অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় তরুণ উদ্যোক্তাদের নিয়ে তারুণ্যের উৎসব


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৩১শে অক্টোবর ২০২৫ দুপুর ০২:৪৮

remove_red_eye

১৭২

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : ভোলার প্রায় ২৫ জন তরুণ উদ্যোক্তাকে নিয়ে “তারুণ্যের উৎসব” শীর্ষক এক সমাবেশ আয়োজন করেছে কোস্ট ফাউন্ডেশন। বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ফাউন্ডেশনের নিজস্ব কার্যালয়ে দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দেশের দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বক্তারা তরুণ উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি জোরদারের বিভিন্ন দিক নিয়ে পরামর্শ দেন। তাঁরা বলেন, “বাংলাদেশকে সত্যিকারের উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করতে হলে তরুণ, শিক্ষিত উদ্যোক্তাদের সরাসরি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হতে হবে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের ভোলা জেলা টিম লিডার মোসাম্মৎ রাশেদা বেগম। সঞ্চালনা করেন তিনিই। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কোস্ট ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী (মাইক্রোক্রেডিট) আইয়ুব আলী। পরে মুক্ত আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে তরুণ উদ্যোক্তারা নিজেদের সাফল্যের গল্প, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোলা সদর উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তুষার কান্তি দে। বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আয়শা খাতুন ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কামরুল হাসান। তাঁরা তরুণ উদ্যোক্তাদের সাফল্য টেকসই করতে প্রশিক্ষণ, পরিকল্পনা ও আর্থিক সহায়তার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

মূলপ্রবন্ধে আইয়ুব আলী বলেন, “কোস্ট ফাউন্ডেশন গত ২৬ বছর ধরে ভোলায় দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করছে। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। বর্তমানে ভোলায় আমাদের সদস্য সংখ্যা ১ লাখ ৭৯ হাজার, যার মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ সদস্য ক্ষুদ্র উদ্যোগ নিয়ে অর্থনৈতিকভাবে সফল হয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “তরুণ, শিক্ষিত এবং বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী করতে কোস্ট ফাউন্ডেশন নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও ঋণ সহায়তা প্রদান করছে।”

সফল উদ্যোক্তা মো. ওসমান গনি বলেন, “যে কোনো কাজ ছোট পরিসরে শুরু করা উচিত। বড় পরিসরে ব্যবসা শুরু করলে আর্থিক ক্ষতির ঝুঁকি বেড়ে যায়।” তিনি জানান, প্রশিক্ষণ নিয়ে গবাদি পশু পালন, ভার্মিকম্পোস্ট তৈরি ও মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ ব্যবসা শুরু করেছেন। বর্তমানে তিনি হালাল মাংস বিক্রির অনুমোদন পেয়েছেন এবং তাঁর অধীনে ১০ জন উদ্যোক্তা ও একাধিক কর্মী কাজ করছেন। তিনি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর থেকে সহজ শর্তে ঋণ ও প্রশিক্ষণ সহায়তা পাওয়ার দাবি জানান।
উদ্যোক্তা লিপি বেগম বলেন, “কোস্ট ফাউন্ডেশন থেকে একটি ছাগল ও প্রশিক্ষণ সহায়তা নিয়ে আমি এখন পাঁচটি ছাগল ও পর্যাপ্ত হাঁস-মুরগির মালিক।” তিনি বলেন, “নারীরা যদি প্রশিক্ষণ ও সহায়তা পায়, তাহলে সামাজিক বাধা অতিক্রম করে নিজেকে ও পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারে।”
সমাবেশে আঞ্চলিক টিম লিডার রাশেদা বেগম বলেন, “ভোলার উদ্যোক্তাদের জলবায়ুর নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় সফল হতে হলে ঝুঁকিপ্রবণ স্থানগুলো চিহ্নিত করে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। দুর্যোগ মোকাবিলায় ব্যর্থ হলে উদ্যোক্তা স্বপ্ন ব্যাহত হতে পারে।”
সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা আয়শা খাতুন বলেন, “তরুণরা চাকরির দিকে না ঝুঁকে উদ্যোক্তা হন। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো আপনাদের পাশে আছে। ক্ষুদ্র পরিসরে শুরু করে ধীরে ধীরে সঠিক পরিকল্পনায় কাজ করলে সফলতা আসবেই।”
উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা তুষার কান্তি দে বলেন, “নিজে উদ্যোক্তা হোন, অন্যকেও উৎসাহিত করুন। যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরসহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় তরুণদের পাশে আছে এবং থাকবে।


ভোলা সদর ভোলা জেলা মোঃ ইয়ামিন