বাংলার কন্ঠ প্রতিবেদক: ভোলার চরাঞ্চলের প্রাকৃতিক সুন্দর্যকে আরো আর্কষনীয় করে তুলে পরিযাই অতিথি পাখি। শীত এলেই দল বেধে এই অতিথি পাখি ঘুরে বেড়েয় চরাঞ্চলে,নদীর তীরে ও ডুবো চরে। কিন্তু শীত চলে যাওয়ার শেষ সময়ে ভোলার চরাঞ্চলে এক শ্রেণীর শিকারী অতিথি পাখি শিকারে মেতে উঠেছে। নজরদারী না থাকায় ফাঁদ পেতে প্রতিদিন ভোলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন ডুবো চরে অসংখ্যা পাখি নিধন করা হচ্ছে। মৃত এসব পাখি মেঘনা নদীর তীরে ভেসে পরে রয়েছে। এতে করে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য এবং পাখি শিকারীদের দৌরাতœ বন্ধ করা না হলে দিন দিন অতিথি পাখির সংখ্যা কমে যাবে। স্থানীয় ও পাখি প্রেমী পর্যটকরা মনে করছে, ভোলার চরাঞ্চল গুলোতে পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলা সম্ভব না হলে শিগ্রই এ অঞ্চলটি পাখি শুন্য হয়ে পরার আশংকা রয়েছে।
শীত শুরুর সাথে সাথে প্রতিবছরে ন্যায় এ বছরও সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান দেশ থেকে পরিযাই অতিথি পাখির আগমন ঘটে উপকূলীয় দ্বীপ জেলা ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর দুরবর্তী বিভিন্ন চরাঞ্চলে। ভোলার মাঝের চর, বৈরাগীর চর,মদনপুর, মেদুয়া, নেয়ামতপুর চরে, তেঁতুলিয়ায় টেংরার চর,চরকিমারা,গঙ্গাপুর, চরফ্যাসনের তারুয়া, কুকরী-মুকরী, মনপুরা, ঢালচর,চর শাহাজালাল, চর পালিতাসহ অর্ধশত ছোট বড় চরে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির আবাস স্থলে পরিনত হয়। পাখিদের কলকাতনে মুখর হয়ে উঠে চরগুলো। পাখির কিচির মিচির শব্দ, নদীর ডুবো চরে ডুবসাতার খেলা অপরুপ দৃশ্য পযটক ও পাখি প্রেমীদের মন কারে। এমন দৃম্য দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসে পাখি ও প্রকৃতি প্রেমীরা। প্রতিবছর ভোলায় আসা এসব পরিযায়ী পাখির মধ্যে বিশ্বের মহাবিপন্ন পাখি "চামচঠুঁট বাটান" এবং সংকটাপন্ন পাখি "দেশি গাঙচষা"সহ থাকে অনেক বিপন্ন পাখি। তারা এই এলাকায় ছুটে আসে নির্দিষ্ট খাবারের সন্ধানে। ফলে শীত মৌসুমে এরা এখানেই অবস্থান করে । কিন্তু শীতের শেষ সময়ে ভোলায় এসব অতিথি পাখি বিষটোপসহ বিভিন্ন ফাঁদ পেতে নিধন করছে শিকারীরা। এতে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসম্য ও সৌন্দয্য হারাচ্ছে মনো-মুগ্ধকর চরগুলো। স্থানীয়রা বলছে, অবাদে পাখি নিধন রোধ না হলে ভোলায় পাখি আগমনের সংখ্যা কমে যাবে। সাধারন জেলে ও স্থানীয়রা জানায়,গত কয়েক দিন ধরে ভোলার দৌলতখানের মদনপুর, সাহেবের মোড়, নুরুদ্দিনের মোড় ও চৌকিঘাট এলাকার মেঘনা নদীর ডুবোচরে অসংখ্য অতিথি পাখি শিকারিরা বিভিন্ন ভাবে মেরে ফেলছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা, নদীতে বহু মৃত পাখি ভাসতে দেখেছে। পাখি শিকারি রা চাল ভেজে তাতে বিষ ঢেলে দিয়ে বিছানায়ে রাখে।
তা খেয়ে পাখি মরে নদীতে ভেসে যায়।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য পাখি গবেষক ও পর্যবেক্ষক জহরা মিলা বলেছেন, আমাদের একটা ট্রেন “আমরা বেড়াতে যাবো। পাখির মাংস দিয়ে বনভোজন করবো। পিকনিক করে খাব। ” এই জায়গাতে আমাদের সচেতনা বৃদ্ধির জন্য কাজ করা প্রয়োজন সরকারসহ সকলের। এই জায়গায় ফোকাস করা দরকার। তা হলে পাখির আবাস স্থল রক্ষা করা সম্ভব।
বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সদস্য ,পাখি পর্যবেক্ষক ও পর্বত আরোহী এম.এ মুহিত বলেছেন, বিশ্বের অনেক বিরল পাখি আমরা ভোলার চরাঞ্চলে দেখতে পাই। এই পাখি গুলো আমাদের এখাতে ৩/৪ মাস খাবার খেয়ে আবার বসন্তের শুরুতে চলে যেতে শুরু করে। তাই কয়েক মাস তাদের জন্য এই জায়গাটা খুব গুরুত্ব পূর্ন। তারা খাবার খেয়ে যদি ফিরে যেতে পারে তা হলে সেখানে গিয়ে বংশ বৃদ্ধি করবে। এখান থেকে কোন কারনে যদি মারা যায় তা হলে এই পাখির সংখ্যা কমতে থাকে। তাই আমাদের এই উপকূল অনেক গুরুত্ব পূর্ন।
ভোলা উপকূলীয় বন বিভাগ বন্য প্রার্থী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষন কর্মকর্তা মো: আমিনুল ইসলাম আজ সোমবার জানান, পরিযাই পাখি নিধন বন্ধে তারা টহল টিম গঠন করে শিকারীদের আইনের আওতায় এনে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ২৯টি মামলা দিয়ে জনকে ৩০ গ্রেফতার করা হয়েছে এবং সচেতনতা মূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।