অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ৩রা ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩০


রবিবার সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ই নভেম্বর ২০২৩ রাত ০৯:৪৫

remove_red_eye

৪৪

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর। ভোলাসহ উপকুলবাসীর বিভিষীকাময় এক দুঃস্বপ্নের দিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে বিস্তীর্ন এলাকা লন্ডভন্ড হয়ে ধ্বংস লীলায় পরিনত হয়। মুহুত্বের মধ্যেই প্রলংয়নকারী ঘুর্ণীঝড় ও জলচ্ছাস ক্ষত বিক্ষত করে দেয় বিভিন্ন এলাকার জনপদ। উপকূলীয় জনপদ গুলো মৃত্যু পুরীতে পরিণত হয় । ওই ঝড়ে ভোলায় হারিয়ে যায় দের লক্ষাধিক প্রাণ। নিখোঁজ হয় সহস্রাধিক মানুষ। এক এক করে ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও কান্না থামেনী স্বজন হারা মানুষের। রয়ে গেছে সেই ক্ষত।  
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৭০’র এর ১২ নভেম্বর। দিন ভর ছিলো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস। সন্ধ্যার পর মুহুর্তের মধ্যেই ভয়াঙ্কর রুপ ধারন করতে থাকে ঝড় । গভীর রাতে শুরু হয় ঝড়ের তান্ডব। হারিকেনরুপী জলচ্ছাসের সময় ঝড়টি ভোলাসহ উপকূলীয় ১৮ টি জেলায় আঘাত হানে।  তৎকালীন সময় তথ্যপ্রযুক্তি অনেকটা দুর্বল থাকায় উপকুলে অনেক মানুষই ঝড়ের পূর্বভাস পায়নি। এ সময় তিন দিকে নদী ও একদিকে সাগর বেষ্টিত দ্বীপজেলা ভোলায় জলচ্ছাস হয়েছিল ৮/১০ ফুট উচ্চতায়। রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, খাল-বিল, নদী-নালয় ভাসছিল লাশ আর লাশ। এমনকি গাছের সাথে ঝুলে ছিল শত শত মানুষের মৃতদেহ। বহু মানুষ তাদের প্রিয়জনের লাশ খুঁজেও পায়নি। তখন বাঁচতে কেউ গাছের ডালে, কেউ উচু ছাদে আশ্রয় নিয়ে কোনমতে প্রানে রক্ষা পেলেও ১০দিন পর্যান্ত তাদের প্রায় অভুক্ত কাটাতে হয়েছে।  গত ৫৩ বছরের সব কয়টি ঘুর্নি ঝড়ের চেয়ে ৭০’র ঝড়টি সব চাইতে হিংস্র বলে প্রত্যক্ষ দর্শীরা আঁতকে উঠেন। প্রলঙ্কারী সেই বিভৎস ঝড়ের তান্ডবের খবর ঘটনার ৪ দিন পর  ভোলার স্থানীয় সাংবাদিক ও বর্তমান ভোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক বাংলার কণ্ঠ পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক  এম হাবিবুর রহমান প্রথম পুলিশ ওয়ারলেস এর মাধ্যমে খবর পাঠালে তখন পূর্ব দেশ পত্রিকার প্রকাশ হয় ,ভোলার গাছে গাছে লাশ ঝুলছে, বাংলার মানুষ কাঁদো। এরপর ই দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী জানতে পারে ভোলার প্রলঙ্কারী ঘুনিঝড়ের খবর।
প্রবীণ সাংবাদিক এম হাবিবুর রহমান বলেন, ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর রাতে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় গোর্কির ছোবলে লন্ড-ভন্ড হয়ে গিয়েছিলো ভোলার বিস্তীর্ণ জনপদ। জেলার মনপুরা, চরফ্যাসন, চর নিজাম, ঢালচর, কুকরি-মুকরিসহ গোটা এলাকা মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছিলো। স্থানীয়দের মতে কয়েক লাখ মানুষ মারা গিয়েছিলো ভোলায়। তিনি বলেন, এই ঘটনার চার দিন পর তার পাঠানো প্রতিবদন " কাঁদো বাঙালি কাঁদো, ভোলার গাছে গাছে  ঝুলছে লাশ" এই শিরনামে দৈনিক পূর্বদেশ পত্রিকায় ছাপা হওয়ার পর দেশবাসী তথা বিশ্বাসী এই সংবাদ পেয়েছিল।
এদিকে  ভোলা জেলা প্রশাসক আরিফুজ্জামান জানান,  দুর্যোগ প্রবণ ভোলা জেলায় দুর্যোগ প্রতিরোধে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছি। এ ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য আমরা সক্ষম।  ভোলা জেলা দুর্যোগ মোকাবেলায়  বর্তমানে ৮৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে । ১২টি মুজিব কিল্লা নির্মান করা হয়েছে।  এদিকে এই দিনটিতে স্বজনহারা পরিবারের সদস্যরা দেয়া মোনাজাতের আয়োজন করে।