অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, মঙ্গলবার, ৩০শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় কবুতর বিক্রি করে নাজিম মাঝির মাসে আয় ৪০ হাজার


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৯শে জুন ২০২২ রাত ০৯:২৬

remove_red_eye

৩০৯



জুয়েল সাহা বিকাশ : বন্ধুর পরামর্শে প্রায় ৪ বছর আগে ১০ জোড়া দেশী কবুতর দিয়ে খামার শুরু করেন ভোলার নাজিম মাঝি (৪০) নামে এক জেলে। বর্তমানে তার খামারে রয়েছেন রেসার, মিলি, গিরিবাজ, রেছেকার, মাছিসহ প্রায় ৭০ থেকে ৮০ জোড়া কবুতর। আর প্রতি মাসে তিনি কবুতর বিক্রি করেন ৩০-৪০ হাজার টাকা। নাজিম মাঝি পেশায় একজন জেলে হলেও কবুতর খামার দিয়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করে বর্তমানে নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া প্রায় ছেড়ে দিয়েছেন। সারাদিন কবুতর খামারের সময় দি”েছন তিনি।
মোঃ নাজিম মাঝি ভোলা সদর উপজেলার ধনিয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সিলদার বাড়ির মোঃ আবুল সাত্তারের ছেলে।
নাজিম মাঝি জানান, আগে জেলে কাজ করে তিনি সংসার পরিচালনা করতেন। নদীতে যখন মাছ শিকারের উপর সরকারি নিষেধাজ্ঞা হতো তখন সংসার চালাতে হিমশিম খেতেন তিনি। প্রায় ৪ বছর আগে মাছ শিকারের নিষেধাজ্ঞার সময় তুলাতুলি মেঘনা নদীর র্তীরে বসে বসে সংসার পরিচালনা করার বিষয়ে চিন্তা করছিলেন। ওই সময় ইয়ামিন হাওলাদার নামে এক ব্যবসায়ী তার বন্ধু তার পাশে বসে চিন্তার কারণ জানতে চায়। তখন তিনি বন্ধুতে সব খুলে বলেন। তার ওই বন্ধু তাকে বলে বসে বসে চিন্তা না করে কবুতর খামার করো। কবুতর খামার করে অনেকে হাজার হাজার টাকা আয় করছে। তবে পরিশ্রম করতে হবে। বন্ধুর কাছে কবুতর খামারের কথা শুনে তিনি খামার করার পরামর্শ নেয়। এরপর ৩/৪ দিনের মধ্যে ১০ হাজার টাকা খরচ করে তার বসতঘরের সাথে কবুতর খামারের জন্য ঘর তৈরি করে। পরে ভোলার বিভিন্ন বাজার থেকে ১০ জোড়া দেশীয় কবুতর দিয়ে শুরু করেন খামারটি। ৬ মাসের মধ্যে তার খামার কবুতরে ভরে যায়। আর তখন থেকেই তিনি কবুতর বিক্রি শুরু করেন। প্রথম বছরই তিনি ৫০-৬০ হাজার টাকার কবুতর বিক্রি করেন। পরের বছর এক থেকে দেড় লাখ টাকা। এভাবেই বাড়তে থাকে তার কবুতর খামারের আয়। এরপর তিনি দেশী জাতের কবুতরের পাশাপাশি রেসার, মিলি ও গিরিবাজ, রেছেকার, মাছি কবুতর পালন শুরু করেন।
তিনি আরো জানান, বর্তমানে প্রতি মাসে কবুতরের খামারে কবুতরের খাবারের পিছনে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর প্রতি মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা কবুতর বিক্রি করেন। কবুতর বিক্রির টাকা দিয়ে তিনি একটি ট্রলারও ক্রয় করেছেন। বর্তমানে কবুতর খামার আয় ভালো হওয়ায় তিনি নিয়োমিত নদীতে জেলেদের সাথে মাছ শিকার করতে যান না। তার সঙ্গীদের তিনি নিয়োমিত নদীতে পাঠান আর তিনি মাঝে-মধ্যে যান। তবে কবুতরের খামারের তার স্ত্রী রাহিমা সহযোগীতার পেয়েছেন বলেই তিনি এত দ্রæত ভালো টাকা আয় করছেন বলেও জানান নাজিম মাঝি।
নাজিম মাঝির স্ত্রী রাহিমা বেগম জানান, সংসারের কাজের পাশাপাশি তিনি তার স্বামীকে কবুতরের খামারের সহযোগীতা করেছেন। তবে তার স্বামীর মনোযোগ দিয়ে খামার পরিচালনা করায় এখন ভালো আয় হ”েছ।
তিনি আরো জানান, তার স্বামী কবুতরের খামার দেওয়ার আগে মাছ ধরা বন্ধ থাকলে অনেক কষ্ট হতো খেতে পরতে। খামার দেওয়ার পর থেকে কোন কষ্ট নেই। বর্তমানে আমাদের সংসারের কোন অভাব নেই। অনেক ভালো আছি।
ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎ কুমার মন্ডল জানান, আমরা প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে নাজিমের মত অনেক কবুতর খামারীকে বিভিন্ন সময় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। পরে তারা আমাদের সাথে নিয়োমিত যোগাযোগ করে পরামর্শ নিয়ে বাণিজ্যকভাবে কবুতর খামার করে সফল হয়েছে।





আরও...