অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


বাংলাদেশে লবনাক্ততার প্রধান কারণ ফারাক্কাবাঁধ


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২১শে মার্চ ২০২২ রাত ১১:৪০

remove_red_eye

৪০০

বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের জন্য প্রথম ও প্রধান সমস্যা ফারাক্কা বাঁধ, দ্বিতীয় সমস্যা পর্যাপ্ত গবেষণার অভাব, একইসাথে ভূমি নীতিমালা না মেনে এবং নদী-খাল দখল করে যত্রতত্র স্থাপনা নির্মানও জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ বলে মতামত প্রকাশ করেছেন বক্তারা।২১ মার্চ সোমবার বেলা ১১টায় বরিশাল নগরীর বিডিএস হলরুমে আয়োজিত ‘জলবায়ু পরিবর্তন, গ্রীন ক্লাইমেট ফাÐ ও পিকেএসএফ’র পরিবেশ কার্যক্রম’ সম্পর্কে অবহিতকরণ সভায় বক্তারা এসব বিষয়ের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরে অধিক গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করেন ।


পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আয়োজনে এবং গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থার (জিজেইউএস) সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের কোস্টাল স্ট্যাডিজ অ্যান্ড ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাফিজ আশরাফুল হক।
শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গ্রামীণ জনউন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জাকির  হোসেন মহিন, গ্রীন ক্লাইমেট ফাÐ এবং এর কার্যপরিধি নিয়ে তথ্যভিত্তিক আলোচনা করেন পিকেএসএফ উর্ধ্বতন কর্মকতা মোঃ নুরুজ্জামান এবং পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন আবু নাসের।


প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বরিশাল স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শহীদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ডীন প্রফেসর ড. আহমেদ পারভেজ।  প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, আমরা অনেকেই ভূমি ব্যবহার নীতিমালা মানছি না, গত বছর বরিশালসহ অনেক উপকূলীয় এলাকায় হঠাৎ ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যায়, এর প্রধান কারণ খাল বিল পুকুরের পানিতে লবনাক্ততার পরিমান অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়া। তাছাড়া বন্যার চেয়ে ইদানিং বজ্রাপাতে বেশি মানুষ মারা যাওয়ার ঘটনাকেও জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ বলে মনে করে তিনি।


গেস্ট অব অনার প্রফেসর ড আহমেদ পারভেজ বলেন, মানুষ সৃষ্ট গ্রীন হাউজ ইফেক্টের কারণে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। পরিবেশ ও বায়ুদূষণের ফলে ডেঙ্গু চিকনগুনিয়া ইত্যাদি রোগের প্রাদুর্ভাব হচ্ছে। মানুষের গড় আয়ু ও উচ্চতা ক্রমশ হ্রাস পাবে বলে জানান তিনি।উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আজিজুল হাকিম, তিনি ক্লাইমেট পরিবর্তনের ডাটা বা পরিসংখ্যান নিয়ে সন্দেহ পোষণ করেন। কি হবে তা নয়, কি কি হয়েছে তা পরিষ্কার করতে হবে বলে দাবী  তোলেন।


পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. শিব শংকর সাহা ও বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমুস সালেহীন প্রশ্ন তোলেন- গত বিশ বছরে সমুদ্রের পানি ও উপকূলীয় এলাকার জমিতে লবণাক্ততার পরিমান কতটুকু বেড়েছে? আদৌও বেড়েছে কিনা, বাড়লে কেন বাড়লো তা গবেষণা করা জরুরি বলে মনে করেন তারা।উত্তরে সভাপতি ও সঞ্চালক ড. হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, বাংলাদেশের লবণাক্ততার প্রথম এবং প্রধান কারণ ফারাক্কা বাঁধ। এই বাঁধ ভারতের ইচ্ছেমতো নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বাংলাদেশের নদনদী ও বিভিন্ন শাখা চ্যানেল শুকিয়ে ধূ ধূ বালুচরে রূপ নিচ্ছে। এর দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতিকর প্রভাবে বাংলাদেশের পরিবেশে বিপর্যয় নেমে আসছে।   


অনুষ্ঠানে আরো আলোচনা করেন পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. অসিত কুমার পাল, প্রফেসর ড. মহসিন হোসেন খান, বিএম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ফজলুল হক, ড. নাসিরউদ্দিন আহমেদ, পিকে এস এফ এর মহা পরিচালক এ কে এম নুরুজ্জামান খান, সহাকারি মহা ব্যবস্থাপক মো: নাসির উদ্দিন, উন্নয়ন কর্মী জাহানারা বেগম স্বপ্না, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা মরিয়ম বেগমসহ আরো অনেকে।বক্তারা পরিবেশের জন্য হুমকি হিসেবে ইটভাটায় অবাধে কাঠ পোড়ানো, অবৈধ পলিথিনের ব্যবহার, খাল ও জলাশয় ধ্বংস করা সহ বিষয়ে আলোকপাত করেন।





আরও...