অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ১৪ই নভেম্বর ২০২৫ | ৩০শে কার্তিক ১৪৩২


শিশু অতিচঞ্চল ও অমনোযোগী হয়ে ওঠে যে রোগের কারণে


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৭শে ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সন্ধ্যা ০৬:৫০

remove_red_eye

৩১৩

শিশুরা স্বভাবতই একটু চঞ্চল স্বভাবের হয়। তবে অতিমাত্রায় চঞ্চলতা ও কাজের প্রতি অমনোযোগিতা কিন্তু শিশুর মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। শিশুদের অতিমাত্রায় চঞ্চলতা, অতি আবেগ ও অমনোযোগিতার কারণ হতে পারে এডিএইচডি ব্যাধি।

অ্যাটেনশন ডিফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভ ডিসর্ডার (এডিএইচডি) নামক এই রোগ ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা যায়। তবে ১-৪ বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে এই ব্যাধি বেশি দেখা যায়।

অতিমাত্রায় চঞ্চলতা এডিএইচডি শিশুর প্রথম উপসর্গ। শতকরা ৫ ভাগ শিশুর মধ্যে এডিএইচডি রোগটি পরিলক্ষিত হয়। এটি শিশুদের স্নায়ু বিকাশজনিত আচরণগত সমস্যা। সাধারণত মেয়েদের তুলনায় ছেলেশিশুদের মধ্যে এটি ৩ গুণ এটি বেশি পরিলক্ষিত হয়।

নির্দিষ্টি কোনো কারণ এর জন্য দায়ী নয়। জমজ শিশুদের মধ্যে এ রোগের প্রবণতা শতকরা ৯০ ভাগেরও বেশি। এছাড়া বাবা-মায়ের মধ্যে থাকলে এ রোগ শিশুদের হওয়ার সম্ভাবনা ৫০ ভাগেরও বেশি।

এই রোগের কারণ কী?

বিশেষজ্ঞদের মতে, জিনগত কারণই এর জন্য দায়। এছাড়া মস্তিস্কের গঠনগত পরিবর্তন, স্নায়ুবিক রাসায়নিক পদার্থের তারতম্য, হরমোনজনিত সমস্যা, মস্তিস্কের প্রদাহ, পরিবেশগত কারণসহ নানা কারণে শিশুদের মধ্যে এ রোগ দেখা দিতে হয়।

জিনগত কারণের মধ্যে শরীরে ডোপামিন রিসেপটরে জেনেটিক মিউটেশনকেই বিজ্ঞানীরা মূলত এ রোগটির জন্য দায়ী বলে মনে করছেন। মস্তিষ্কের গঠনগত পরিবর্তন যেমন- মস্তিস্কের বিভিন্ন অংশের আকৃতি ছোট হওয়া ইত্যাদি।

মস্তিষ্কের প্রদাহ বলতে বাচ্চা গর্ভে থাকা অবস্থায় রুবেলা ভাইরাস, সাইটোমেগালো ভাইরাস, হারপিস সিম্পেক্স ভাইরাস, এইচআইভি ভাইরাস দিয়ে আক্রান্ত হলে হতে পারে। পরবর্তি সময়ে নবজাতকের মস্তিষ্কে কোনো জীবাণু সংক্রমণের কারণে যেমন- মেনিনজাইটিস ও এনসেফলাইটিস হলেও এরকম হতে পারে।

কখনো কখনো এসব শিশুদের রক্তে সিসার (লেড) আধিক্য অথবা হরমোনের তারতম্য দেখা যায়। ফাস্টফুড, ফুড এজিটিভস, খাদ্য রঙিন করার রং, খাদ্যকে অধিক দিন সংরক্ষণের জন্য ব্যবহৃত দ্রব্যাদি (ফুড প্রিজারভেটিভস) এ রোগের প্রখরতা বাড়িয়ে দেয় বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।

এডিএইচডি রোগের উপসর্গ কী কী?

>> এডিএইচডিতে আক্রান্ত শিশুরা অতিমাত্রায় অমনোযোগী ও অতিচঞ্চল হয়।
>> তারা এক জায়গায় স্থির থাকে না।
>> স্কুলে শিক্ষকদের কথায় মনোযোগ না দিয়ে অন্য কাজে ব্যস্ত থাকে।
>> স্কুলের প্রয়োজনীয় জিনিস যেমন- খাতা কলম হারিয়ে ফেলে।
>> পড়াশুনায় মনোযোগ না থাকায় স্কুলের রেজাল্ট খারাপ হতে পারে।
>> কোনো কাজ সম্পন্ন না করে সেটি ছেড়ে অন্যটি ধরে।
>> কখনো কখনো ক্ষিপ্ত ও আক্রমণাত্মক হয়।
>> বেশি কথা বলে ও প্রশ্ন শেষ হওয়ার পূর্বেই উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করে।
>> নিজের ইচ্ছেমতো চলতে পছন্দ করে।
>> পরিণতি না বুঝে ঝুকিপূর্ণ কাজ করে বসে।

চিকিৎসার ব্যবস্থা

এক্ষেত্রে শিশুর চিকিৎসা ব্যবস্থা নির্ভর করে তার বয়স, রোগের উপসর্গ ও রোগের মাত্রার উপর। এজন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা প্রতিটি শিশুর জন্য ভিন্ন ভিন্ন।

বাজারে অনেক ধরনের ওষুধ আছে এর চিকিৎসায় যেমন- মিথাইল ফেনিডেট, রিসপেরিডন, ডেক্সএমফিটামিন, এটোমক্সেটিন, ইমিপ্রামিন ইত্যাদি। এগুলো রোগের উপসর্গকে কমাতে সাহায্য করে।

এসব ওষুধে ৭৫-৯০ শতাংশ উপসর্গ দূর হয়। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এসব ওষুধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

খাবারের সীমাবদ্ধতা

ধারণা করা হয়, বেশ কিছু খাবার এ রোগের মাত্রাকে বাড়িয়ে দেয়। তাই এডিএইচডি শিশুদের ক্ষেত্রে ফাস্টফুড, চকলেট, সস, মেগা ভিটামিন, ফুড এজিটিভস, খাবারে প্রিজারভেটিভ, রঙিন খাবার ইত্যাদি খাবার খেতে দেওয়া যাবে না।

ব্যবহারিক শিক্ষা

ওষুধের পাশাপাশি কিছু কিছু ব্যবহারিক শিক্ষা যেমন- নিউরো বিহ্যাবিয়ার থিরাপি, সেন্সরি থেরাপি ইত্যাদি) রোগের মাত্রা কমানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

এডিএইচডি’তে আক্রান্ত শিশুর বাবা-মায়ের জন্য কিছু উপদেশ-

>> স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে শিশুর সমস্যা শেয়ার করা।
>> শিশুর জন্য প্রতিদিনের রুটিন তৈরি করা ও সেই অনুযায়ী তাকে দৈনন্দিন কাজে ব্যস্ত রাখা।
>> শিশুকে শান্ত রাখার ব্যবস্থা করা।
>> সহজ ভাষায় উপদেশ দেওয়া ও ভালো আচরণ করা।
>> অনেক কাজ না দিয়ে ছোট ছোট নির্দেশনামূলক কাজ করানো শিশুকে দিয়ে।
>> অন্য শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করার সুযোগ দেওয়া।
>> শিশুকে নতুন নতুন সৃজনশীল কাজে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া।
>> শিশুকে বাসার ছোট ছোট কাজে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া।
>> ভালো কাজের জন্য প্রশংসা করা।
>> মন্দ কাজের জন্য বেশি কঠিন না হয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা।

এডিএইচডি শিশুর স্কুলের শিক্ষকদের জন্য ছোট ছোট নির্দেশনাবলী যা মেনে চললে এ রোগের মাত্রা কমে যেতে পারে, যেমন-

>> স্কুলে এডিএইচডি আক্রান্ত শিশুকে প্রথম সারিতে বসার ব্যবস্থা করা।
>> তাদেরকে নিয়মিত মনিটরিং করা।
>> ভালো ফলাফল ও ভালো কাজের জন্য তাদের প্রসংশা করা।
>> পড়ার সময়কাল যথাসম্ভব সংক্ষিপ্ত করা।
>> নিয়মিতভাবে কাজের ফলাফল যাচাই করা।

মূলকথা হলো, বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই লক্ষণগুলো অনেকাংশে কমলেও কিছু সমস্যা থাকতে পারে পারে, যা পরবর্তী সময়ে কর্মক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করতে পারে।

তবে ছোট বয়সে শিশুর মধ্যে এ রোগের উপসর্গ দেখা দিলে শিশুর মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যহত হতে পারে। তাই রোগের প্রাথমিক অবস্থায় উপযুক্ত ব্যবস্থা নিলে শিশুর মানসিক বিকাশ অনেকটাই স্বাভাবিক হয় বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা।

সুত্র জাগো

 





মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা

মানবিকতার আলোকবর্তিকা : ভোলার প্রিয় জেলা প্রশাসক আজাদ জাহানের বিদায়বেলা

ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

ভোলার মানবিক ডিসি মো. আজাদ জাহান অন্যত্র যোগদান, রেখে গেলেন সেবার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত

মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ

মনপুরায় যুবদল-ছাত্রদলের বিক্ষোভ সমাবেশ

জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন

জুলাই সনদ ও গণভোটের আগে নির্বাচন নয় : মনপুরায় প্রফেসর কামাল উদ্দিন

মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার

মনপুরায় ধানক্ষেত থেকে হরিণ শাবক উদ্ধার

বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা

বরিশালে রেইজ প্রকল্পের দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন নানা পন্য নিয়ে উদ্যোক্তাদের মেলা

ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

ফেব্রুয়ারিতে উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে জাতির উদ্দেশে যা বললেন প্রধান উপদেষ্টা

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার আহ্বান সেনাপ্রধানের

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে : প্রধান উপদেষ্টা

জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে : প্রধান উপদেষ্টা

আরও...