অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


নদী তীরের দখল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে : নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩শে মে ২০২৩ সন্ধ্যা ০৭:০৪

remove_red_eye

১৯৩

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী বলেছেন, নদী তীরের দখল প্রতিরোধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কোন কমপ্রোমাইজ করা হয়নি। নদী রক্ষায় আমাদের আরো বেশি সোচ্চার হতে হবে।
আজ জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে নদী, প্রাণ-প্রকৃতি ও সমুদ্র সম্পদ ভিত্তিক সংগঠন ‘নোঙর ট্রাস্ট’ আয়োজিত ‘নদী আমাদের মা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘নোঙর ট্রাস্ট’ এর চেয়ারম্যান সুমন শামস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, নদী গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা তোফায়েল আহমেদ, মেরিন হাইস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নৌস্থপতি মো: শামসুল আলম, বাংলাদেশ পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (বাপা) এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ^াস এবং রিভারাইন পিপল এর মহাসচিব শেখ রোকন।
খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী আরো বলেন, ২০০৪ সালের ২৩ মে লঞ্চডুবির ঘটনাটি দুর্ঘটনা, এটি ঠিক নয়; এটি অবহেলা। নৌদুর্ঘটনা কমিয়ে আনতে নৌনিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধে নদীমাতৃক বাংলাদেশের নদীগুলোর অবদান রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে নদীর অবদানকে নিয়ে কোন চলচ্চিত্র, নাটক তৈরি হয়নি। নদীকে নিয়ে অবহেলা করা হয়েছে। স্বাধীন বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে এসে বলেছিলেন ‘নদীর নাব্যতা কমে গেছে, এর প্রবাহ ধরে রাখতে হবে। নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামলে সাতটি ড্রেজার সংগ্রহ করেছিলেন। সেই সাতটি ড্রেজার থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ’র ডেজার বহরে আটটি ড্রেজার হয়নি। এটাই বাস্তবতা। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর নদীর দখল ও দূষণ নিয়ে ভাবা হয়নি। 
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র ক্ষমতায় থেকে বাংলার মানুষের প্রতি অবহেলা করেছে। বাংলার মানুষের ওপর রোলার চালিয়ে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহারে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরির ঘোষণা দিয়েছে। এলক্ষ্যে ৩৮টি ড্রেজার সংগ্রহ করেছে আরো ৩৫টি ড্রেজার সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। এর আগে কোন রাজনৈতিক দল দেশের নৌপথ তৈরির কথা ভাবেনি। সরকার ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ তৈরির কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ঢাকার চারপাশের নৌপথ উন্নয়নের কথা বলেছিলেন। সেই নৌপথ রক্ষা করতে পারিনি। ঢাকার চারপাশের নদীর ওপর নেভিগেশনাল ছাড়পত্র ছাড়া ১৪টি লো-হাইটের ব্রীজ নির্মাণ করা হয়েছে। ‘বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমোদন ছাড়া নৌপথে নদীর ওপর ব্রীজ নির্মাণ করা যাবেনা।’ আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা এবং নৌকা  ‘নদী ও নৌপথ’ নিয়ে ভেবেছে।
খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আগামি অক্টোবর-নভেম্বরে একটি ক্রুজ ভেসেল সংগ্রহ করতে যাচ্ছি যা দিয়ে বিদেশি পর্যটকদের সেবা দেয়া যাবে। বাংলাদেশের নেভাল আর্কিটেক্টদের নির্মিত জাহাজ বিদেশে যাচ্ছে। নেভাল আর্কিটেক্টদের কর্মক্ষেত্র তৈরি করা হচ্ছে। নৌসেক্টরের মাধ্যমে যাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার দেশের বাইরে যেতে না পারে সে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। বিদেশি জাহাজ মনিটরিং ও দিক নির্দেশনার জন্য আটটি লাইটহাউজ (বাতিঘর) নির্মাণ করা হচ্ছে। জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দরে ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ভিটিএমএস) চালু করা হয়েছে। 
তিনি বলেন, নদী তীরে ওয়াকওয়ে (হাটারপথ) তৈরি করা হয়েছে। সেখানে প্রতিদিন হাজার হাজর মানুষ হাটতে পারছে। আমাদের অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলার মানুষের জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিঘেরা বাংলাদেশের নদীগুলো আমাদের মায়ের মতো। নদীমাতৃক বাংলাদেশকে রক্ষা করতে হবে। নদীগুলো মানুষের রক্তের শিরার মতো। শিরাতে রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে মানুষ মারা যায়। তেমনি নদীগুলোর প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশও থেমে যাবে। তাই সবাইকে নদী রক্ষায় এগিয়ে আসতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২৩ মে চাঁদপুরের মেঘনায় ‘এমভি লাইটং সান’ নামের লঞ্চ ডুবির ঘটনায় ২০০৫ সাল থেকে নোঙর ট্রাস্ট ২৩ মে-কে জাতীয় নৌ-নিরাপত্তা দিবস ঘোষণার দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে আসছে।

সুত্র বাসস





আরও...