অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


আগামীকাল ভোলা পাক হানাদার  মুক্ত দিবস


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৯ই ডিসেম্বর ২০২২ রাত ১০:২৫

remove_red_eye

২৭৮

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক:  আজ ১০ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার মুক্ত হয় দ্বীপজেলা ভোলা। দীর্ঘ ৯ মাসের সশস্ত্র সংগ্রাম ও যুদ্ধের পর পাক-হানাদার বাহিনী ও রাজাকারসহ তাদের  দোসররা ভোলার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ভোলা থেকে পালিয়ে যায়। ভোলাকে স্বাধীন করে ভোলার বীর সন্তানেরা। সকালে এ খবর পেয়ে হাজার হাজার মুক্তিকামী মানুষ ভোলার রাজপথে নেমে আসে। ‘জয় বাংলা’ ‘তোমার নেতা, আমার নেতা’ ‘শেখ মুজিব, শেখ মুজিব’ ¯েøাগানে ¯েøাগানে মুখোরিত করে চারপাশ। বিজয়ের উল্লাশে মেতে উঠে সবাই।  
ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাদী মাসুদসহ একাধিক বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, ১৯৭১-এ দেশ রক্ষায় সারাদেশের ন্যায় ভোলাতেও চলে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি। ভোলা সরকারি স্কুল মাঠ, টাউন স্কুল মাঠ ও ভোলা আলীয়া মাদ্রাসা মাঠে মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। পরে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয় ভোলার ঘুইংঘারহাট, দৌলতখান, বাংলাবাজার, বোরহানউদ্দিনের দেউলা ও চরফ্যাশন বাজারে। বিপুল সংখ্যক পাক সেনাকে হটিয়ে যুদ্ধে শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেন।  ভোলার খেয়াঘাট এলাকায় মুক্তিযোদ্ধারের ধরে এনে হত্যা করে তেঁতুলিয়া নদীতে ফেলে দেয়া হত।  মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষের রক্তে রঞ্জিত হয় তেঁতুলিয়ার পানি।

 বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: হাবিবুর রহমান জানান,স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে ভোলা শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস চত্বর দখল করে পাক-হানাদার বাহিনী ক্যাম্প বসায়। সেখান থেকে চালায় নানান পৈচাশিক কর্মকান্ড। মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী নিরীহ মানুষদের ধরে এনে হত্যা করা হয়। ওয়াপদা ভবনের পেছনে গণকবর দেয়া হয়। সেটি এখন বধ্যভূমি।  ১০ ডিসেম্বর রাতে ওয়াপদা ঘেরাও এর পরিকল্পনা নেয়া হয় । কিন্তু তারা পরাজয় জেনে আগেই সটকে পরে সেখান থেকে। পরে তাদের পালিয়ে যাবার সময় ভোলার খালে আমরা প্রতিহতের চেষ্টা করি। পাকসেনাদের পালাবার খবরে হাজার হাজার জনতা রাজপথে নেমে আসে বিজয় উল্লাসে। এক অন্যরকম আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় সেদিন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান আরো জানান, তৎকালিন ভোলা ওয়াপদা কলনীর ইঞ্জিনিয়র মো. অহিদ উদ্দিনের কাছ থেকে পাক বাহিনীর এসকল পৈচাশিক কর্মকান্ডেরে খবর পেয়ে সহযোগী রফিককে সাথে নিয়ে তিনি সেই নির্মমতার ছবি তুলেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পিছন দিকের হোগলা পাতার বাগানের ভিতর দিয়ে তাঁরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়ালের পাশে দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেখানে যায়। সহযোগী রফিকের হাতে ছিলো গ্রেনেড ও তাঁর হাতে ছিলো ক্যামেরা। ক্যামেরা দিয়ে সেখানকার লাশের ভয়াবহতার ছবি তুলে তিনি। পরবর্তীতে সেই ছবি ও নিউজ স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের ১৭ ফেব্রæয়ারী পূর্বদেশ পত্রিকার প্রথম পাতায় ও মরণপুরী ভোলার ওয়াপদা কলোনী শিরোনামে নিউজ ও ছবি ছাপা হয়।
ভোলা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার দোস্ত মাহামুদ জানান,১০ ডিসেম্বর ভোলা মুক্ত হলে ভোলা শহরের হাজার হাজার মানুষ উল্লাশে রাস্তায় নেমে আনন্দ করে।  এদিকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ১০ ডিসেম্বর ভোলা মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পক্ষ থেকে র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।





আরও...