অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বুধবার, ২৬শে মার্চ ২০২৫ | ১২ই চৈত্র ১৪৩১


দেশের ২য় সুন্দরবনে পরিণত হচ্ছে ভোলার কুকরি-মুকরি


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৪ঠা মার্চ ২০২৪ বিকাল ০৫:৩৭

remove_red_eye

১৮২

বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক : বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের আদলে তৈরি হচ্ছে ভোলার চরফ্যাশনের কুকরি-মুকরি। ইতোমধ্যে এ দ্বীপ ১০ হাজারের বেশি হরিণসহ অসংখ্য বন্যপ্রাণীর আশ্রয়স্থলে পরিণত হয়েছে।

এখানে রয়েছে তিন হাজার হেক্টর ম্যানগ্রোভ বাগানে এক কোটির বেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। যার বেশিরভাগ, কেওড়া, বাইন, সুন্দরী, গোলপাতাসহ নানা প্রজাতির।

BHOLA

বনবিভাগ বলছে, দুই শতাধিক বছরের পুরো এ দ্বীপে বনবিভাগের প্রচেষ্টায় যেভাবে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠছে সবুজ বেষ্টনী। এতে এটি হতে পারে দেশের ২য় সুন্দরবন।

জানা গেছে, দেশের ১৬টি উপকূলীয় জেলার মধ্যে অন্যতম দ্বীপজেলা ভোলা। এ জেলার চরফ্যাশনের সাগর উপকূলে ১৯১২ সালে জেগে ওঠে কুকরি-মুকরি। একদিকে বনায়ন আর অন্যদিকে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা এ দ্বীপটি যেন ধীরে ধীরে সুন্দরবনে রূপ নিচ্ছে। চারদিকে বাহারি বৃক্ষ, সরু খাল, বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য দেখে বোঝার উপায় নেই এটি আসলে সুন্দরবন কিনা। প্রথম দর্শনে পর্যটকরা এসে এই দ্বীপকে সুন্দরবনের চেয়ে কোনো অংশ কম নয় বলে মন্তব্য করছেন।  

BHOLA-1

তারা বলছেন, কুকরি-মুকরি হতে পারে আরেক সুন্দরবন, যা বাস্তবায়নে সরকারের এগিয়ে আসার দাবি তাদের।

পর্যটক এমরান হোসেন, সোহরাব উদ্দিন ও লিয়াকত হোসেন বলেন, আমরা সুন্দরবন গিয়েছি, সেখানে চারপাশের বৃক্ষ ও পরিবেশ যেমন দেখতে পেয়েছি, তার সব রয়েছে কুকরি-মুকরিতে। বলা যায় এটি সুন্দরবনের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, সরকার পদক্ষেপ নিলে এটিও সুন্দরবনে রূপ নেবে। তখন এ দ্বীপে আরও পর্যটকদের সমাগম হবে এবং স্থানীয়ভাবে অর্থনীতির উন্নয়ন হবে।

স্থানীয় বাসিন্দা আনিসুর রহমান বলেন, আমাদের কুকরি মুকুরি প্রাকৃতিকভাবে নৈসর্গিক সৈন্দর্যে ভরা। তাই দূর-দূরান্ত থেকে পর্যটকরা এখানে ঘুরতে আসেন। হরিণ-বানর আর বনের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হন তারা।

এদিকে সৌন্দর্য আর নয়নাভিরাম দৃশ্যের সঙ্গে ম্যানগ্রোভ বাগানের সারি সারি বৃক্ষ কাছে টানে প্রকৃতিপ্রেমীদের। তারা ছুটছেন হরিণ, বানরসহ বিভিন্ন প্রাণী দেখতে।

সাগর উপকূলের ঢালচর ও তারুয়া দ্বীপের সঙ্গে সমন্বয় করা হলে কুকরি-মুকরি গড়ে উঠবে সুন্দরবনে এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

কুকরি-মুকরি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবুল হাসেম মহাজন বলেন, সুন্দরবন এবং কুকরি মুকরি দেখতে অনেকটা একই রকম। সুন্দরবনে যা আছে এখানেও তাই আছে। তবে তাডুয়া ও ঢালচরসহ বেশকিছু দ্বীপকে এর আওতায় আনা হলে এক সময় এটি সুন্দরবনের পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।

এদিকে কুকরি-মুকরিকে সুন্দরবনের পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে বলে জানান, উপকূলীয় বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শহিদুল হক।  

তিনি বলেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে অচিরেই এটি সুন্দরবনে পরিণত হবে।

উল্লেখ্য, ১৯৭৩-৭৪ সালে বনায়নের পর ১৯৯৬ সালে বন্যপ্রাণী অবমুক্ত করা হয় এ দ্বীপে। কুকরি-মুকরি একদিকে যেমন সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে অন্যদিকে গড়ে উঠছে আরেক সুন্দরবন।