অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শনিবার, ১৭ই মে ২০২৫ | ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


চরফ্যাশনে স্বামীকে নির্যাতিত করে স্ত্রীর বিরুদ্ধে বাড়ী দখল নেওয়ার অভিযোগ


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৮ই মে ২০২৫ সন্ধ্যা ০৭:২৯

remove_red_eye

৩২

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : ভোলার চরফ্যাশনে স্বামীকে নির্যাতন করে বাড়ী থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় স্বামী আহত অবস্থায় ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
নির্যাতিত স্বামী মো. হোসেন ভোলা সদর উপজেলার পশ্চিম ইলিশার নুরুল ইসলাম এর বড় ছেলে।এই ঘটনায় ভোলা কোর্টে স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামী বাদি হয়ে  একটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নির্যাতনের শিকার স্বামী মো. হোসেন বলেন আমি ২০০৪ সালে হাসপাতালে ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারী পদে চাকরিতে যোগদান করি লালমোহন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে  আমরা স্ত্রী জোছনা বেগম একটি এনজিওতে চাকরি করতো। সেখান থেকে পরিচয় ও ভালোবাসা। তারপরে ২০০৫ সালে লালমোহন উপজেলার চরভূতা ইউনিয়নের কৃষকের মেয়ে জোছনা কে পারিবারিক ভাবে আমি বিয়ে করি। সংসার জীবন সুখেই চলছিলো আমাদের।  ২০১১ সালে আমি ততবির করে আমার স্ত্রীকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৪র্থ  শ্রেনী পরিচ্ছন্নতা কর্মী পদে রাজস্ব খাতে চাকরি নিয়ে দেই। এরই মধ্যে আমাদের কোল আলোকিত করে দুটি সন্তান জন্ম নেয়। পরিবারে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চাকরি সূত্রে চরফ্যাশন চলে আসি। এখানেই চরফ্যাশন পৌরসভার  ৭ নং ওয়ার্ডে  সাড়ে চার শতাংশ জমি কিনে  ৫ তলা ফাউন্ডেশন নিয়ে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ২০২১ সালে   বাড়ি নির্মানের কাজ শুরু করি। বাড়ি নির্মানের পুরো টাকাটাই আমি কিস্তি পরিশোধ করে দুই তালা পর্যন্ত সম্পূর্ণ করি। বাড়ি জমি দুই জনের নামে রেজিষ্ট্রেশন করি। বাড়ি তৈরি করতে গিয়ে কথা ছিলো দুই জনের বেতন থেকে ঋণ পরিশোধ করবো। অথচ  জমি কিনার জন্য সামান্য টাকা পরিশোধ করে। বাকি ঋণের কিস্তির টাকা আমিই পরিশোধ করে যাচ্ছি।
তারপরেই আমার স্ত্রী আসল রুপ বের হয়ে আসতে শুরু করে। সে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার জন্য তার ভাইদের পরামর্শে একের পর এক মানসিক নির্যাতন শুরু করে। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা যৌতুক মামলা, স্বর্ন ও টাকা চুরির মামলা দেয়। এমনকি বাড়ি থাকা অবস্থায় খাবারের সাথে বিষ মিশিয়ে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে।
মো. হোসেন বলেন আরো বলেন, মঙ্গলবার সকালে জোছনা বেগম এর করা একটি মিথ্যা মামলা হাজিরা দিতে চরফ্যাশন কোর্টে  আসলে তার আত্মীয় আমাকে জোড় করে অস্ত্রের মুখে জিন্মিকরে হোন্ডা করে লালমোহনের হরিগঞ্জ সুপারি বাগানের মধ্যে এনে আটকে রাখে।পরে তারা আমার স্ত্রীকে ডিবোর্স দিতে হবে  ও বাড়ির মালিকানা দাবি করতে পারবোনা বলে খালি স্টামে সাক্ষর নেয়। এসময় আমার কাছ থেকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে ৩ টি নম্বরে বিকাশ ও নগদে ৫০ হাজার টাকা নেন। এসময় মুক্তিপন আদায় করার জন্য আমার স্ত্রী আত্মীয় আরিফ নামে একজন দলবল নিয়ে দেশীয় অস্ত্রদিয়ে ব্যাপক মারধর করে আমাকে।  
পরে তারা আমাকে চরফ্যাশন এর আমার বাসায় যাবোনা এই মর্মে  খালি ব্লাক স্টামে অঙ্গিকার নিয়ে  ছেড়ে দেন।পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় আমি আহত অবস্থায়  ভোলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হই। তিনি আরো বলেন আমার স্ত্রী জোছনার অত্যাচারে আমি চরফ্যাশন ঢুকতে পারিনা। আমার সন্তানদের আদর পর্যন্ত করতে পারিনা। কিছু হলেই তার ভাই রিয়াজ এর সহযোগিতা নিয়ে আমাকে বিভিন্ন আত্মীয় স্বজন দিয়ে ধরে নিয়ে মারধর করে। এখন আমার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে জেল খাটানোর হুমকি দেয়।
এর আগেও আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ছাত্রলীগ সভাপতি আরমানকে দিয়ে আমার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন চলায়। এখন আমি এই ঘটনায় সুস্থ  বিচার চাই। মানসিক শান্তি চাই। সে আমাকে মারার জন্য  নানা ধরনের পরিকল্পনা করে যাচ্ছে।
এসময় হোসেন বলেন সরকার যেন নারী নির্যাতনের মামলা গুলো দ্রুত বিচার করে তেমন পুরুষ নির্যাতনের মামলা গুলো যেন আমলে নিয়ে দুষ্ট নারীদের শাস্তির আওতায় আনেন।
এদিকে এই ঘটনায় জোছনা বেগমকে মুঠোফোন জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান,আমার স্বামী হোসেন রাতে উল্টা পাল্টা মাদক সেবন করে এসে আমাকে মারধর করে। এমনকি আমার বেতনের সবটাকা সে নিয়ে নেয়। যৌতুকের দাবি করেন।  টাকা না দিলে সংসার করবেন, নয়তো সংসার করবেন না মর্মে হুমকি দিয়ে আসছে। তা নিয়ে কথাকাটি হয়েছে বলে জানান। বাড়ি থেকে উৎখাত করা কথা জিজ্ঞেস করলে তিনি বিষয়টি এরিয়ে যান।
চরফ্যাশন থানার ওসি  মোঃ মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, চরফ্যাশনে স্ত্রীর হাতে স্বামী  নির্যাতন এমন কোন অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি। আসলে তদন্ত সাপেক্ষ আইনআনুক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।