অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


ভোলার মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীতে নির্বিঘ্নে চলছে ইলিশ শিকার


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০শে অক্টোবর ২০১৯ রাত ১১:৫২

remove_red_eye

৬০৬

মো: জসিম জনি, লালমোহন থেকে : ভোলার লালমোহনের মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে মা ইলিশ নিধন। ইলিশ রক্ষায় নদীগুলোতে রাত-দিন ইউএনও, পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌ-পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের জোরালো অভিযান থাকলেও সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে চলছে জাল নৌকা নিয়ে নদীতে মা ইলিশ শিকারের খেলা। শনিবার লালমোহনের তেঁতুলিয়া নদীর নাজিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন জেলা পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সারের নেতৃত্বে পুলিশ। এসময় নদীতে মাছ ধরা অবস্থায় ৪ জন জেলেকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে ৫টি মাছ ধরা ট্রলার ও প্রায় ৪০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। আটককৃতদের ১ বছর করে সাজা দেওয়া হয়েছে। এর আগের দিন ইউএনও হাবিবুল হাসান রুমির নেতৃত্বে মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অভিযান চালিয়ে ৫০ হাজার মিটার জাল ও ৫মন মা ইলিশ জব্দ করা হয়। এ পর্যন্ত লালমোহনে ১৯ জেলে মাছ ধরা অবস্থায় আটক হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ্ত মিশ্র।
বেশি মুনাফার আশায় এক শ্রেণির অসাধু জেলে নদীতে মাছ শিকার করছেন। কোন অভিযানেই থামানো যাচ্ছে না মা ইলিশ ধরা ও বেচা কেনা। মাছ কিনতে নদী পাড়ে ব্যাগ ও বস্তা নিয়ে ক্রেতাদের আনাগোনা চলছে। নদী পাড় থেকেই মাছ কিনে বস্তা বোঝাই করে নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। অভিযান একপাশে চললে অন্যপাশে চলে জেলেদের মাছ ধরা ও বেচা কেনা। মেঘনা নদীর ধলীগৌরনগর ও লর্ডহার্ডিঞ্জ ইউনিয়ন এবং তেঁতুলিয়া নদীর বদরপুর, ফরাজগঞ্জ ও পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের সবকয়টি মৎস্য ঘাটে মাছ ধরা চলছে। এক কেজি সাইজের ইলিশের হালি (৪টি) ১২ শত থেকে ১৫ শত টাকা করে বিক্রয় হচ্ছে। ক্রেতারা গোপনে মাছ কিনে ফ্রিজ ভরছেন।
সূত্র জানায়, সরকারি হিসেবে নিবন্ধনের আওতায় ভোলার লালমোহন উপজেলায় ১৪ হাজার ৭২৩ জন জেলে রয়েছে। প্রতিদিন মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন এসব জেলে। কিন্তু ইলিশ প্রজনন মৌসুম ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন মা ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছে ওইসব জেলেরা। এতে অভাব অনটন আর অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ছে জেলেরা। অভাবের তাড়নায় অনেকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করছেন। জেলেরা বলছেন, পেটের দায়ে ইলিশ শিকার করছেন তারা, নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারি বরাদ্দের চাল সবার ভাগ্যে জোটেনি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুদীপ্ত মিশ্র জানান, নিবন্ধিত জেলেদের মধ্য থেকে ১১ হাজার ৫১৮ জন জেলের জন্য ২০ কেজি করে চাল বরাদ্ব হয়েছে। দুইটি নদীর মা ইলিশ রক্ষায় দিন-রাত মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে উপজেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ, কোস্টগার্ড ও নৌ-পুলিশের অভিযান নিয়মিত পরিচালনা করছে। নিষেধাজ্ঞার আগে ও পরেতামূলক সভা করা হয়েছে। দু’একটি জেলে মাছ ধরতে পারে তবে আমরা অভিযান জোরালো করেছি।