অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় আখের পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেটের কারনে কৃষকরা বিপাকে


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত ১০:২১

remove_red_eye

১৪০২

 

জুয়েল সাহা বিকাশ : কোন প্রকার রোগ ও পোকার আক্রমন না থাকায় এ বছর ভোলা জেলায় আখের ব্যাপক ফলন হয়েছে। বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এ বছর আখের ফলন অনেক বেশি হওয়ায় ক্ষেতের ফলন দেখে আনন্দে মূখে হাসি ফুটে উঠেছে আখ চাষীদের। অধিক ফলন হওয়ায় অনেক চাষী আখ বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তবে রুপ নেয়নি। আখের পাইকারি বাজারে সিন্ডিকেটের কারনে দর কম হওয়ায় চরম বিপাকে রয়েছে কৃষকরা।
ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া এলাকার আখ চাষী আব্দুল জলিল জানান, এবছর আমি ২ এককর জমিতে আখের চাষ করেছেন। এতে তার প্রায় ১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ক্ষেতে কোন পোকা-মাকরের আক্রমন না হওয়ায় ব্যাপক ফলন হয়েছে।
এদিকে আখের ব্যাপক ফলন হলেও ন্যয্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষীরা। আখ চাষীদের অভিযোগ মধ্যসত্তা ভূগী ও সিন্ডিকেটের কারনে পাইকারী বাজারে আখের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। যার কারনে অনেক কম মূল্যে আখ বিক্রি করছেন তারা।
ভোলা সদরের পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের আখ চাষী মোঃ ফিরোজ মিয়া জানান, আমরা বাজারে আখের সঠিক দাম পাইনা। কারণ ভোলা সদরে ৩/৪ জন পাইকার থাকলেও একটি মাত্র আড়ৎ রয়েছে। যার কারণে আড়ৎ থেকে যে দাম নির্ধারণ করা করা হয়। সেই দামে আামদের বিক্রি করতে হয়। তাই আমরা বাধ্য হয়ে অনেক কম দামে আখ বিক্রি করতে হয়।
অন্যদিকে চাষীরা পাইকারী বাজারে আখের ন্যায্য মূল্য না পেলেও খুচরা বাজারে চড়া দামে আখ বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।
ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকায় খুচরা আখ ক্রেতা মোঃ আরিফ হোসেন জানান, খুচরা বাজারে আখের চড়া দাম। প্রতিটি আখ ৬০/৮০ দামে বিক্রি করা হচ্ছে। অথচ পাশের আড়ৎদে আখের দাম অনেক কম।
ওই এলাকার খুচরা আখ বিক্রেতা জাহাঙ্গির হোসেন জানান আড়ৎ থেকে আমরা প্রতি শ’ আখ ৪/৫ হাজার টাকা দামে গড়ে কিনতে হয়। অথচ আড়ৎদাররা ক্ষেত্রের চাষীদের কাছ থেকে ওই প্রতি শ’ আখ ৫০০/১০০০ হাজার দামে ক্রয় করে। আর আমাদের কাছে তারা অধিক দামে বিক্রি করে। তাই আমরা লাভের জন্য বেশি দামে বিক্রি করতে হয়।
ভোলা শহরের নতুন বাজার এলাকার আখের আড়ৎদার মোঃ ইয়ামিন মিয়া জানান, এ বছর ভোলা জেলায় আখের ব্যাপক ফলন হয়েছে। ভোলার বাজারে প্রচুর আখ উঠছে। চাহিদার চেয়ে অনেক আখ উঠায় বাজার মূল্য একটু কম। কারণ ক্রেতার সংখ্যা কম। তবে বাজারে কোন সিন্ডিকেট নেই। বাজার দাম কম পাওয়ায় কৃষক সিন্ডিকেটের কথা বলে।
জেলা কৃষি বিভাগ তথ্য মতে এ বছর ভোলা জেলায় ৮২৪ হেক্টর জমিতে আখের চাষ হয়েছে। যা লক্ষ মাত্রার চেয়ে ৬৪ হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে। এবং উৎপাদনের লক্ষ মাত্রা ছিলো ৩৫ হাজার ৭২০ মেক্ট্রিটন।
ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, কৃষি বিভাগের সঠিক তদারুকি থাকায় এ বছর ভোলা জেলায় আখের বাম্পার সফল হয়েছে। তবে কৃষকরা আখের সঠিক মূল্য পাচ্ছেননা। আমরা কৃষকদের তাদের আখের সঠিক মূল্য পাওয়ার জন্য কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের নিজ উদ্যেগে আখ বিক্রি পরামর্শ দিয়ে।