অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ১৪ই নভেম্বর ২০২৫ | ৩০শে কার্তিক ১৪৩২


ভোলায় সরকারি ৪টি নৌ অ্যাম্বুলেন্স বছরের পর বছর বিকল


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪ই আগস্ট ২০২৫ রাত ১২:২৮

remove_red_eye

১৪৩

চিকিৎসা সেবায় দুর্গম চরবাসীর ভোগান্তি

বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক : দেশের উপকূলীয় জেলা ভোলা। এ জেলার চরাঞ্চলে বসবাস করেন কয়েক লক্ষাধিক মানুষ, যাদের অধিকাংশই হতদরিদ্র। চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের জরুরি প্রয়োজনে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেওয়া রয়েছে ৪টি সরকারি নৌ অ্যাম্বুলেন্স। তবে ৪টি অ্যাম্বুলেন্সই বিকল হয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে বছরের পর বছর।
নৌ অ্যাম্বুলেন্সগুলো বিকল হয়ে রোগী বহনে সক্ষমতা হারানোর পর বিভিন্ন সময় এর থেকে উধাও হয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল। এতে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগকেই দুষছেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে চিকিৎসার জন্য মুমুর্ষ রোগীদের মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে ট্রলারে করে উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে নিতে হয় স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
স্থানীয়রা জানান, চরাঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় লক্ষাধিক মানুষ আসা যাওয়ায় উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিতে হয় ট্রলারযোগে। জরুরি মুহূর্তে চরাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় নিশ্চিতে আর্শীবাদ হয়ে এসেছিল নৌ অ্যাম্বুলেন্সগুলো। কিন্তু কয়েক মাস পরেই একে একে অ্যাম্বুলেন্সগুলো বিকল হয়ে আজও একই অবস্থায় রয়েছে। যা পরবর্তীতে মেরামত করতেও দেখা যায়নি। 
ভোলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, নৌ অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলো- ৫০ শয্যা বিশিষ্ট দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, ১০০ শয্যা বিশিষ্ট  চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মনপুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। 
এর মধ্যে সর্বশেষ ২০১৯-২০ অর্থবছরে কমিউনিটি বেসড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা মুল্যের নৌ অ্যাম্বুলেন্স বরাদ্দ পায় তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সরেজমিনে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নৌ অ্যাম্বুলেন্সটির অবস্থান খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, বরাদ্দ পাওয়ার পর কয়েকদিন এটি চরাঞ্চলের রোগী বহন করে। 
পরে একই বছরে ঘুর্ণিঝড় আম্ফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি বিকল হয়। একপর্যায়ে সেটিকে নদী থেকে তুলে তজুমদ্দিনের স্লুইস গেট বেড়িবাঁধের ভেতরে লঞ্চঘাট মসজিদের পাশে গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। বর্তমানে সেখানেই বেশ জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সামনের ও দুই পাশের গ্লাস ভাঙা, উধাও ইঞ্জিন। 
একই অবস্থায় রয়েছে দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নৌ অ্যাম্বুলেন্সটিও। মেঘনা নদীর তীরে ঘাটে বাধা অবস্থায় রয়েছে, এ যেন দেখার কেউ নেই।
তবে চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। ফলে ওই দুই উপজেলার নৌ অ্যাম্বুলেন্স দুটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়নি।
চরের বাসিন্দা মো. ওমর, আব্দুর রহমান, মো. জামাল ও সিরাজ বলেন, আমরা চরের বাসিন্দা। আমাদের পেশা হচ্ছে মাছধরা-কৃষি। চরে ট্রলারে করে যেতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই ঘন্টা। সেখানে ছোট ফার্মেসি ছাড়া চিকিৎসা নেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে তাকে দ্রুত নিকটস্থ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও নেওয়া যায় না। অন্যদিকে সময়মত ট্রলারও পাওয়া যায় না। আমাদের দুর্দশার শেষ নেই। আমরা গরিব মানুষ তাই বাধ্য হয়েই সেখানে থাকি। সরকারি নৌ অ্যাম্বুলেন্স আমাদের কাজে আসেনি। 
নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি বন্ধ থাকায় চরাঞ্চলের মানুষের দুঃখ ও দুর্দশার শেষ নেই বলে আক্ষেপ করেন তজুমদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রাহাত হোসেন। তিনি বলেন, সম্প্রতি আমি এখানে যোগদান করে জানতে পেরেছি কমিউনিটি বেসড হেলথ কেয়ার প্রকল্পের মাধ্যমে নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায়, তেলের বরাদ্দ ও চালকের বেতন না দিতে পারাসহ অন্যান্য কারণে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এটি পুনরায় চালু করতে পারলে মানুষ বেশ উপকৃত হবে।
দৌলতখান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আনিসুর রহমান বলেন, নৌ অ্যাম্বুলেন্সটি বেশ কয়েক বছর ধরে অকেজো অবস্থায় ঘাটে পড়ে আছে। এটি চালু থাকলে দৌলতখানের চরাঞ্চলের মানুষ সার্বিক সুবিধা পেত। অপারেশন প্ল্যান্ট বন্ধ থাকায় নৌ অ্যাম্বুলেন্সটির সার্বিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এক্সপার্টরা বলতে পারবেন এটি মেরামত যোগ্য কিনা।ভোলার সিভিল সার্জন ডা. মু. মনিরুল ইসলাম বলেন, ভোলায় ৪টি সরকারি নৌ অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। সেগুলোর চালক নেই, তেলের জন্য যে বরাদ্দ ছিল তাও শেষ। এসব কারণে দীর্ঘদিন ব্যবহার না করায় মেশিনগুলো নষ্ট হয়ে আছে। এগুলো পুনরায় সচল করা যাবে কিনা তা নিয়ে কাজ করা হবে। 
এদিকে ‘আমরা ভোলাবাসী’ কমিটির সদস্য সচিব মীর মোশাররফ অমি বলেন, জরুরি প্রয়োজনে চরাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে নতুন সরকারি নৌ অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন। পাশাপাশি দরিদ্র মানুষদের সুবিধার্থে ভাড়ার ক্ষেত্রে সরকারি ভর্তুকি,পরিচালনা ও দক্ষ চালকের দাবিও জানান তিনি।


তজুমদ্দিন মনপুরায় দৌলতখান ভোলা জেলা মোঃ ইয়ামিন চরফ্যাসন



মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা

মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা

ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ

মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ

জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন

জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন

মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার

মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার

বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা

বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা

ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে : প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে : প্রধান উপদেষ্টা

আরও...