অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


তজুমদ্দিনে মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত ১০:৫৪

remove_red_eye

৭৬৫

 

তজুমদ্দিন প্রতিনিধি : ভোলার তজুমদ্দিনে এক মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে সহকারী শিক্ষকের স্বাক্ষর জাল করে বেতন ভাতা উত্তোলন, প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রিসহ অসংখ্য অনিয়ম ও দূর্ণীতির লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুপার তার সহোদর ভাইকে সভাপতি বানিয়ে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকাসহ সেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। তার এ ধরনের অনিয়ম ও দূর্ণীতির কারণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও সচেতন মহলের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিষয়ের প্রতিকার চেয়ে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও স্থানীয়রা জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এবং শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সুত্রে সরেজমিন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার শিবপুর ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোঃ ফরিদ উদ্দিন ২০১৫ সাল থেকে সহকারী শিক্ষক খালেকুজ্জামানের স্বাক্ষর জাল করে বেতন ভাতা ভোগ করছেন। চাকুরী নেয়ার শুরু থেকে মোঃ খালেকুজ্জামান মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকার কারণে তৎকালী সুপার মাও. ইমরান হোসেন ও সভাপতি মাও. মুজাহার হোসেন তার বিল বেতন বন্ধ করে রাখেন। ২০১৫ সালে ফরিদ উদ্দিন সুপার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে খালেকুজ্জামানকে নিয়মিত দেখিয়ে নিজেই তার হাজিরা খাতা ও বিল ভাউচারে স্বাক্ষর জাল করে বেতন ভাতা উত্তোলন করতে থাকেন। এদিকে সুপার ফরিদ উদ্দিনের ছোট ভাই মোঃ কামাল উদ্দিন মহাজনকে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বানিয়ে দুই সহোদর মিলে প্রতিষ্ঠানটিকে অনিয়ম ও দূর্ণীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেন। অভিযোগে আরো জানা যায়, সুপার ফরিদউদ্দিন নিজেই প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থিত না হওয়ার কারণে অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চলছেন যে যারমতো। ২০১৯ সালের দাখিল পরীক্ষা ২৩জন পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছে ৫জন। ২১ সেপ্টেম্বর শনিবার মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, নবম শ্রেণিতে ৪জন শিক্ষার্থী ক্লাশ করছে। এছাড়া কাগজ কলমে অষ্টম শ্রেণিতে ৩০ জনের নাম থাকলেও পাওয়া যায় ৮ জন, সপ্তম শ্রেণিতে ৩৭ জনের মধ্যে উপস্থিত আছে ১ জন, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে আছে ৪৫ জনে ৮জন, ৫ম শ্রেণিতে ২২ জনে ৬জন। চতুর্থ শ্রেণিতে হাজিরা খাতায় ৪০ জনের নাম থাকলেও একজনও পাওয়া যায়নি। এ ছাড়াও ৩য় শ্রেণিতে ৩৬ জনে ৪জন, ২য় শ্রেণিতে ৩৫ জনে ১জন ও ১ম শ্রেণিতে ৩৫ জনে ১জন শিক্ষার্থী উপস্থিত আছে। এই দিন প্রতিষ্ঠানে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৩৩ জন শিক্ষার্থীকে উপস্থিত পাওয়া যায়। অথচ কাগজ কলমে হাজিরা খাতায় দেখানো হয়েছে ৩শত ১৯জন ছাত্র/ছাত্রীর সংখ্যা। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সুপার মোঃ ফরিদ উদ্দিন বলেন, বর্ষার কারণে শিক্ষার্থী উপস্থিত কম হয়েছে। আর সহকারী শিক্ষক খালেকুজ্জামান একজন বদলি শিক্ষক দিয়ে তার দায়িত্ব চালিয়ে নিয়েছেন এবং তার বেতন সে নিজেই ভোগ করেন। বদলি শিক্ষকের বিষয়ে কোন রেজুলেশন আছে কিনা জানতে চাইলে তা দেখাতে পারেননি। তবে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষরের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন স্বাক্ষরের ঘর খালি থাকায় একজন শিক্ষকের প্ররোচনায় আমার অনুমতি ছাড়া অন্য একজন কর্মচারী একমাসের স্বাক্ষর করেন। এদিকে শিক্ষক হাজিরা খাতায় প্লইট দিয়ে ব্যাপক ঘষামাজা দেখা যায়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শওকত আলী বলেন, এ ধরনের একটি লিখিত অভিযোগ আমিও পেয়েছি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।