এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন : চরফ্যাশন উপজেলার মুজিব নগর ইউনিয়নের চরলিউলিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘ বছর কর্মরত একজন সহকারি শিক্ষককে বাদ দিয়ে চুড়ান্ত গেজেটে আরেক জনের নাম অর্ন্তভুক্তের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে। এঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে এক শিক্ষক গেজেট ভুক্তির দ্বন্ধের কারণে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থী অভিভাবকরা চুড়ান্ত গেজেটে দির্ঘবছর কর্মরত শিক্ষক রফিকুল ইসলামের নাম অর্ন্তভুক্ত করে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রমে বিঘ্ন দূর করার দাবী জানিয়েছেন।
অত্র বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক রেশমা বেগম ও মরিয়মসহ স্থানীয়রা জানান, ২০০৯সনে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এর শিক্ষক খসড়া গেজেট হয় ২০১৭ সনে। খসড়া গেজেটে সহকারি শিক্ষক রফিকুল ইসলামসহ বিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের নাম অর্ন্তভুক্ত হয়। কিন্তু ২০১১ সনে অব্যাহতি নেয়া শিক্ষক আমেনা বেগম চুড়ান্ত গেজেট প্রকাশের আগে এপদ দাবী করায় ২০১৮ সনে চুড়ান্ত গেজেটে প্রধান শিক্ষকসহ তিন জন শিক্ষক গেজেট ভুক্ত হন। বাদ পড়েন রফিকুল ইসলাম। এতে রফিকুল ইসলাম মহামান্য হাইকোর্টে রিটপিটিশন নম্বর ৬৪১৬/২৪দায়ের করেন।
রফিকুল ইসলামের অভিযোগ,হাইকোর্টে রিট পিটিশন চলমান অবস্থায় প্রধান শিক্ষকের যোগসাজসে ভোলা জেলা শিক্ষা অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে এবিষয়ে পক্ষপাত মুলক একটি প্রতিবেদন দেন। একারণে গত ১১ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক ভূপেষ রঞ্জন রায় সহকারী শিক্ষক দাবীদার আমেনা বেগমের চাকুরী গেজেটভুক্ত করণ এবং মামলার রায় বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে ১০কর্মদিবসের মধ্যে সুস্পস্ট মতামতসহ সুপারিশ প্রেরণের নির্দেশ দেন। রফিকুল ইসলাম বলেন, মামলা নিস্পত্তি না হতে প্রধান শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টরা অবৈধ ভাবে আমেনা বেগমের নাম চুড়ান্ত গেজেটে অর্ন্তভুক্তের পায়তারা করছে। আমি এর প্রতিকার চাই।
আমেনা বেগম জানান, আমার অব্যাহতি নেয়ার অভিযোগটি সঠিক নয়।
বিদ্যালয়ের তৎকালীন সভাপতি আবদুল মালেক ব্যাপারী জানান,২০১১ সনের ২৬ ডিসেম্বর আমেনা বেগম অব্যাহতি নেয়ার পর ২০১২সনের ৯জানুয়ারী রফিকুল ইসলামকে উক্ত পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।আমেনা বেগম এপদ দাবী করা অযৌক্তিক।
প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুস সালাম জানান, আমেনা বেগমকে সহযোগীতার প্রশ্নই ওঠেনা। রফিকুল ইসলাম হাইকোর্টে রিট করেছে। আমি আমেনার পক্ষে কোথাও কাগজপত্র দেইনি।
চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো.মিজানুর রহমান বলেন, আমার কাছে সার্টিফাইড কপি এবং ইনফরমেশন স্লিপ চেয়েছে। রফিকুল ইসলাম মামলা করেছে বিষয়টি আমি জানি।এগুলো পাঠানোর সময় আমি মামলার বিষয়টি উল্লেখ করে দিব।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি প্রতিবেদনে রফিকুল ইসলামের দায়ের করা মামলা চলমান আছে তা উল্লেখ করে দিবো।মামলা নিস্পুত্তি না হতে প্রতিবেদন দিতে পারেন কি না এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে যান এ কর্মকর্তা।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (পলিসি এন্ড অপারেশন বিভাগ) ভূপেষ রঞ্জন রায় বলেন, রফিকুল ইসলামের হাইকোর্টে রিটের বিষয়টি আমি জানিনা। এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা উল্লেখ না করলে এর দায়ভার তার।
মোঃ ইয়ামিন
চরফ্যাসন