অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষাল করে ভোলার মেঘনা নদীর ডেঞ্জার জোনে চলছে অবৈধ নৌযান


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৬ই এপ্রিল ২০১৯ বিকাল ০৫:০৯

remove_red_eye

৬৮১

 

হাসিব রহমান : সরকারি নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ভোলার মেঘনা নদীর ডেঞ্জার জোনে ভোলা-লক্ষীপুরসহ অন্তত ২৫টি রুটে চলছে ফিটনেস বিহীন অবৈধ নৌযান। প্রতিদিন এসব রুট দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। ঝূঁকিপূর্ণ পারাপারে কারণে নৌ দুর্ঘটনা আশংকা থাকলেও স্থানীয় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী অবৈধ নৌযান বন্ধ করতে পারছে না । তারা কঠোর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটে চলছে ট্রলার স্পীডবোটের রমরমা ব্যবসা। রহস্যজনক কারনে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় নানা প্রশ্ন উঠেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ৩০ মার্চ থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৮ মাস ভোলার ইলিশা থেকে মেঘনা নদীর দক্ষিন বঙ্গপোসাগর মোহনা পর্যন্ত ১১০ কিলোমিটার এলাকাকে ডেঞ্জারজোন হিসেবে চিহ্নিত করে সি সার্ভে ছাড়া সকল ধরনের অনিরাপদ নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞাজারী করা হয়েছে। কিন্তু এই নিষেধাজ্ঞাকে বির্ধাআঙ্গুল দেখিয়ে ভোলা জেলার উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় দিয়ে চলছে ফিটনেস ও অনুমোদনবিহীন ছোট ছোট কাঠের নৌযান,স্পীড বোট , ইঞ্জিন চালিত ট্রলার। ভোলা-লক্ষীপুর রুটে দু’টি লঞ্চ ও একটি সি-ট্রাক সরকারি অনুমোদন নিয়ে চলাচল করলেও প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। কারন দক্ষিন পশ্চিম অঞ্চলের ২১ জেলার সাথে বন্ধর নগরী চট্রোগ্রামের সাথে যোগাযোগের সহজ মাধ্যম হওয়ায় প্রতিদিন এ ্রুটে কয়েক হাজার মানুষ যাতায়ত করে। প্রয়োজনের তুলনায় কম সংখ্যক নির্ভর যোগ্য যান থাকায় প্রতিদিন দূর দূরান্ত থেকে আসা যাত্রীরা বাধ্য হয়ে অবৈধ ট্রলার ও স্পীড বোট যোগে উত্তাল মেঘনা নদী পাড়ি দিচ্ছে।
ইলিশা ঘাটের ইজারাদার সরোয়ারদি মাষ্টারসহ একাধিক যাত্রী জানান, এরুটে শীত মৌসুমে ১১টি ছোট ছোট লঞ্চ চলাচল করে। কিন্তু এখন মাত্র অনমোদিত ২টি লঞ্চ ও ১ টি সি-ট্রাক চলাচল করে। কিন্তু এতে করে বহু যাত্রী দূর দুরান্ত থেকে আসলেও তারা লঞ্চ সি ট্রাক পায় না। যার কারনে তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা ট্রলার ও স্পীডবোট দিয়ে চলাচল করছে। প্রয়োজন আরো একাধিক সি ট্রাক ও বড় বড় বৈধ লঞ্চ।

শুধু ভোলা লক্ষীপুর রুটই নয় ভোলার দৌলতখান, মির্জাকালু,হাকিমুদ্দিন থেকে লক্ষীপুরের আলেকজান্ডার,তজুমদ্দিন উপজেলা থেকে মনপুরা উপজেলার হাজিরহাট ঘাট থেকে চরফ্যাসনের বেতুয়া, তজুমদ্দিন টু চরজহিরউদ্দিন,হাজিরহাট ঘাট থেকে মঙ্গলসিকদার, হাজিরহাট ঘাট থেকে কলাতলীর চরসহ অন্তত ২৫টি রুটে চলছে অবৈধ নৌযান ও স্পীড বোট। সরকরি নির্ভরযোগ্য কোন নৌযান না থাকায় বাধ্য হয়েই জীবনবাজী রেখেই যাত্রীরা আল্লাহর উপর ভরসা করে যাতায়ত করছে।
এদিকে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাটের কাছেই নৌ থানা ও ইলিশা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। অভিযোগ রয়েছে, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ম্যানেজ করে ভোলার ইলিশা ফেরিঘাট থেকে লক্ষীপুর রুটে প্রতিদিন ট্রলার স্পীড বোট যোগে যাত্রীদের পারাপার করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। ভোলা ইলিশা ফেরিঘাটের অবৈধ ট্রলার পরিচালনাকারী জামাল স্বীকার করেন,তিনি অবৈধ ভাবে ট্রলার চালাচ্ছেন। তার ট্রলারে ডিফেন্সের লোক চলাচল করেন। তবে ধারন ক্ষমতার চাইতে কম লোক নিয়ে আবহায় ভাল থাকলে ট্রলার ছাড়েন। কিন্তু পুলিশ জানলেও তার কোন কিছুই হচ্ছে না। করান তার পিছনের রয়েছে প্রভাবশালী ফারুক ব্যাপরী ।

এদিকে গতমাসে সি- সার্ভে বেক্রসিং সনদধারী নৌযান ব্যতিত সকল যাত্রিবাহী নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করার লক্ষ্যে ও অবৈধ নৌ-যান চলাচল বন্ধ রাখার জন্য লঞ্চ মালিক ও বিভিন্ন নৌযান মালিকদের নিয়ে কোস্টগার্ডসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর গত ২৪ মার্চ সমন্বয় সভা করলেও পরবর্তীতে তাদের তেমন কোন পদক্ষেপ নেই। তবে বি আই ডবিøউ টিএ ভোলা নদী বন্দরের পরিবহন বিভাগের সহকারি পরিচালক মো: কামরুজ্জামান জানান, অবৈধ নৌ যান বন্ধের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

ভোলা পূর্ব ইলিশা সদর নৌ থানার অফিসার ইনচার্জ সুজন চন্দ্র পাল জানান,তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং বিআইডবিøউটিএ অভিযান করলে তারা সার্বিক সহযোগীতা করা হবে।