আকতারুল ইসলাম আকাশ: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে করোনা ভাইরাসের চরম ঝুঁকি নিয়ে ফেরি ট্রলার ও স্পিডবোটে করে ভোলা থেকে লক্ষ্মীপুর মজু চৌধুরী ঘাট হয়ে ঢাকায় ফিরছে গার্মেন্টস শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ।
অন্যদিকে কয়েকদিন ধরে রাজধানীসহ দেশজুড়ে আটকা থাকা শতশত মানুষ ফিরছে স্ব স্ব জেলা ভোলা হয়ে বরিশালেও। চট্টগ্রাম কুমিল্লা ও নোয়াখালী থেকে ভোলা হয়ে বরিশাল ফিরছেন কয়েকশো যাত্রী।
ঝুঁকি নিয়ে রাজধানীতে যাওয়া যাত্রীরা জানান, আগামীকাল রবিবার ৫ এপ্রিল রাজধানীর কিছু কিছু পোশাক কারখানাসহ অনেক বেসরকারি শিল্প কারখানা খোলা রয়েছে। তাই করোনার চরম ঝুঁকি নিয়ে রাজধানী মুখী হচ্ছেন তারা।
অন্যদিকে ঝুঁকি নিয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে ভোলায় আসা যাত্রীরা জানান, খাবার সংকট ও তীব্র কষ্ট হওয়ায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছেন তারা।
আর সচেতন মহল বলছে, করোনা নিরাপত্তা হোম কোয়ারান্টাইনে না থেকে চলাচল করা এসব যাত্রীরা চরমভাবে করোনা ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারেন বলে মন্তব্য তাদের।
আজ শনিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্তু এমনই চিত্র দেখা গেছে ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা লঞ্চ ও ফেরিঘাটে। দিনভর নৌকা, ট্রলার ও স্পীডবোটে ভোলা থেকে রাজধানীসহ দেশজুড়ে স্ব স্ব কর্মস্থলে ছুটে চলছেন যাত্রীরা। যাত্রীদের নিয়ন্ত্রণে ঘাটগুলোতে কোন উদ্দ্যোগ দেখা যায়নি।
ঘাটে থাকা স্থানীয়রা জানান, সবচেয়ে বেশি যাত্রী ভোলা ত্যাগ করেছেন সকালবেলা।।তাছাড়া শুক্রবার বিকেলের দিকে ভোলা-লক্ষ্মীপুর ফেরিঘাটের রাস্তায় শতশত মানুষকে দলবেঁধে ছুটতে দেখা গেছে। এদের নেই ভাইরাস প্রতিরোধের কোন ব্যবস্থা। এমনকি অধিকাংশকেই দেখা গেছে মাস্ক বিহীন। হাতে গ্লোভস নেই। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে একা চলার পরিবর্তে এরা দলবেঁধে কর্মস্থলে ছুটছেন। পোশাক কারখানাসহ একাধিক বেসরকারি শিল্প কারখানা খোলায় রাজধানী মুখী হচ্ছেন তারা।
ভোলা থেকে ঢাকায় যাওয়া যাত্রী কামরুল আহসান জানান, আগামীকাল গার্মেন্টস কারাখানা খোলা। করোনা ভাইরাসের কারণে অল্প কয়েকদিনের ছুটি দিয়েছে গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ। সামনে ঈদ এখনও বেতন পাইনি। কারাখানা থেকে ফোন দিয়ে বলছে কালকে যদি কারখানায় উপস্থিত না থাকি। তাহলে একমাসের বেতন দিবেনা। তাই ঝুঁকি নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছি।
এদিকে গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় গ্রামঞ্চলে চলাচল করা রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল যোগে ইলিশা ঘাটে এসেছেন যাত্রীরা।
অভিযোগ রয়েছে মজু চৌধুরী ঘাট থেকে আসা ও ইলিশা ঘাট থেকে অবৈধভাবে যাত্রী নিয়ে যাওয়া ট্রলার, স্পিডবোট ও স্টিল বডি ঘাটে ভিড়লে এবং ঘাট ত্যাগ করলে ঘাটে থাকা জসিমসহ আরও কয়েকজনকে দিতে হয় ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা।
মজু চৌধুরী ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ট্রলার মালিক বিল্লাল গণি জানান, ট্রলার ঘাট করার সাথে সাথে ঘাটে থাকা জসিম ৩ হাজার টাকা নিয়েছেন। জসিম বলেছে, এই টাকা পুলিশ ও সাংবাদিকদের দিতে হবে।
ইলিশা ঘাট থেকে অবৈধভাবে ছেড়ে যাওয়া নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্পিডবোট চালক জানান, প্রতি স্পিডবোট ছাড়ার আগে জসিমকে যাত্রী বাবদ ঘাট টিকেটের নামে দিতে হয় মাথাপিছু ৫ টাকা করে ও আমরা বোট চালকদের দিতে হয় ৩ হাজার টাকা প্রতি ট্রিপে। ওই বোট চালক আরও জানান, ঘাটে জসিমকে বাড়িতে টাকা দেওয়া লাগে বলে যাত্রীদের কাছ থেকে আমরা বাড়তি ভাড়া নিয়ে থাকি।
ঘাটে উপস্থিত সাংবাদিকদের টের পেয়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত জসিমসহ তার সাথে থাকা আরও কয়েকজন।
এবিষয়ে ভোলা জেলা প্রশাসক মাসুদ আলম সিদ্দিক জানান, শীঘ্রই এবিষয়ে প্রদেক্ষপ গ্রহন করা হবে।