অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ২৭শে মার্চ ২০২৫ | ১৩ই চৈত্র ১৪৩১


ভোলায় অসহায় বিধবা নারীকে পাকাঁ ঘর উপহার দিলো নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২রা মার্চ ২০২৫ রাত ১২:০৫

remove_red_eye

৭২



বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক ॥ বাংলার কণ্ঠে সংবাদ প্রকাশের পর নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ভোলার অসহায় বিধবা নাজমা বেগমকে পাকাঘর উপহার দেয়া হয়েছে।  শনিবার (১লা মার্চ) দুপুরে ভোলার উকিল পাড়া নতুন খালপাড় সড়কের পাশে নিজাম হাসিনা ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে গৃহহীন নাজমা বেগমকে ঘরের চাবি হস্তান্তর করছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক আলহাজ্ব মোহাম্মদ নিজামউদ্দিন এবং তার স্ত্রী হাসিনা বেগম।
নাজমার বাড়ি ভোলা পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোলা খালের পাড়ে। ২২ বছর আগে স্বামী আবুল কাশেম মারা যান। শুরু হয় তাঁর জীবনসংগ্রাম। নাজমা বেগম ছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী। স্বামী সচিবালয়ের গাড়ি চালাতেন। পেনশনের টাকাপয়সার বেশির ভাগ বড় স্ত্রী আর তাঁর সন্তানেরা নিয়ে যান।
নাজমা মেয়েকে নিয়ে এসে বাবার বাড়িতে ওঠেন। বাবা হাদীসুর রহমানের মৃত্যুর পর নাজমার জীবনে নেমে আসে ভয়ানক দুর্দশা। বাবার মৃত্যুর পর সবাই ঘর ভেঙে ভাগ করে নেন। ভাগে পাওয়া পুরোনো টিনে কোনো রকম রাত্রিযাপন করার জন্য একটি ঘর তোলেন। অন্যের বাড়িতে কাজ করে, কোনো রকম মেয়েকে বড় করে বিয়ে দিয়েছেন। বয়স বাড়া আর নানা রকম অসুখে অন্যের বাড়িতে দিন–রাত কাজ শরীরে কুলায় না। তাই দুই বছর ধরে শীতের কয়েক মাস তিনি বিকেলে খালপাড়ে পিঠা বিক্রি করতে বসেন। খালপাড়ে পিঠা বিক্রি করে কোনোমতে দুবেলা খাবার জোগাড় করেন। বাড়ি বলতে একটি টিনের জীর্ণ ঘর। বর্ষাকালে ঘরে পানি পড়ে, যার কারণে ঘরে থাকা কষ্টকর। হঠাৎ পাকা ঘর উপহার পেয়েছেন নাজমা বেগম। হয়তো তিনি কল্পনাও করেননি এমন একটি পাকা ঘর হবে তাঁর।
নাজমার দৈন্যদশার স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হলে নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নিজামউদ্দিন আহমেদ এর দৃষ্টিতে আসে। তিনি ব্যবসার জন্য ছয় হাজার টাকা ও একটি পাকা ঘর তৈরি করে দেয়ার উদ্দ্যোগ নেন। শনিবার বেলা ১১টায় নাজমাকে ঘরে চাবি তুলে দেন তিনি।নিজাম উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা আমাকে খুব ভালো রেখেছেন। জানতে পারলাম নাজমা বেগমের ঘরের দরকার। আসলাম, দেখলাম, একটি নিরাপদ আবাস গড়ে দিলাম। নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে অনেক ঘর, স্কুল, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, বৃদ্ধাশ্রম গড়ে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পেশাদার গনমাধ্যম কর্মীদের জন্য অত্যাধুনিক ভোলা প্রেসক্লাব ভবন নির্মানে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। এমনকি ভোলার অসহায় দরিদ্র মানুষের জন্য বিনা মূল্যে চিকিৎসার জন্য একটি চক্ষু হাসপাতাল নির্মান করেছেন। সেখানে গত এক দশকে হাজার হাজার মানুষ চক্ষু রোগের চিকিৎসা সেবা পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি উকিল পাড়া নিজাম হাসিনা কমপ্লেক্স এ কিডনি, হার্টসহ অন্যান্য রোগের জন্য ৮ তলা বিশিষ্ট একটি জেনারেল হাসপাতাল ইউনিট নির্মান কাজ করছেন। যার নির্মাণ কাজ খুব দ্রত চলছে এবং অতি শীঘ্রই এ হাসপাতালের কার্যক্রম চালু হবে। এগুলো গড়ে আমি ও আমার স্ত্রী শান্তি পাই। এগুলো গড়ে দেওয়ার পেছনে আমার কোনো উদ্দেশ্য নেই।’ এসময় বৃদ্ধ নাজমা কান্না জড়িত কণ্ঠে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, আকাশে মেঘ দেখলেই আমার খুব চিন্তায় সময় কাটতো।  মাথা গোছাবার যায়গা না থাকায় বৃষ্টি আসলেই ঘরের এক পাশ থেকে অন্য পাশে ছুটে বেড়াতাম। এমন পাকা ঘর আমার স্বপ্নে কল্পনাও ছিলো না। আজকে ঘরে প্রবেশ করার পর মনে হচ্ছে যেন স্বপ্নই দেখছি। পরে কান্না জড়িত কণ্ঠে দু'হাত তুলে আলহাজ্ব মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিনের  জন্য দোয়া করেন এই বিধাবা নারী।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক বাংলার কন্ঠের সম্পাদক ও ভোলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি এম হাবিবুর রহমান, দৈনিক আজকের ভোলার সম্পাদক আলহাজ্ব মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, মাছরাঙা টিভির প্রতিনিধি হাসিব রহমান, প্রথম আলো জেলা প্রতিনিধি নেয়ামত উল্লাহ,চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের প্রতিনিধি আদিল হোসেন তপু,সাংবাদিক বেল্লাল নাফিজ প্রমুখ।








আরও...