অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


ভোলার উত্তরে হঠাৎ চোর ডাকাতের উপদ্রব, ১০ দিনে পাঁচ চোর গ্রেফতার


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮ই আগস্ট ২০১৯ রাত ১০:০০

remove_red_eye

৫৮৮

আকতারুল ইসলাম আকাশ : ভোলার উত্তরের পশ্চিম ইলিশা, পূর্ব ইলিশা ও রাজাপুরে হঠাৎ করে বেড়েছে চোর ডাকাতের উপদ্রব। আতঙ্কে রয়েছেন তিনটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ। এদিকে পুলিশ ওইসব এলাকা থেকে গত ১০ দিনে ৫ চোরকে আটক করেছে বলে জানায়।
সরেজমিনে পশ্চিম ইলিশা, পূর্ব ইলিশা ও রাজাপুরে চুরি ও ডাকাতি হওয়া স্থান পরিদর্শন করে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহার প্রায় এক সপ্তাহ আগে থেকে এই চুরি ডাকাতির ঘটনাগুলো ঘটেছে। প্রায় দুই সপ্তাহে এই তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০টি বসতি বাড়িতে ঘটেছে এই চুরি ডাকাতির ঘটনাগুলো। চুরি ও ডাকাতি হওয়া ৫০টি বসতি বাড়ি থেকে চুরি করে নেওয়া নগদ টাকা, মোবাইল সেট, স্বর্ণ অলঙ্কারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র মিলিয়ে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার ও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
রাজাপুর ০৮নং ওয়ার্ডের কাসেম মাষ্টার জাহাঙ্গীর মিস্তিরি, আঃ লতিফ মেম্বার, নুরুল ইসলাম, মোখলেস হোসেন, মালেক ও ৫নং ওয়ার্ডের আঃ মালেক হাওলাদারের বাড়িতে ঈদের পরের রাতে সিঁধ কেটে দুর্র্ধষ চুরি হওয়ার ঘটনা ঘটে।
আঃ মালেকের ছেলে মোঃ ইব্রাহিম বাংলার কণ্ঠকে জানান, ঈদের পরের রাতে ঘরের সিঁধ কেটে ঘরে ডুকে ছাগল বিক্রি করার ৪০ হাজার টাকাসহ চারটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে চোরে। পশ্চিম ইলিশার ০৭ং ওয়ার্ডে একই রাতে পাঁচটি ঘরে দুর্র্ধষ চুরি করে নগদ টাকা ও স্বর্ণ অলঙ্কারসহ প্রায় ১ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র চুরি হয়েছে বলেন জানান ভুক্তভোগীরা।

পূর্ব ইলিশার বেপারী বাড়িতে (১৭ আগষ্ট) দুর্র্ধষ ডাকাতি করে প্রায় ১ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র নিয়ে গেছে বলে জানান বেপারী বাড়িতে ডাকাতি হওয়া বাড়ির মো. জসিম উদ্দিন। সর্বশেষ গতকাল রবিবার (১৮ আগষ্ট) পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের ০৯নং ওয়ার্ডে শহিদ তালুকদার বাড়ির মো. রবিউল ইসলামের ঘরে সিঁধ কেটে প্রায় ১০ হাজার টাকার জিনিসপত্র চুরি হয়েছে বলে জানা যায়। চুরি ডাকাতির আতঙ্কিত এমন ঘটনার পরেও নজর নেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের এমনটাই দাবি করছেন স্থানীয়দরা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, পশ্চিম ইলিশা ও রাজাপুরের কিছু নামধারী চোর ডাকাত রয়েছে। বিগত দিনে তাঁদেরকে এলাকায় না দেখা গেলোও এখন প্রকাশ্যে তাঁদেরকে দেখা যাচ্ছে। হয়তো রাতের আঁধারে তারাই এমন ঘটনা ঘটান বলে জানান তারা।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক বলেন, দুই একটা চোর ধরা পড়লেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাঁদের সঠিক বিচার করছেন না। যাঁর জন্য চোরেরা চুরি করতে সাহস পাচ্ছে। এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চৌকস ভূমিকা ও রাত্রিবেলা পুলিশি টহল না থাকায় চোরের উপদ্রব বেড়েছে। চোর ডাকাতের সঠিক বিচার হয়না এমন কথা অস্বীকার করেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারা বলছেন, চোর ধরা পড়লে-ই সঠিক বিচার হবে। ঈদের পর থেকে চোর ডাকাতের উপদ্রব কথা স্বীকার করে রাজাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্জ্ব মোঃ মিজানুর রহমান মিজান বলেন, রাজাপুরে কোন চোর নেই। রাজাপুরে যাঁরা চুরি করতো তাঁদেরকে এলাকা থেকে বের করে দিয়েছি। রাজাপুরে বর্তমানে যে কয়জন চোর আছে। তাঁদেরকে সরকারি বিভিন্ন ভাতা দিয়ে সাহায্য করছি। তাঁরা এখন চুরি করেনা। তাঁর দাবি ইলিশার নামধারী কিছু চোর রাজাপুর গিয়ে চুরি করে। যাঁরা ইতিমধ্যে জেল থেকে জামিন পেয়ে বের হয়েছে।
তবে ইলিশা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শ্রী রতন দাস বলেন, আমরা সর্বদাই তৎপর আছি। হঠাৎ করে পশ্চিম ইলিশা, পূর্ব ইলিশা ও রাজাপুরে চোরের উপদ্রব বেড়ে গেছে। আমরা রাত্রিবেলা টহল দিচ্ছি। তবে এই পুলিশ কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের ফোর্সের সংখ্যা কম। তাই রাত্রিবেলা তেমন একটা টহল দিতে পারছিনা। পুলিশ সুপার এই বিষয়টা জেনেছে। তিনি খুব তাড়াতাড়ি এর ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, পশ্চিম ইলিশা, পূর্ব ইলিশা ও রাজাপুরের নামধারী পাঁচ চোর শফিক, সুমন, মহিউদ্দিন, রাসেল ঢ়াড়ি ও হাসানকে আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের ফোর্সের সংখ্যা বাড়লে আর কোন সমস্যা হবেনা।