অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৬ই পৌষ ১৪৩২


বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সভায় ঢাকার আ’লীগ নেতা কাদের খানকে ভোলায় অবাঞ্চিত ঘোষনা


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২২ রাত ০৯:৪৬

remove_red_eye

৩৭৫

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদকঃ ঢাকা উত্তর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি টাইল্স ব্যবসায়ী কাদের খানের মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দেয়ার ঘটনায় ভোলা সদর উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সময় কাদের খানকে ভোলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার বিচারের দাবী জানানো হয়। মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় ভোলা সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মিলনায়তনে এ প্রতিবাদ সভায় সভার সভাপতি সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অহিদুর রহমান অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট রাতে দেশী, বিদেশী ও আন্তর্জাতিক ষরযন্ত্রকারী ঘাতক চক্র জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকে স্ব-পরিবারে নির্মম ভাবে হত্যা করে। ওই রাতে ভোলার কৃতি সন্তান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক তোফায়েল আহমেদ ঢাকায় তার নিজ বাসায় অবস্থান করেন। এক দল বিপদ গামী সেনা সদস্যা দ্বারা বঙ্গবন্দু বাসা আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ পেয়ে তোফায়েল আহমেদ তাৎক্ষনিক বিভিন্ন জায়গায় ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। পরবর্তীতে ঘাতক চক্র তার বাসার টেলিফোন লাইন বিচ্ছিন্ন করে দেন। বিপদগামী সেনা সদস্যরা তোফায়েল আহমেদকে নজরবন্দি করে রাখে। ১৫ আগস্ট রাতে তৎকালীন ভোলা আওয়ামীলীগের (বাকশাল) এর সেক্রেটারী জেনারেল সামছুদ্দিন মিয়া তোফায়েল আহমেদের বাসায় ছিলেন। ২১ দিন নজরবন্দী থাকার পর ঘাতক সেনা সদস্যরা তোফায়েল আহমেদকে গ্রেফতার করে চোখ বেঁধে নিয়া যায়। তারপর সামছুদ্দিন মিয়া ভোলায় চলে আসেন।
অথচ গত ৩০ আগস্ট ঢাকার উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর আওয়ামীলীগের আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর শাহাদাত বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি টাইলস ব্যবসায়ী কাদের খান নিলজ্জের মত মিথ্যা বক্তব্য দেন। তিনি বলেছেন, “১৫ই আগষ্ট সামছুদ্দিন মিয়া ঢাকার একটি হোটেলে ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে স্ব পরিবারে হত্যার সংবাদ পাওয়ার পর কাদের খান হোটেলে গিয়ে সামছুদ্দিন মিয়ার সাথে দেখা করেন। তখন সামছুদ্দিন মিয়া কাদের খানকে একটি লুঙ্গি ও একটি গামছা কিনে দেন। পরে সামছুদ্দিন মিয়া কাদের খানকে রিক্সা চালকের বেশে তোফায়েল আহমেদের বাড়ীতে পাঠান।” তার এই বক্তব্য স¤পূর্ণরূপে মিথ্যা ও বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রনোদিত।
ঐ বক্তব্যে কাদের খান আরো বলেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর আগমন উপলক্ষ্যে ১৯৭৫ সনের ১৫ই আগষ্ট এর আগের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত কাদের খান ছাত্রলীগের নেতাদের নিয়ে ছাত্রদের মধ্যে কয়েক হাজার ব্যাচ বিতরণ করেন। প্রকৃত সত্য হচ্ছে, কাদের খান কোন কালেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন না। ঢাকার ছাত্র রাজনীতিতে তার কোন প্রকার স¤পৃক্ততা ছিল না। ছাত্রদের মধ্যে ব্যাচ বিতরণের কাহিনী স¤পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।  ১৯৭৫ সালে আব্দুল কাদের (কাদের খান) ভোলা কলেজ থেকে বি.এ পরীক্ষার ফরম ফিলাপ করলেও পরীক্ষায় অংশ নেয় নি। তার রোল নম্বর ছিল- ৩৩৭৫ । তিনি বি.এ পাশ করেন নি। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন না।
বীর মুক্তিযোদ্ধা অহিদুর রহমান আরো বলেন, হঠাৎ করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রসঙ্গ টেনে এনে কাদের খানের মিথ্যাচার বক্তব্য রাখার খবর শুনে ভোলার সুশীল সমাজ সহ, আমরা মুক্তিযোদ্ধারা হতবাক হই। ভোলা জেলার সর্বস্তরের মানুষ তার মিথ্যাচার বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দলের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি পেতে কাদের খান এমন মিথ্যা তথ্য দিয়ে নিজের অবস্থান জাহির করেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সভায় কাদের খানের ওই বক্তব্য প্রত্যাহারের পাশাপাশি তাকে মহানগর আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতির পদ থেকে বাদ দেওয়ার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবী জানান।
এ সময় বক্তব্য রাখার পাশাশি নিন্দা প্রতিবাদ জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম হাবিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মন্নান মুজাহিদি,  বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুল আলম প্রমুখ।






আরও...