অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় অতিথি পাখির সংক্রায়নে দেশি পাতিহাঁসের কালো ডিম


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ০৯:৫৮

remove_red_eye

৫৭৪

অমিতাভ অপু: ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে সাইবেরিয়াসহ শীত প্রধান দেশে  থেকে আসা  অতিথি পাখির ( অতিথি হাঁস) সঙ্গে দেশি পাতিহাঁসের  সংক্রায়ন ( ব্রিডিং) হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছেন প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের পাশাপাশি পাখি গবেষকরা। এমন ঘটনা ভোলায় প্রথম। শত বছর ধরে শীতকালে এ অঞ্চলে আসে লক্ষাধিক অতিথি পাখি। ৪ মাস অবস্থান করলেও বিগত বছরগুলোতে দেশি প্রজাতির হাঁস বা পাখির  সংক্রায়ন দেখা যায় নি।  তিন দিন আগে চরফ্যাশনের দাসকান্দি গ্রামে আব্দুল মতিনের স্ত্রী তাসলিমা বেগমের ঘরে পালা দেশী পাতিহাঁস কালো রংয়ের ডিম পাড়তে শুরু করলে বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে প্রাণিসম্পদ বিভাগকে। দুই সদস্যের একটি টিম নিবিঢ় পর্যবেক্ষণ করছেন ওই হাঁসটিকে। শনিবার চরফ্যাশনের কাউন্সিলর সামুসহ বিভিন্ন বাড়িতে হাঁসের কালো ডিম পাড়ারও  খবরও ভাইরাল হচ্ছে।
 শুক্রবার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ইন্দ্রজিত কুমার মন্ডল  জানান, ৬ / ৭ মাস বয়সী ১১টি পাতিহাঁসের বাচ্চা কিনে তা পালন করছেন তাসলিমা বেগম। ১১টি বাচ্চা হাঁস বড় হয়ে ওঠলে প্রথম একটি ডিম পারতে শুরু করে। সেটির ডিমই কালো রংয়োর । সাধারনত সাইবেরিয়ার  বালিয়া হাঁস কিছুটা কালো রংয়ের ডিম পাড়ে। অতিথি পাখি বা হাঁস এ ধরনের ডিম পাড়ে। বাংলাদেশে দেশি হাঁসের এ ধরনের ডিম পাড়ার কোন ইতিহাস নেই। ভোলা জেলার ১৫টি চরে শীতকালে পারিজা ( অতিথি) পাখির অবস্থানকালে কোন না কোনভাবে দেশি হাসের ব্রিডিং হয়েছে। ফলে ওই দেশি হাঁসের ডিম থেকে যে বাচ্চার জন্ম হয় তার ডিম এমনটা হতে পারে। বিষয়টি পর্যবেক্ষণ ও গবেষনা করে দেখা হচ্ছে। তাসলিমা বেগমের হাঁসের ৭ দিনের ডিম নিয়ে গবেষনাগারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক ডাঃ হাদির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়। গবেষনার জন্য দুটি ডিম পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।  শুক্রবার প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে ওই দফতরের সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডাঃ আব্দুল আহাদ ও উপসহকারী প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান আব্দুল মতিনের বাড়ি যান। ওই দুই কর্মকর্তা পাতিহাঁসটির পর্যবেক্ষণ ও স্বাস্থ্য রক্ষার দায়িত্বে রয়েছেন। এদিকে কালো ডিম দেখতে মানুষের ভিড়ে হাঁসটি ভীত হয়ে পড়েছে। অনেকে হাঁসটি ধরে টানাটানি করতেও দেখা যায়। এমন পরিস্থিতিতে হাঁসটির ডিম পারায় ব্যাঘাত ঘটতে  পারে বলেও মনে করেন জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। পাখি গবেষক এভারেষ্ট বিজয়ী এম.এ মুহিত ও পাখি গবেষক মোঃ ফয়সাল  জানান, প্রতিবছর ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চলে পাখি শুমারি করা হয়। এ সময় বিশ্বের বিলুপ্ত হচ্ছে এমন পাখিরও অস্তিত্ব  ভোলার চরাঞ্চলে দেখা যায়। এমন কি সর্বাধিক অতিথি পাখি ভোলার চরাঞ্চলে আসে। ওই সময় এই সব পাখির নন ব্রিডিং সিজন থাকে। দেশি পাখি বা হাঁসের প্রজনন ঘটার বিষয়টি বিরল। তবে মার্চ ও এপ্রিল মাস পর্যন্ত যে সব পাখি থাকে, তাদের মধ্যে কিছু কিছু পাখির প্রজনন ঘটতে পাওে বলেও ধারনা করেন ওই পাখি গবেষকরা।  ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের  গবেষনা শেষে সঠিক তথ্য জানা যাবে বলেও মনে করেন এরা। স্থানীয় কলেজ শিক্ষক আবু ছিদ্দিক জানান হাঁসের ডিম সাধারনত সাদা হয়ে থাকে। হাঁস কালো ডিম পাড়ে এমন ঘটনা এই প্রথম। ভোলা চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগর ইউনিয়নে দাসকান্দি গ্রামের সৌদি প্রবাসী আব্দুল মতিনের স্ত্রী তাসলিমা বেগম ১১টি দেশি হাস পালছেন। তার মধ্যে একটি হাস কালো রংয়ের ডিম পাড়তে শুরু করেছে। অস্বাভাবিক এমন ঘটনা এলাকায় আলোরণ সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে দেখার জন্য অনেকেই ছুটে যান। তিনিও বিষয়টি গবেষনা করে নতুন তথ্য উন্মোচনের দাবি জানান।





আরও...