অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


বৈরী আবহাওয়ায় ইলিশ ধরা বন্ধ, ঋণ করে পেট চলে জেলেদের


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১লা আগস্ট ২০২৫ সন্ধ্যা ০৬:৩৬

remove_red_eye

১১২

এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন থেকে: বৈরী আবহাওয়ায় মাছ শিকারে যেতে পারছে না জেলেরা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী উত্তাল থাকায় মাছ ধরার ট্রলার নিয়ে নদী ও সমুদ্রে ট্রলার নিয়ে রোলিংয়ের ফলে নৌযান দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ঘাটেই সমই কাটাচ্ছেন জেলেরা। যার ফলে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছে নদীনির্ভর এসব জেলেরা।
চরফ্যাশনের সামরাজ মৎস্যঘাট,নতুন স্লুইসঘাটসহ আহাম্মদপুর, নীলকমল, নুরাবাদ, মুজিবনগর, চরকচ্ছপিয়া, শশীভূষণ, আবদুল্লাপুর ও হাজারীগঞ্জ ইউনিয়নের হাজারো জেলে পরিবার বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয় জেলেরা জানান, ধারাবাহিক ঝড় বৃষ্টিপাত ও নদীতে বড় ঢেউয়ের কারণে মাছ ধরার অনুকূল পরিবেশ নেই। বিশেষ করে নদী বা সাগরে যাওয়া এখন রীতিমতো জীবন ঝুঁকির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
 
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, চরফ্যাশন উপজেলায় প্রায় লক্ষাধিক জেলে রয়েছে। এর মধ্যে নিবন্ধীত জেলের সংখ্যা ৪৪ হাজার ১০৫ জন। সাগরগামী জেলের সংখ্যা ১৭ হাজার ৫৬১জন। সমুদ্রগামী ট্রলার বা নৌযানের সংখ্যা ১৩৬৫টি। লঘুচাপের কারনে সমুদ্রগামী জেলেরা উপকূলে নিরাপদে ফিরে স্থানীয় মৎস্যঘাটেই অবস্থান করছেন। বৈরি আবহাওয়া শেষ হলেই তারা মাছ শিকারে সমুদ্রে যাবেন।  
 
উপকূলীয় এলাকার মানুষের একমাত্র আয়ের উৎস মাছ শিকার। বৈরী আবহাওয়ার প্রভাবে শুধু অর্থনৈতিক নয়, মানসিক চাপও বাড়ছে এসব জেলে পরিবারের ওপর। অনেকেই বলছেন, সরকারিভাবে যদি সহায়তা না আসে, তাহলে পরিবার নিয়ে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে।
 
জেলে মো. জামাল উদ্দিন জানান, প্রতি বর্ষায় মাছ ধরার মৌসুম। নদীতে ইলিশসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া গেলেও গত এক সপ্তাহে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় নদীতে যেতে পারছি না। আয় উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে।”
 
অন্য জেলে শাহ আলম বলেন, “নৌকা ট্রলার ঘাটে বেঁধে রেখেছি, উত্তাল ঢেউয়ে চালানো যাচ্ছে না। দিনে দিনে ঋণ বাড়ছে। চলার মতো পকেটে টাকা নেই ”
 
জেলেদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন মাছ ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় হাটবাজারে সরবরাহ কম থাকায় মাছের দামও আকাশ ছোয়া। ফলে সাধারণ ক্রেতারাও সাধ্যমতো মাছ কিনতে পারছেনা।
 
সামরাজ মৎস্যঘাটের আড়ৎদার কামাল হাওলাদার বলেন, আমার আড়ত থেকে জেলেদের অন্তত এক কোটি টাকা দাদন দিয়েছি। বিগত কয়েক বছর ধরে দুর্যোগ ও নিষেধাজ্ঞার কারনে জেলেরা ইলিশ না পাওয়ায় আড়ত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জেলেরা মাছ পেলে আমাদের ব্যবসাও ভালো চলে। বর্তমানে আমাদের ব্যবসায়ীরা ঋণে জর্জরিত।
 
চরফ্যাশন মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, কয়েকদিন ধরে নিম্মচাপের কারণে আবহাওয়া খারাপ। নদীতে মাছ ধরা অনুপযুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকায় সকল জেলেকে উপকূলে নিরাপদে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। উপজেলা মৎস্য অফিস জেলেদের পাশে থাকবে।

ভোলা জেলা মোঃ ইয়ামিন চরফ্যাসন