অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় গ্রীষ্মকালীন শাক সবজির বাম্পার ফলন


হাসনাইন আহমেদ মুন্না

প্রকাশিত: ৭ই সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ১০:০৭

remove_red_eye

৪৩৩

হাসনাইন আহমেদ মুন্নাঃ চলতি মৌসুমে জেলার উপজেলায় গ্রীস্মকালীন শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। হাজার হেক্টর জমিতে গ্রীস্মকালীন শাক-সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জন হয়েছে হাজার ৪৮ হেক্টর জমি। যা টার্গেটের চাইতে প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমি বেশি। আর হেক্টরপ্রতি সবজির উৎপাদন হয়েছে ১৮ মেট্রিক টন করে। নির্ধারিত জমি থেকে সবজি উৎপাদন হয়েছে লাখ ২১ হাজার ৬৪ মেট্রিক টন। সবজির ব্যাপক আবাদ উৎপাদনে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে।

কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, মার্চের মাঝামাঝি সময়ে এখানে গ্রীস্মকালীন শাক-সবজির আবাদ শুরু হয়ে চলে জুলাই মাস পর্যন্ত। ইতোমধ্যে কৃষকরা কয়েক দফায় সবজি বিক্রি করেছেন। বাজার দর ভালো থাকায় লাভবান হয়েছে কৃষক। তারা জানান, এসব সবজির মধ্যে ঢেরস, করোল্লা, কাকরোল, দুন্দুল, চিচি্গংা, রেখা, ডাটা শাক, পুঁই শাক, কলমি শাক, পাটের শাক, মিষ্টি কুমোর, লাউ, কচু, শষা, বেগুন, পেঁপে, চাল কুমোর প্রভৃতি রয়েছে। বর্তমানে মাঠে গ্রীস্মকালীন সবজি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। কিছুদিন পড়েই শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হবে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী উদ্বিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো: হুমায়ুন কবির জানান, গ্রীস্মকালীন শাক-সবজি চাষেঅনাবাদি পতিত জমিতে পারিবারিক পুষ্টি বাগানপ্রকল্পের আওতায় ২৩ ৪৬ টি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। প্রদর্শনীর প্রত্যেককে ১৯ করে টাকা, বরবটি, করল্লা, ঢেরস, পুঁই শাকসহ ৮টি সবজির বীজ ৪০ কেজি করে জৈব সার বিতরণ করা হয়েছে। ৩০ জন কৃষককে মোটিভ্যাশনাল ট্যুরে নিয়ে সবজি চাষে বিশেষ উদ্বোদ্ধ করা হয়েছে।

সদর উপজেলার দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের বালিয়া গ্রামের কৃষক কামরুল ইসলাম, আব্দুল খালেক জাবেদ আলী বলেন, বছর অতিবৃষ্টি কম হওয়াতে শাক-সবজির ব্যাপক ফলন হয়েছে। পোকা-মাকরের আক্রমণও তেমন ছিলোনা। মাঠ পর্যায়ের কৃষি অফিসাররা আমাদের নিয়মিত পরামর্শ সেবা দিয়ে গেছেন। একই ইউনিয়নের শান্তিহাট এলাকার হাতেম রহিম বলেন, অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে অনেক সবজি পচে যায়। এবার তেমনটা কম হয়েছে। অনান্য সময়ের চাইতে এবছর গ্রীস্মকালীন সবজির দামও ভালো ছিলো।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো: হাসান ওয়ারেসুল কবির বলেন, গ্রীস্মকালীন শাক-সবজি চাষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী এক ইঞ্চিও জমি যাতে অনাবাদী না থাকে সে ব্যাপারে আমরা কৃষকদের সর্বোচ্চ উৎসাহীত করেছি সবজি চাষে। কৃষকরাও কঠোর পরিশ্রম করেছে। এছাড়া বড় রনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ মাঠে রোগ বালাইর আক্রমন ছিলানা। বৃষ্টিপাত হয়েছে পরিমীত। তাই গ্রীস্মকালীন শাক-সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। আমাদের প্রশিক্ষিত কৃষকের সংখ্যাও বাড়ছে। তাই আবাদ ফলন দুটোই ব্যাপক হয়েছে।

হাসান ওয়ারেসুল কবির আরো বলেন, সবজি চাষে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্রায় আড়াই হাজার কৃষক কাররিগরী প্রশিক্ষণ পেয়েছে ভোলায়। উন্নত জাত লাগসই প্রযুক্তির সাথে তাদের পিরিচিকরণ করা হচ্ছে। একইসাথে ক্ষতিকর পোকা-মাকর নিয়ন্ত্রণে প্রায় ২৫ ভাগ সবজি ক্ষেত ফেরোমন ফাঁদের আওতায় এসেছে। সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগসহ কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ সেবা প্রদান করা হয়েছে। এখানে উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা-বরিশাল হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় বলে জানান জেলা কৃষি বিভাগের সর্বোচ্চ এই কর্মকর্তা। এছাড়া কৃষকদের নিরলশ পরিশ্রমে এবছর আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।





আরও...