাই যেকোনো যেকোনো প্রাপ্ত বয়স্ক এবং সুস্থ্য মানুষ প্রতি ৩ থেকে ৪ মাস পরপর রক্ত দিতে পারবেন। এই রক্তদানের মাধ্যমে অনেক সময় একজন রোগীর জীবনও বেঁচে যায়। তাই যারা রক্তদান করেন, তাদের এটি একটি নিঃসন্দেহে মহৎ কাজ।