অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


লালমোহনে রোগাক্রান্ত কুকুরের দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ মানুষ


লালমোহন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৫ই নভেম্বর ২০২৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৫

remove_red_eye

৪২৯

আকবর জুয়েল, লালমোহন থেকে : গত মাসখানেক ধরে ভোলার লালমোহন পৌরশহরে রোগাক্রান্ত বেওয়ারিশ কুকুরের উপদ্রব বেড়েছে। এসব কুকুরের শরীরের বিভিন্নস্থানে ঘা সৃষ্টি হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন পৌরশহরের ক্রেতা-বিক্রেতাসহ পথচারীরা। প্রচন্ড দুর্গন্ধের কারণে অনেকেই নাক চেপে এসব কুকুরকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। অনেক সময় রোগাক্রান্ত এসব কুকুর মানুষের বাসায়ও প্রবেশ করছে। পৌরশহরের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে। যার মধ্যে বেশ কিছু কুকুরের শরীরে ঘা সৃষ্টি হয়ে দুর্গন্ধ ছড়াতে দেখা গেছে। পৌরশহরের প্রায় সবকয়টি অলি-গলি এবং সড়কে এ ধরনের রোগাক্রান্ত কুকুরের দেখা মিলছে। তবে এসব কুকুরের চিকিৎসায় কেউ কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না।
লালমোহন পৌর সুপার মার্কেটের প্রবেশদ্বারের চা দোকানি মো. ইউসুফ (ভুট্ট) জানান, মার্কেটের অনেক দোকান বন্ধ থাকায় এখানে রোগাক্রান্ত কুকুরগুলো এসে বিশ্রাম নেয়। তবে এসব কুকুরের শরীরের বড় বড় ঘা থেকে প্রচন্ড দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। দুর্গন্ধের কারণে এসব কুকুরের পাশ দিয়ে হাঁটা বা থাকা দুস্কর হয়ে পড়ে। এসব কুকুরের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।
লালমোহন সদর রোডের একটি বিরিয়ানির দোকানের মালিক বলেন, দোকানের সামনে দিয়ে রোগাক্রান্ত এসব কুকুর যাওয়ার সময় অনেক দুর্গন্ধ ছাড়ায়। অনেক সময় এই দুর্গন্ধে বমির উপক্রম হয়। দোকানের সামনে এইসব রোগাক্রান্ত কুকুর দাঁড়ালে আমরা সেগুলোকে তাড়িয়ে  দিই। কারণ এই কুকুর দোকানের সামনে দাঁড়ালে ক্রেতারা দোকানে ঢুকতে চান না।
পৌরশহরের মো. জুবায়ের নামে এক পথচারী জানান, বাজারে এসেছি কিছু কাজে। এসে কয়েকটি কুকুরের শরীরে বড় বড় ক্ষত দেখেছি। কুকুরগুলোর ওইসব ক্ষতস্থান থেকে ব্যাপক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। যার জন্য কুকুরগুলো পাশ দিয়ে গেলে বমি করে দেওয়ার পালা হয়। এসব কুকুরগুলোর চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
মানবতার পাশেই আমরা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা মো. শামিম রেজা বলেন, বিগত কয়েকদিন ধরে পৌরসভার বিভিন্নস্থানে রোগাক্রান্ত কুকুর দেখছি। কুকুরগুলোর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতর সৃষ্টি হয়েছে। ওইসব ক্ষত স্থান থেকে ব্যাপক দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ সবাই। তবে এসব কুকুরগুলো অবলা প্রাণি। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদেরও হয়তো কষ্ট হয়। তাই এসব কুকুরকে রোগের দোহাই দিয়ে হত্যা না করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ রইলো।
লালমোহন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রাজন আলী জানান, আক্রান্ত কুকুরের অধিকাংশই বেওয়ারিশ। যার জন্য এগুলোর তেমন যত্ন নেওয়া হয় না। তাই এসব কুকুর নানান সময় বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে কোনো রেস্কিউ টিম এগুলো উদ্ধার করে আমাদের এখানে আনলে আমরা রোগাক্রান্ত কুকুরগুলোকে চিকিৎসা দেবো। এছাড়া পৌরসভার পক্ষ থেকেও এসব কুকুরের চিকিৎসায় উদ্যোগ নেওয়া হলে আমরা তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।
এ বিষয়ে লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং পৌরসভার প্রশাসক মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের সঙ্গে সমন্বয় করে শিগগিরই এসব রোগাক্রান্ত কুকুরগুলোর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।





আরও...