অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


চরফ্যাশনে এবার দেশী হাঁসের ধূসর রংয়ের ডিমের সন্ধান


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ০৯:৪৯

remove_red_eye

৫০৩

হাসিব রহমান: ভোলার চরফ্যাসন উপজেলায় পাতি হাঁসের কালো ডিম পাড়ার ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার দেশী হাসের ধূসর রংয়ের ডিম পাড়ার ঘটনা ঘটেছে। গত ৪ দিনে ৪ বাড়িতে কালো ও ধুসর রংয়ের দেশী হাসের ডিম পাড়ারার ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার পর্যবেক্ষণে শনিবার আবারও নতুন ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেছে ওই দপ্তরের কর্মকর্তারা। জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা  ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল বলছে, কোন একটা বীজের সাথে ক্রস হয়ে এধরনের ডিম পাড়ার ঘটনা ঘটছে। এ ধরনের ডিম পাড়ার ঘটনা এই প্রথম। তবে আমেরিকার বায়ো ঘা নামে একটি জাতের হাঁসের কালো ডিম পাড়ে। কিন্তু ওই জাতের হাসঁ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে আমদানি করেনা। তাই অন্য কোন ওয়াইল বার্ড দিয়ে প্রজনন হয়েেেছ কি না তার রহস্য উৎঘাটনে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে আমেরিকার বায়ো গা বা সাইবেরীয়ার পাখির সাথে ক্রস হয়ে নতুন একটা জাতের সৃষ্টি হতে পারে।  এদিকে উপকূলীয় এলাকায় জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রভাবের কারনে বা কোন  রোগের লক্ষণ নাকি অন্য প্রজাতির পাখির ক্রসের কারনে এমন ঘটনা ঘটছে তা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে।


স্থানীয়রা জানান, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডে দাসকান্দি এলাকায় আবদুল মান্নান রাঢ়ী বাড়ীর সৌদি প্রবাসী আব্দুল মতিনের স্ত্রী তাসলিমা বেগম ঘরোয়াভাবে ১১টি পাতিহাঁস লালন পালন করে। এর মধ্যে একটি হাঁস ৯ মাস বয়সী  ও  । বাকি হাঁসগুলো ৬/৭ মাসের। গত বুধবার সকালে তার হাঁসের খোপে (ঘরে) বড় হাঁসটি কালো ডিম দেয়। ডিমের রং গাঢ় কালো দেখে তাসলিমা মনে করেন অন্যকোন প্রজাতির ডিম হতে পারে। প্রথমে তিনি ভয় পান। এর পর বাড়ির অন্যদের দেখালে এঘটনা এলাকায় দ্রæত ছড়িয়ে পড়ে। পাতি হাঁসের কালো ডিম দেখতে ওই বাড়িতে লোকজন গিয়ে ভীড় জমায়। প্রবাসী আব্দুল মতিন জানান,  বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিন আরো একটি ডিম পেড়েছে ওই হাঁসটি। তবে এর পর আর কোন ডিম পারেনি ওই হাঁসিটি।  স্থানীয়রা বলছে, পাতিহাঁসের কালো ডিম পাড়ার ঘটনা এই প্রথম।
এদিকে শনিবার চরফ্যাশন পৌর এলাকার ৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতারুল আলম সামু এর বাড়ীতে দেশী পাতিহাঁসের ধূসর রং এর ডিম পাড়ার খবর পাওয়া গেছে। সামু জানান, গত ২ দিন ধরে আমাদের বাড়িতে তার বড় ভাইয়ে স্ত্রীর একটি হাঁস কালো ধূসর রংয়ের ২টি ডিম পেড়েছে।  এর আগে কয়েকটি  এমন রংয়ের ডিম পেড়েছে।
এ অস্বাভাবিক ডিম খেলে স্বাস্থ্য ঝুকি কি-না এ নিয়ে আমরা খুবই চিন্তিত।  হাঁসের মালিক জুলেখা আক্তার বলেন, আমি ৩ টি হাঁস লালন পালন করে আসছি। সব কয়টির বয়স ৯ মাস থেকে এক বছরের হবে। শুক্র ও শনিবার দুইটি ডিম দিয়েছে, সেগুলো স্বাভাবিক ডিমের মতো সাদা নয়, কালো ধূসর রংয়ের।  চরফ্যাশন উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিসের উপ-সহকারি প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা শংকর কৃষ্ণ দাস বলেন, গণমাধ্যম কর্মীদের কাছ থেকে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে সত্যতা পেয়েছি। তবে দুই ঘটনা আশ্চর্য জনক মনে হচ্ছে কারন এ ধরনের ঘটনা এর আগে বাংলাদেশে ঘটেনি। এ ডিম গুলো পুরোপুরি কালো না হলেও ধূসর কালো বর্ণের। বিষয়টি প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।

জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা  ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল  আরো জানান, ধারনা করা হচ্ছে নতুন একটা জাতের সৃষ্টি হতে পারে। গত ৩ দিনের ৪ জনের বাড়িতে কালো ও ধূসর রংয়ের ডিম পাড়ার খবর পাওয়া গেছে। আরো কোন বাড়িতে এধরনের হাসের ডিম পাড়ার খবর পাওয়া যায় কিনা দেখা হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষনা কেন্দ্রে এসব ডিমের ছবি পাঠানো হয়েছে।  তারা বলছে, একমাত্র আমেরিকার নিউয়ার্কে বায়ো গা জাত আছে। এই জাতের হাসঁ কেউ  বিদেশ থেকে প্রাইভেট আমদানি করেছে কিনা  তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে এধরনের হাঁস পাওয়া গেলে গবেষনাগারে পাঠাবো। কালো রংয়ের হাঁেসের ডিম পরীক্ষার জন্য গবেষনা কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য হাসেঁর মালিকের কাছে চাওয়া হলেও তারা দেয়নি। যে কারনে তা পরীক্ষার জন্য পাঠানো সম্ভব হয়নি বলেও জানান তিনি। ভোলায় যে সব হাঁেসের খামার রয়েছে,তাতে সাদা ও নীল রংয়ের ডিম পাওয়া যায়।





আরও...