অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এখন দালালদের সিন্ডিকেটে!


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৬শে জুলাই ২০১৯ রাত ০৯:৪১

remove_red_eye

২৬৮৮

আমিনুল ইসলাম, চরফ্যাশন থেকে : চরফ্যাশন সরকারি হাসপাতালের ভেতরে-বাইরে দালালরা চষে বেড়াচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারসহ অসংখ্য ঔষধ বিক্রির দোকানের নিযুক্ত দালালদের একটি সক্রিয় সিন্ডিকেট চক্র রোগীদের সর্বশান্ত করার অভিযোগ রয়েছে। বিধি অনুযায়ী কোন সরকারী হাসপাতালের ২শ গজের মধ্যে বে-সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থাকতে পরবেনা। আইনের তোয়াক্কা না করে চরফ্যাশন সরকারী হাসপাতালের বাউন্ডারি ওয়াল ঘেষে ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে ২৭ টি প্রাইভেট হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। হাসপাতাল অভ্যন্তরে কোল ঘেষে গড়ে ওঠা ঔষধের দোকান মালিকদের রিক্রুটকৃত দালালদের দিয়ে হাসপাতালের রোগীদের কৌশলে ফুসলিয়ে নিয়ে যায় ঔষধের দোকানে। ফলে রোগী ও তাদের স্বজনদের চড়া দামে ঔষধ কিনতে হয়। বে-সরকারী হাসপাতালের দালালরা সরকারী হাসপাতালের রোগী নিয়ে যায় তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে।
সরেজমিনে অনুসন্ধান করে দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নিয়োগ প্রাপ্ত দালালরা নির্দিষ্ট সময়ে কেউ থাকেন ডাক্তারের রুমে, কেউ থাকেন ঘোরাফেরার মধ্যে আবার অন্যজন ব্যস্ত থাকেন রোগীদের নিয়ে নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নিরীক্ষা বা ঐষধ বিক্রির কাছে। এই দালাল চক্রের মধ্যে নারীসহ প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রোগীকে হয়রানী মূলক কাজে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সরকারী হাসপাতালের জনৈক ডাক্তার বলেন,রোগ মানুষের স্বাভাবিক জীবনকে মারাত্মক ভাবে ব্যহত, দুর্দশাগ্রস্ত এবং অসহায় করে তোলে। সরকারি হাসপাতালে আসা রোগাক্রান্ত মানুষকে তাদের মৌলিক অধিকার সু-চিকিৎসা সঠিক ভাবে নিশ্চিত করা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। কিন্তু দেখা যায় হাসপাতালে জেনারেল সার্জারী, অর্থোপেডিক, গাইনী, মেজর ও মাইনর অপারেশন ও প্যাথলজি পরিক্ষা, এক্স-রে, ইসিজি, যক্ষা ও কুষ্ঠসহ প্রায় সকল পরিক্ষা এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও কর্তব্যরত ডাক্তার অসহায় রোগীদের অপ্রয়োজনীয় পরিক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে দালালদের হাতে তুলে দেন।

আছলামপুর ইউনিয়ন থেকে চিকিৎসা নিতে আসা সোলায়মান বলেন, হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার সাহেবের কক্ষে থাকা কালীন একজন দালাল ধরিয়ে দিয়ে বলে ওনার সাথে গিয়ে অমুক ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে গিয়ে পরীক্ষাগুলো করে আসুন। ডাক্তার কক্ষ থেকে বাহির হয়ে আসলেই ৩/৪ জন দালাল ডাক্তারে দেয়া কাগজটি নিয়ে টানাটানি শুরু করে। রক্ত ও ইউরিনসহ ৪টি পরীক্ষার জন্য ডায়াগনষ্টিক কর্তৃপক্ষ ২ হাজার ৮শ টাকা নিয়েছে।
চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ সিরাজ উদ্দিন বলেন, দালাল চক্রের খপ্পরে পরে অনেক রোগী ও তাদের স্বজনরা সর্বশান্ত হয়েছে। দালালদের পুরোপুরি হাসপাতাল থেকে সরানো যায়নি। তারা সমাজের বিভিন্ন স্তরের প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় অপ্রতিরোধ্যভাবে এই পেশায় জড়িত। এ ব্যাপারে অনেক ভুক্তভোগীরা আমার কাছে অভিযোগ করেছে কিন্তু আমি হাসপাতালকে দালাল মুক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।