অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


চরফ্যাসনে মিষ্টি আলুর লতা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা


এ আর সোহেব চৌধুরী

প্রকাশিত: ১৬ই জানুয়ারী ২০২২ রাত ১১:২৪

remove_red_eye

৫৪২




এআর সোহেব চৌধুরী, চরফ্যাশন : দেশী লাল মিষ্টি আলু চাষে আলু লতা বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে চাষিরা। চরফ্যাশন উপজেলার বিভিন্ন বাজারে হাটের দিন দেশি লাল মিষ্টি আলুর লতা বিক্রয় করতে দেখা যায়। পুকুর ডোবা বা জলাশয়ের পাড়ে অথবা বাড়ির পরিত্যাক্ত জমিতে মিষ্টি আলুর কন্দাল রোপন করে লতা সংগ্রহ করে মুঠি হিসেবে বাজারে চাষিদের কাছে বিক্রয় করা হচ্ছে।
স্থানীয় সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে ৫-৭ ইঞ্চি মিষ্টি আলুর কাটিং লতা লাইন বাই লাইন রোপন করা হয়। উপকূলীয় অঞ্চলে ফাল্গুন থেকে চৈত্র বৈশাখে পরিপক্ক হওয়া এ মিষ্টি আলু মাটির নিচ থেকে তোলা হয়। বাজারে এ আলুর প্রতি কেজি ২০-২৫ বা ৩০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করেন চাষিরা। উপজেলার শশিভূষণ,দুলারহাট ও চরফ্যাশন থানারোডসহ বিভিন্ন হাটে প্রতিবছর এ দিনে মিষ্টি আলুর লতা বা কাটিং চারা বিক্রির হাট বসে।
আমিনাবাদ ইউনিয়নের আলু লতা বিক্রেতা শাহেদ আলি মিয়া বলেন,বর্ষার কারণে কম জমিতে বিক্রির জন্য আলুর লতা আবাদ করেছি। তিনি আরো বলেন, প্রতিবছর বাড়ির পুকুর পারে এ লতা চাষ করে বাজারে বিক্রি করি। আমাদের পেশা হালচাষ করা। প্রতি মৌসুমে ১০-১৫হাজার টাকার এ লতা বিক্রি করি। ২০টি আলু লতা খর কুটা দিয়ে বেঁধে মুঠি তৈরী করা হয়। প্রতি হাটে রিকশায় করে প্রায় ২০০ মুঠি আলু লতা বাজারে নিয়ে আসি। এক মুঠি লতা ৩০টাকা মূল্যে বিক্রি করা হয়। রিকশা ভাড়া ও বাজারের খাজনা (ইজারার চাঁদা) দিয়েও ভালো লাভ হয়। আবু-বকরপুর ইউনিয়নের লতা বিক্রেতা সবুজ মিয়া বলেন, ৮-ইঞ্চি করে এ লতা কেটে ১৬শতাংশ জমিতে প্রায় ৫৫মুঠি লতা বা কাটিং রোপন করা যায়। মাঝে মধ্যে ইঁদুর এ লতা কেটে ক্ষতি করে। ক্রেতা কামাল মিয়া বলেন, প্রায় ৮০ শতাংশ জমিতে আলু চাষাবাদ করি। মাটিতে আলু হলে হলি পোকা ও কেঁচোর কারণে অনেক সময় আলু নষ্ট হয়ে যায়। তবে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমাদের চাষাবাদে কোনোরকম পরামর্শ বা সহায়তা করা হয়না। রসুলপুর ইউনিয়নের ইউসুফ মাঝি জানান,দেড় একর জমিতে তিনি মিষ্টি আলু আবাদ করছেন। দেড় একর জমিতে তিনি প্রায় ৩০০মন আলুর ফলন আশা করছেন। চারাঞ্চলের একাধীক চাষি বলেন,এ আলু আবাদে তেমন কষ্ট হয়না। আলু রোপন করে সার ছিটিয়ে দেয়া হয়। আলু পরিণত হলে তা বাজারের পাইকারদের কাছে দ্রæত বিক্রি করতে হয়, দেরি হলে মিষ্টি আলু পোকার কারণে নষ্ট হয়ে যায়। চাষিদের দাবি এ অঞ্চলে গোল আলু ও মিষ্টি আলুসহ সাক সবজি সংরক্ষণে একটি হিমাগারের ব্যবস্থা করা হলে বেশি লাভের পাশাপাশি পচন রোধ করা সম্ভব হত। গত মৌসুমে চরফ্যাশনে ৬১৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু আবাদ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ২০টন মিষ্ট আলু উৎপাদন হয়েছে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে ৬১৫ হেক্টর জমিতেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন উপজেলা কৃষি উপ-সহকারী ঠাকুর কৃষ্ণ।