অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


মনপুরায় রাতের আঁধারে জমি দখল করে ঘর উঠানোর অভিযোগ


মনপুরা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০২৫ রাত ০৯:৩৫

remove_red_eye

১৫৪

সোহাগ মাহামুদ সৈকত, মনপুরা প্রতিনিধি: ভোলার মনপুরা উপজেলার কলাতলী চরের এক ব্যবসায়ীর বাড়ি জবরদখল করে রাতের আঁধারে ঘর উঠানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় এক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। উক্ত ঘটনায় মনপুরা থানা ও নৌ কন্টিনজেন্টে বাদী হয়ে অভিযোগ করেন ওই ভুক্তভোগী। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারী) জমির মালিক বাদী হয়ে এই অভিযোগ করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কলাতলী চরের বাসিন্দা ব্যবসায়ী মোঃ ছানাউল্লা ক্রয় সূত্রে মনির বাজার সংলগ্ন দুই একর জমি চার বছর ধরে ভোগ দখলে রয়েছেন। গতবছর বাড়ি করার উদ্দেশ্যে মাটি কেটে পুকুর খনন করেন তিনি। কিন্তু গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) রাতের আঁধারে জবরদখল করে উক্ত জমিতে ঘর উত্তোলন করেন একই এলাকার বাসিন্দা মোঃ মিলন মিয়া। ঘর উত্তোলনে বাধা দিলে মিলনের সাথে থাকা ১০/১৫ জন লোক অস্ত্র প্রদর্শন করে জমির মালিক ছানাউল্লাহকে মারধর ও খুন জখম করার চেষ্ঠা করে। সরেজমিনে দেখা যায়, ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার কলাতলী ইউনিয়নের মনির বাজার সংলগ্ন উত্তর পাশে অবস্থিত মোঃ ছানাউল্লাহ'র দুই একর জমি রয়েছে। ২০২০ সালে স্থানীয় নৌবাহিনীর কমান্ডার মোঃ কামাল হোসেনের কাছ থেকে ছানাউল্লাহ দুই একর জমি ক্রয় করে। ক্রয়ের পর থেকে সে জমি ভোগ দখলে রয়েছে। এবং ২০২৩ সালে বাড়ি করার উদ্দেশ্যে মাটি কেটে পুকুর খনন করা হয়। তার পর থেকে ওই নতুন বাড়িটি সানাউল্লা'র দখলে ছিলো। কিন্তু গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) আঁধার রাতে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মিলন ওই বাড়িতে ঘর উত্তোলন করে। এছাড়াও ঘর উত্তোলন করতে গিয়ে বাড়ির পাশে সরকারি রাস্তায় থাকা বনবিভাগের গাছ কেটে ফেলে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্ত মিলনের বিরুদ্ধে। এব্যাপারে উপজেলার কলাতলী ইউিনয়ন বনবিভাগের বীট অফিসার মোঃ মিলন মিয়া বলেন, গাছকাটার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। ঘটনাস্থলে বনরক্ষি পাঠিয়েছি। তবে গাছ কাটার বিয়ষয়টি জবরদখল করে ঘর ওঠানো মিলন অস্বীকার করেন। এব্যাপারে রাজনৈতিক নেতারা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান বীট অফিসার। কলাতরী চরের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রফিজল ইসলাম, আইজল ব্যাপারী, পপি আক্তার, সোনিয়া, আবু তাহের সেরাং,রায়হান ও রুবেল জানান, জমিটি প্রথমে আবদুর রব হাওলাদারের ছিলো। চিকিৎসার টাকার অভাবে ২০১২ সালে জমিটি তিনি বিক্রি করেন নৌবাহিনীর কমান্ডার মোঃ কামাল উদ্দিনের কাছে। ২০২০ সালে কামাল জমিটি বিক্রি করেন স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ ছানাউল্লা ও মোঃ সোহেলের কাছে। সেই থেকে চার বছর যাবত জমিটি সানাউল্লা ও সোহেল ভোগ দখলে থেকে চাষাবাদ করে আসছে। ২০২৩ সালে বাড়ি করার জন্য মাটি কেটে পুকুর খনন করে সানাউল্লা। কিন্তু গত মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারী) আঁধার রাতে মোঃ মিলন ১০/১৫ জন লোক নিয়ে এসে ঘর উত্তোলন করে। এব্যাপারে সানাউল্লার পরিবার বাধা দিলে দা বটি ও লাঠিসোটা নিয়ে গায়ের দিকে তেড়ে আসে। অথচ আমরা দীর্ঘদিন ধরে জনি, জমিটি সানাউল্লা ও সোহেলের। এব্যাপারে জমির মালিক মোঃ সানাউল্লা বলেন, আমি জমিটি কেনার পর থেকে ভোগ দখলে আছি। আমি বাড়ি করে বসবাসের জন্য মাটি কেটে পুকুর খনন করি। কিন্তু রাতের আঁধারে আমার বাধা বাড়িতে মিলন জবরদখল করে ঘর উত্তোলন করে। খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গেলে মিলনসহ ১০/১৫ লোক দা-বটি ও লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। আমি নিরুপায় হয়ে মনপুরা থানায় ও নৌ কন্টিনজেন্টে অভিযোগ দিয়েছি। এদিকে কলাতলী চর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা এসআই নজরুল ইসলাম এর কাছে অভিযোগ ও ঘর উঠানোর খবর ৯৯৯ এ ফোন করে জানানোর পরও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেন নাই বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী। এদিকে ঘর উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত মোঃ মিলন বলেন, আমি ২০০২ সালে বণবিভাগের কেওড়া গাছ কেটে পরিষ্কার করে জমিটি ভোগ দখলে যাই। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের কারনে আমি বেদল হয়ে যাই। তবে আমার কাছে জমির কোন কাজপত্রও নাই। তাই এখন সুযোগ পেয়ে আমি এই জমিতে ঘর উত্তোলন করেছি। এব্যাপারে মনপুরা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আহসান কবির বলেন, কলাতলী চরে জবরদখল করে ঘর উত্তোলনের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।