অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


চরফ্যাশনে ভিক্ষুক পুনর্বাসন কাগজে কলমে বাস্তবায়ন হবে কবে?


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৫ই জুলাই ২০১৯ রাত ১০:২৯

remove_red_eye

১৩১২

 

আমিনুল ইসলাম, চরফ্যাশন থেকে: ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের কার্যক্রম কাগজে কলমে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ ঘোষণার পূর্বেই হত দরিদ্র ভিক্ষুকদের গৃহ নির্মান ও স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে সরকার দেশব্যাপী এই প্রকল্প চালুক করলেও চরফ্যাশনে বরাদ্ধ লিপিবদ্ধ ফাইলবন্ধী লাল ফিতায়। প্রকল্পে বরাদ্ধ থাকলেও এখন পর্যন্ত পুনর্বাসনের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা ও বাস্তবায়ন নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। উপজেলায় এ পর্যন্ত পুনর্বাসনের আওতায় আসেনি একজনও ভিক্ষুক।

আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারনে কিংবা সামাজিক ভাবে পারিপার্শ্বিকতায় প্রাক্সমাজে ভিক্ষাবৃত্তির ধরন চালু হয়। বৃটিশ আমল থেকে শোষণ, বঞ্চনা, দারিদ্র, অশিক্ষা ইত্যাদির কারনে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটে। বর্তমান সময়ে কিছু স্বার্থন্বেষী মহলের অর্থ উপার্জনের হাতিয়ার হিসেবে ভিক্ষাবৃত্তির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। ভিক্ষাবৃত্তি একটি সামাজিক ব্যাধি।

বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ ঘোষনার পূর্বে ভিক্ষাবৃত্তির এই সামাজিক ব্যাধি দেশ থেকে নির্মূলের লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় ভিক্ষুক পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়। ২০১৮ সালে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিশন টুয়েন্টি টুয়েন্টি ওয়ান বাস্তবায়নে দেশ ব্যাপী ভিক্ষুক পুনর্বাসন ও তাদেরকে স্বাবলম্বী করতে এই প্রকল্প চালু করেন।

চরফ্যাশন উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরতদের কাছ থেকে ১ দিনের বেতন কর্তন করে সরকারের ভিশন ২০২১ বাস্তবায়নে চরফ্যাশনে ভিক্ষুক পুনর্বাসন ফান্ড গঠন করে স্থানীয় উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন। বর্তমানে ভিক্ষুক পুনর্বাসন তহবিলে এই পর্যন্ত জমা পড়েছে সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানের কর্মরতদের চাকুরির এক দিনের বেতন থেকে ১৩ লাখ ১ হাজার ৮শ ৪ টাকা এবং সরকারি ভাবে অনুদান এসেছে ১৪ লাখ টাকা। ভিক্ষুক পুনর্বাসনে উপজেলা প্রশাসনের কাছে সর্বমোট ২৭ লাখ ১ হাজার ৮শ ৪ টাকা বরাদ্দের এই অর্থ এখন ফাইল বন্দি।

ইউনিয়ন পরিষদ সচিব মোকাম্মেল জানান, চর কুকরি মুকরি ইউনিয়নে ২ জন বয়স্ক ভিক্ষুক থাকলেও তাদেরকে ভয়স্ক ভাতা ও পরিষদের অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এই ইউনিয়নকে চেয়ারম্যান আবুল হাশেম মহাজন ভিক্ষুক মুক্ত ঘোষণা দেন।

বিচ্ছিন্ন দ্বীপ মুজিবনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আঃ ওয়াদুদ জানান, তার ইউনিয়নে ভিক্ষুকদের সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাদের স্বাবলম্বী করা হয়েছে। এই ইউনিয়নে এখন একজন দরিদ্র লোক ভিক্ষাবৃত্তিতে নেই। এই ইউনিয়ন শতভাগ ভিক্ষুকমুক্ত।

এ ব্যাপারে অনুসন্ধানকালে নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পৌরসভা ও ২১ ইউনিয়নে মধ্যে ভিক্ষুকমুক্ত চর কুকরি-মুকরি ও মুজিবনগর ব্যতীত ১৯ ইউনিয়নে ১ হাজার ৬শ ৭২ জন ভিক্ষুকের নাম তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ শ ৩০ জন ভিক্ষুককে একটি বাড়ী একটি খামার, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতাসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে।

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রুহুল আমিন জানান, ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের টাকা নির্দিষ্ট একাউন্টে জমা রয়েছে। ভিক্ষুকদের তালিকা যাচাই বাছাই শেষে ইউনিয়ন ভিত্তিক ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের কাজ শুরু হবে। তবে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের বরাদ্দের টাকা এখন পর্যন্ত ব্যয় করা হয়নি।