অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


ভোলায় ঝড়ে বিধ্বস্ত বাসা সংবেদনশীল পাখি খঞ্জনার নিরাপদ আবাস প্রয়োজন


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১০ই মে ২০২৫ রাত ০৮:৫৮

remove_red_eye

৪৮

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক :  ভোলায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালবৈশাখি ঝড়ে বিধস্ত হয়েছে একটি পাখির বাসা। মাটিতে পড়ে গেছে দুটি ছানা।
 সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনির ছাত্র মনন রায়  শুক্রবার ঘুম থেকে ওঠে  দেখতে পায় বাড়ির পাশে মাটিতে  পড়ে আছে একটি পাখির ছানা ( বাচ্চা)। পাশে একটি বিড়াল ওই ছানাটিকে ধাবা দিতে প্রস্তুত। ছানাটিকে উদ্ধার করে তার আপনজনদের কাছে ফিরিয়ে দিতে  বাড়ির কার্নিসে বসিয়ে দেয় মনন। কিছু পড়ে দেখা মেলে দুটি রেড ভেন্টেড বলবুলের ( খঞ্জনা)। একটি মা , অপরটি বাবা। কিছুক্ষণ পর পর খাবার কুড়িয়ে এনে ছানার মুখে তুলে দেয় । এভাবে কয়েক ঘন্টা পর ছানাটিকে সুস্থ করে তারা ছানাটিকে ফিরিয়ে নিতে প্রস্তুত। কিন্তু নিরাপদ আবাস তাদের নেই। ছানাদের নিয়ে হেতায় হোথায় ঘুরে বেড়ায়।  এমন দৃশ্য দেখাতে শিক্ষার্থী মনন এ প্রতিবেদকসহ অনেককে ডেকে পাঠায়।  পাখি বিষেজ্ঞদের মতে এটি বিশেষ ধরনের সংবেদনশীল পাখি। নাম রেড- ভেন্টেড বুলবুল। ছানাসহ দুটি বুলবুলকে পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, গায়ের রং কালচে । মাথায় সামান্য খোঁচা বাঁধা চুল বা টুপি আকৃতির পালক দেখা যায়। লেজের নিচের দিকে লাল রঙের গাঢ় পালক। যা যে কোন ব্যক্তিকে এর সৌন্দর্য প্রকাশে আকৃষ্ট করে।  এক সময় পালকি বুলবুল বা খঞ্জনা বুলবুল নামেও ডাকা হতো। বাড়ির ছাদে বা কাঠাল বা নিমগাছের ডালে ছোট বাসা গড়ে তুলে তাতে ডিম পাড়ে এই পাখি। এ জাতীয় পাখি খুবই সক্রিয় ও চঞ্চল প্রকৃতির হয়ে থাকে। তাই এর ছবি তোলাটা কঠিন কাজ। এরা বেশিক্ষণ এক স্থানে বসে থাকে না। তবে এরা জোড়ায় ঘুরতে পছন্দ করে। পশু পাখি বিশেষজ্ঞ দেবাশিষ কুমার কন্ডু ( বর্তমানে উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা নড়াইল) জানান, এক সময় এই পাখির বিচরণ অনেক বেশি ছিল। পরিবেশের কারণে  এই প্রজাতিও বিলুপ্ত হচ্ছে ক্রমে। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান,  ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে যেমনি অতিথি পাখির বিচরণ । তেমনি এর বন ও গাছগাছালিতে দেশি প্রজাতির পাখি রয়েছে। তবে  দেশি পাখি সংরক্ষণ বিষয়ে খুব একটা নজরদারি না থাকায় অনেক প্রজাতির বিলুপ্তি ঘটছে। রেড-ভেন্টেড বুলবুল চমৎকার একটি পাখি। প্রজাতি রক্ষা করা  খুবই প্রয়োজন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা। নিরাপদ আবাসে এদের সংরক্ষণ করাও এখন জরুরি হয়ে পড়েছে।  এই ধরনের পাখি ২ থেকে ৩টি ডিম পাড়ে। ডিমের রং হয় হালকা গোলাপী। তাতে বাদামি ছোপ দাগ থাকে। ডিম পাড়ার পর মা বুলবুল ১১ থেকে ১৪ দিন তা দেয়।  ডিম ফোটার পর বাচ্চা খুবই নরম ও পালকহীন থাকে। বা ও বাবা বুলবুল পালা করে বাচ্চাদেও খাবারের যোগান দেয়। একই সঙ্গে নিরাপত্ত নিশ্চিত করতে পাহারা দেয়। ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে বাচাদেও পালক গজানোর পর একটু একটু করে ওড়দে শেখে ওই বাচ্চারা। এই ধরনের পাখি খুইই সংবেদনশীল হয়ে থাকে। ভয় পেলে বা কেউ তাদের লক্ষ্য করছে এমনটা বুলতে পেওে দ্রুত সময়ে স্থান ত্যাগ করে। তবে নিয়মিত দূর থেকে এদের খাবার দিলে এরা কিছুটা আপন হয়ে ওঠে। এরা আপন হয়ে ওঠোর জন্য উপযুক্ত ও নিরাপদ পরিবেশ প্রত্যাশী হয়ে থাকে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।