অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় ভোলায় বসুন্ধরা শুভসংঘের আলোচনা সভা


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬ই ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:২৪

remove_red_eye

৭৮

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : ভোলায় বসুন্ধরা শুভসংঘের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় করণীয়"  শীর্ষক আলোচনা সভা। 
শনিবার সকালে বোরহানউদ্দিন সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজে বসুন্ধরা শুভসংঘের বোরহানউদ্দিন উপজেলা শাখা এই সভার আয়োজন করেছে। সভায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, পরিবেশকর্মী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। 
বসুন্ধরা শুভসংঘ বোরহানউদ্দিন শাখার সভাপতি  সাংবাদিক আবুল বাশার এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তারা জলবায়ু সংকটের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে এর মোকাবিলায় করণীয় বিষয়ে  গুরুত্বপূর্ণ মতামত দেন।
বক্তারা বলেন সগর, উপকূলের দ্বীপ জেলা ভোলা  জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা। 
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস, নদীভাঙন, লবণাক্ততা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এই জেলার প্রকৃতি ও জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। দীর্ঘদিন ধরেই নির্মম বাস্তবতার মুখোমুখি জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করতে এখনই উদ্যোগ নেওয়া উচিৎ বলে মনে করেন বক্তারা। 
বক্তারা আরও বলেন, সমুদ্র উপকূলীয় জেলা ভোলায় জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত বায়ু দূষণ ও শব্দদূষণ পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করছে। অপরিকল্পিত গভীর নলকূপ স্থাপন, পুকুর জলাশয় ভরাট করে ফেলা, পর্যাপ্ত জলাধার না থাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রতিবছর ৭ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত নিচে নেমে যাচ্ছে—ফলে বহু গভীর নলকূপ ইতোমধ্যে অকার্যকর হয়ে পড়েছে। নদী-খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক পানি সংরক্ষণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে, যা কৃষি, মাছচাষ ও স্থানীয় অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। 
সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ  মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন—“নদী-খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় প্রাকৃতিক পানি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। কৃষি জমি ইটভাটায় নষ্ট হচ্ছে, পরিবেশের ভারসাম্য মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে। নতুন প্রজন্মকে পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে এগিয়ে আসতে হবে। স্বেচ্ছাশ্রমে খাল–বিল পরিষ্কার, বৃক্ষরোপণ, প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভূমিকা এখন সময়ের দাবি।” তিনি আরও বলেন, জলবায়ুবান্ধব জীবনযাপন না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য ভোলা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে।
সভায় বসুন্ধরা শুভসংঘ বোরহানউদ্দিন শাখার সাধারণ সম্পাদক হাসিবুর রহমান ফাহিম বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এখন আর দূরের সমস্যা নয়—বাংলাদেশ এখনই বড় ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই শুধু আলোচনা যথেষ্ট নয়; প্রতিটি মানুষের মাঝে কার্যকর সচেতনতা তৈরি করতে হবে। পানি সংরক্ষণ, বৃক্ষরোপণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা—এসব নিয়মিত চর্চায় পরিণত করতে হবে।
আলোচনা সভার সমাপনী বক্তব্যে  সভাপতি আবুল বাশার বলেন—“বোরহানউদ্দিন উপজেলাকে জলবায়ুবান্ধব মডেল এলাকায় রূপান্তর করতে বসুন্ধরা শুভসংঘ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের সহযোগিতায় সচেতনতাবৃদ্ধি, বৃক্ষরোপণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পানি সংরক্ষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা–কেন্দ্রিক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

সভা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে জলবায়ুবান্ধব চেতনা ছড়িয়ে দিতে তথ্যপত্র বিতরণ করা হয় এবং ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে পরিবেশ বিষয়ক ক্যাম্পেইনের ঘোষণা দেওয়া হয়।


মোঃ ইয়ামিন