অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


খেলাপি ঋণ এখন এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৮শে মে ২০২৩ সন্ধ্যা ০৭:১১

remove_red_eye

১১৭

বিশেষ সুবিধা আর ছাড় দেওয়ার পরও ব্যাংক খাতের ‘প্রধান সমস্যা’ খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। একবার কমে আসছেতো ফের বাড়ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সবশেষ তথ্য বলছে, দেশে মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণকে দেশের ব্যাংকিং খাতের বড় দুই সমস্যা বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। পরিকল্পনার মাধ্যমে ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। এ খেলাপি নামে সমস্যা দূর করতে ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগের কথাও বলছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের (২০২২) একই সময়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। আর তিন মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না বিশিষ্টজনেরা। খেলাপি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকে আরও কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে খেলাপি আদায়ে অ্যাকশনে যেতে হবে বলে মত তাদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) শেষে দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৪ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণে পরিণত হয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের যা মোট বিতরণকৃত ঋণের ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

গত ২০২২ সালের মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। আর সবশেষ ডিসেম্বর প্রান্তিকে ব্যাংকখাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ২০ হাজার ৫৬ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা।

চলতি বছরের মার্চ প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণের মধ্যে সরকারি ব্যাংক ঋণ বিতরণ করেছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা এর মধ্যে খেলাপি ঋণ ৫৭ হাজার ৯৫৮ টাকা। বেসরকারি ব্যাংক ১১ লাখ ৫ হাজার ৮৯ কোটি টাকার ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৬ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা।

বিশেষায়িত ব্যাংক ৩৬ হাজার ৯৭৩ কোটি টাকা বিতরণ করেছে এর মধ্যে খেলাপি ৪ হাজার ৭৩২ কোটি টাকা। বিদেশি ব্যাংক ৬২ হাজার ২৭ কোটি টাকা বিতরণ করেছে তাদের খেলাপি দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৪২ কোটি টাকা।

অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্ত মতে, পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণ, সন্দেহজনক ঋণ ও আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণকেও খেলাপি হিসেবে দেখাতে হবে। আএমএফ’র হিসাবে খেলাপি দাঁড়াবে প্রায় ৩ লাখ কোটি টাকা।

খেলাপি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, করপোরেট গভর্ন্যান্স ও খেলাপি ঋণকে দেশের ব্যাংকিং খাতের বড় দুই সমস্যা। পরিকল্পনার মাধ্যমে আমাদের ব্যাংকিং সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে হবে। ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নৈতিকতার অনুশীলন প্রয়োগ করতে হবে। খেলাপি ঋণ কমাতে ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের আরও ভূমিকা পালন করতে হবে।

খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। খেলাপি ঋণ বেড়ে যাওয়া নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ সালেহ উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, খেলাপি ঋণ কমাতে আমাদের তেমন সফলতা আসছে না। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে আর কঠোর হতে হবে। প্রয়োজনে অ্যাকশনে যেতে হবে। একটা সময় দিতে হবে, যে সময়ের মধ্যে খেলাপি কমাতে হবে। আর খেলাপি কমাতে না পারলে সেসব ব্যাংকগুলোর শাখা বন্ধের নির্দেশ দিতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক এখন কঠোর হচ্ছে না, শুধু নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীদের ২-৩ শতাংশ করে ছাড় দিলে খেলাপি কীভাবে কম, প্রশ্ন রাখেন তিনি। আমাদের এখন খেলাপি কমাতে অ্যাকশনে যেতে হবে। তবে ক্লাইন্টের দূর্বলতাগেুলোও দেখতে হবে। কয়েকজনের সমস্যাতো থাকতেই পারে। তাই বলে ঢালাওভাবে ছাড় কেনো।

সুত্র জাগো