অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর : ভোলায় দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ এখনো দুর্যোগ ঝুঁকিতে


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১২ই নভেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৫:৩৮

remove_red_eye

৭৪

প্রয়োজনীয় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মানের দাবী

বিশেষ প্রতিবেদক : আজ সেই ভয়াল ১২ নভেম্বর। ভোলাসহ উপকুলবাসীর বিভিষীকাময় দিন। ১৯৭০ সালের এই দিনে  দেশের একমাত্র দ্বীপজেলা ভোলা লন্ডভন্ড হয়ে ধ্বংসযজ্ঞে পরিনত হয়। ওই ঝড়ে ভোলায় হারিয়ে যায় দের লক্ষাধিক প্রাণ। নিখোঁজ হয় সহস্রাধিক মানুষ। এক এক করে ৫৫ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও কান্না থামেনী স্বজন হারা মানুষের।  কিন্তু এতো বছর পরও ভোলার দূর্গম চরাঞ্চলগুলোতে পর্যাপ্ত আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে না ওঠায় চরে বসবাসরত কয়েক লাখ মানুষ এখনো ঘুর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের কারনে মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে। তাই প্রয়োজনীয় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মানের দাবী জানান চরের বাসিন্দারা।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ৭০’র এর ১২ নভেম্বর দিন ভর ছিলো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস। সন্ধ্যার পর মুহুর্তেই ভয়াঙ্কর রুপ ধারন করতে থাকে ঝড় । গভীর রাতে শুরু হয় ঝড়ের তান্ডব। হারিকেনরুপী জলচ্ছাসের সময় ঝড়টি ভোলাসহ উপকূলীয় ১৮ টি জেলায় আঘাত হানে।  তৎকালীন সময় তথ্যপ্রযুক্তি দুর্বল থাকায় উপকুলের মানুষ ঝড়ের পূর্বভাস পায়নি। এ সময় তিন দিকে নদী ও একদিকে সাগর বেষ্টিত দ্বীপজেলা ভোলায় জলচ্ছাস হয়েছিল ৮/১০ ফুট উচ্চতায়। রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, খাল-বিল, নদী-নালয় ভাসছিল লাশ আর লাশ। এমনকি গাছের সাথে ঝুলে ছিল শত শত মানুষের মৃতদেহ। বহু মানুষ তাদের প্রিয়জনের লাশ খুঁজেও পায়নি। তখন বাঁচতে কেউ গাছের ডালে, কেউ ঘরের উচু চালে আশ্রয় নিয়ে কোনমতে প্রানে রক্ষা পেলেও ১০দিন পর্যান্ত তাদের প্রায় অভুক্ত কাটাতে হয়েছে।  গত ৫৫ বছরে যে কয়টি  ঘুর্নিঝড় হয়েছে তার মধ্যে সব চেয়ে ভয়াবহ ৭০’র ঝড়টি হিংস্র বলে প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান । 
প্রতক্ষ্যদর্শী ভোলার তুলাতুলি মেঘনা নদীর তীরে ৭০ উর্ধো বৃদ্ধ শাহে আলম জানান, তাদের বাড়ি তখন দৌলতখানে ছিলো।  মা ও স্ত্রীসহ তিনজনের সংসার ছিলো তার।৭০ এর ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ের তান্ডবে তিনি এক স্থানে ও তার স্ত্রী অন্যস্থানে গাছের উপর ঝুলে থাকে প্রাণ রক্ষা পায়। কিন্তু হারিয়ে ফেলেছেন তার মমতাময়ী মা কে।  আজও কোন সন্ধান পায়নি তার নিখোঁজ মায়ের। তিনি নভেম্বর মাস এলেই মেঘনা নদীর তীরে খুঁজে বেড়ায় তার সেই হারানো মা কে।
 শাহে আলমের মতো এমন অনেকেই সেই ঝড়ের ভয়াবহতার কথা বলতে গিয়ে আজও শিউরে ওঠেন।
প্রলঙ্কারী সেই বিভৎস ঝড়ের তান্ডবের খবর দ্রুত জানতে পারে নি দেশ বাসী।ওই সময় বর্তমান সময়ের মতো আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম ছিল না।
তাই ৪ দিন পর তখন ভোলার প্রত্যক্ষদর্শী তৎকালিন পূর্ব দেশ পত্রিকার সাংবাদিক এম. হাবিবুর রহমানের  প্রেরিত সংবাদ ‘’ বাংলার মানুষ কাঁদো ভোলার গাছে গাছে এখনো ঝুলছে অগনিত লাশ ‘’ শিরনামে পূর্ব দেশ পত্রিকায় প্রকাশ হলে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী জানতে পারে।
 তৎকালিন পূর্ব দেশ পত্রিকার প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক বাংলার কণ্ঠের সম্পাদক ও ভোলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি  এম. হাবিবুর রহমান জানান, তখন ভোলা থেকে সংবাদ পাঠানো এতো সহজ ছিল না। ১২ নভেম্বর ঝড়ের পরে তিনি সংবাদ ও ছবি সংগ্রহ করেন। তিনি ছবি ট্রলারের মাধ্যমে ঢাকা পূর্বদেশ অফিসে পাঠান। আর সংবাদ পুলিশ এর ওয়্যারলেস এর মাধ্যমে পত্রিকা অফিসে পঠাতে সক্ষম হন। অবশেষে ৪ দিন পর পূর্ব দেশ পত্রিকার মাধ্যমে ভোলার খবর প্রকাশ হলে দেশ বিদেশের মানুষ জানতে পারেন।
এদিকে দ্বীপজেলা ভোলার মানুষকে প্রতিবছর একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঝড় জলোচ্ছাস মোকাবেল করে বসবাস করতে হয়। ভোলার কাচিয়া মাঝের,মদনপুর, চর জহিরুদ্দিন, চর মোজাম্মেল, কলাতলীরচর, চরনিজাম, ঢালচর, কুকরি-মুকরি, চর পাতিলাসহ জেলার অর্ধশতাধিক চরাঞ্চলে প্রয়োজনের তুলনায় আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা কম হওয়ায় এসব এলাকায় কয়েক লাখ মানুষ চরম ঝুঁকিতে বাস করছে। প্রতি বছর ঘুনিঝড়ে এখনো বহু মানুষ ও গবাদিপশুর প্রাণহানি। ক্ষয়ক্ষতি হয় কোটি কোটি টাকার সম্পদ। ভোলার মনপুরা ও মাঝের চরের বাসিন্দারা জানান, গত বর্ষায় মেঘনা নদীর ভাঙ্গনে একটি আশ্রয় কেন্দ্র ও ইউনিয়ন পরিষদ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে করে ৫/৭ হাজার মানুষ ঝড় জলোচ্ছ্বাস হলে চরম বিপাকে পড়ে। কাছাকাছি আশ্রয় কেন্দ্র নেই। দূরে একটি থাকলেও মানুষ ঝড়ের সময় যেতে পারে না। তাই চরগুলোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক আশ্রয়কেন্দ্র নির্মানের দাবি জানান চরবাসী। অপর দিকে র্দীঘ দিন ধরে ভয়াল ১২ নভেম্বর স্মরণে উপকূলীয় দিবস পালনের দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা। 
জেলা প্রশাসন, ত্রান ও পূর্নবাসন দপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ,ভোলায় ঘুর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে ৮৬৯টি এবং গবাদিপশুর জন্য কিল্লা রয়েছে ১৪টি। আরো ৭ টি কিল্লা নির্মাণাধীন রয়েছে। আরো ১৫ টা আশ্রয় কেন্দ্র হবে।
জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান ৭০ এর ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতার কথা স্মরন করে সাংবাদিকদের জানান,ভোলায় যে আশ্রয় কেন্দ্র ও কিল্লা রয়েছে যদি কোন দুর্যোগ আসে আমরা মোকাবেলা করতে সক্ষম বলে মনে করি।  কিন্তু জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মানুষের চাহিদা অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে আরো সাইক্লোন সেল্টার বৃদ্ধি করা হবে।


ভোলা সদর ভোলা জেলা মোঃ ইয়ামিন



দেড়যুগ পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এসেছেন তারেক রহমান

দেড়যুগ পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় এসেছেন তারেক রহমান

আসন্ন নির্বাচন আয়োজনে ‘আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত’ : প্রধান উপদেষ্টা

আসন্ন নির্বাচন আয়োজনে ‘আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত’ : প্রধান উপদেষ্টা

তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বিএনপি

তারেক রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে বিএনপি

নির্বাচনকে টার্গেট করে অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

নির্বাচনকে টার্গেট করে অবৈধ অস্ত্র ঢুকছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই ইসির

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেই ইসির

কর্মসূচি নেই, নেতাকর্মীদের সড়ক থেকে সরে যেতে বললেন তারেক রহমান

কর্মসূচি নেই, নেতাকর্মীদের সড়ক থেকে সরে যেতে বললেন তারেক রহমান

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলসহ ৪ জনের নিয়োগ বাতিল

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেলসহ ৪ জনের নিয়োগ বাতিল

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হচ্ছে আজ, সংগ্রহ করেছেন ২৭৮০ জন

মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হচ্ছে আজ, সংগ্রহ করেছেন ২৭৮০ জন

মনপুরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে দুই জন গ্রেপ্তার

মনপুরায় পুলিশের বিশেষ অভিযানে দুই জন গ্রেপ্তার

ভোলা-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী গোলাম নবী আলমগীরের মনোনয়নপত্র দাখিল

ভোলা-১ আসনে বিএনপি প্রার্থী গোলাম নবী আলমগীরের মনোনয়নপত্র দাখিল

আরও...