”মাধ্যমিকের ১৫লাখ বইয়ের একটি বইও পায়নি শিক্ষার্থীরা”
এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন থেকে: প্রাথমিক, ইবতেদায়ী, মাধ্যমিক ও দাখিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখন পর্যন্ত বই পৌছায়নি। নতুন শিক্ষাবর্ষের শুরুতে শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত চরফ্যাশন উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে বই না পৌছানোয় শিক্ষক অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চরফ্যাশন উপজেলায় সরকারী ২১২ ও বেসরকারী প্রায় ২০০টি প্রাথমিকের ৫১হাজার শিক্ষার্থী ও ৮২টি মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ৪৫হাজার ৩শ এবং ৬৭টি মাদ্রাসায় মোট শিক্ষার্থী ৩৩হাজার ৬শ জন। নতুন কারিকুলাম ও দেশীয় ছাপাখানায় ছাপানোর কাজে দেরি হওয়ায় পহেলা জানুয়ারি বই পাওয়া নিয়ে সঙ্কা দেখা দিয়েছে। যার ফলে সকল শ্রেণীর সব বিষয়ের বই পেতে জানুয়ারী বা ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত এসব শিক্ষার্থীদের অপেক্ষা করতে হবে বলে জানা গেছে।
চরফ্যাশন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২১২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫১ হাজার শিক্ষার্থীদের ৩ লাখ ৪৮হাজার বইয়ের চাহিদা রয়েছে। এবং প্রাক প্রাথমিকে ১২হাজার ২০০ বইয়ের চাহিদা রয়েছে। প্রাক প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণীর বই বিতরণ করা হয়েছে তবে চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই এখন পর্যন্ত পৌছায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার মাদ্রাসা ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে ১৫লাখ ২২ হাজার ৩০০ কপি বইয়ের চাহিদা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাধ্যমিক পর্যায়ের কোনো বই আসেনি চরফ্যাশনের বিদ্যালয়গুলোতে। করিমজান মহিলা মাদ্রাসার সহকারী সিনিয়র শিক্ষক মো.হারুনুর রশিদ জানান, অন্তত দুই মাস আগে নতুন বই আসার কথা থাকলেও আমাদের মাদ্রাসায় এখনো কোনো বই আসেনি। সময়মত বই না আসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।
ফ্যাশন মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দুলাল মিয়া বলেন, বিদ্যালয়ে এখন পর্যন্ত না আসায় নতুন বছরে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিতে পারছি না যা খুবই দুঃখজনক। বিষয়টি শিক্ষা অফিসে জানানো হয়েছে। উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, চাহিদার চেয়ে কম বই এসেছে। বিদ্যালয়গুলোতে বই বিতরণ করা হয়েছে। তবে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির বই না আসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার খলিলুর রহমান বলেন, নতুন কারিকুলাম ও সংশোধন এবং ছাপাখানায় মুদ্রণে দেরি হওয়ার জন্যই শিক্ষার্থী পর্যায়ে বই পৌছতে দেরি হয়েছে বলে মনে করি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, মাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই পৌছায়নি। অন্তত দুই মাস পূর্বে বই পৌছানোর কথা থাকলেও এখনো বই না আসায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা হতাস হয়ে পরেছে। আশাকরি জানুয়ারি মাসের মধ্যে বই পাওয়া যাবে। ইউএনও রাসনা শারমিন মিথি বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে জানতে পেরেছি যে দেশিয় ছাপাখানায় ছাপানো ত্রুটির কারণে ২৫সালের শুরুতে বই বিতরণে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করছি খুব দ্রুতই সকল শ্রেণীর প্রত্যেক বিষয়ের বই পৌছে যাবে।