অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় ইউপি নির্বাচনে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৫ই জানুয়ারী ২০২২ রাত ১০:৫৬

remove_red_eye

৪১৭

ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ককটেল বিস্ফোরন আহত-৩০

বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক   : ভোলা সদর উপজেলার ১২ ইউনিয়নের বড় ধরনের সহিংস ঘটনা ছাড়াই উৎসব মুখর পরিবেশে বুধবার ইউপি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে বিক্ষিপ্ত সংর্ঘষ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ ককটেল বিস্ফোরনের ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রে হামলা মারধরে আহত হয়েছে অন্তত ৩০ জন। এদের মধ্যে গুরুতর ১০জন সদর হাসাপাতালে ভর্তি করা হয়। নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্গন ও সহিংসতার ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে ২ মেম্বার প্রার্থী ।   
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোলা সদরের বাপ্তা ইউনিয়নের চৌমুহনী মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের সামনে বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার নিয়ে কথাকাটাকাটি ও মেম্বার প্রার্থী হুমায়ুন কবিরের পিতাকে প্রতিপক্ষ শাহিন মালের সর্মথকরা মারধর করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে চৌমুহনী বাজার এলাকায় দু'পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ককটেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এসময় উত্তেজিত কর্মীরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে ধাওয়া করে। এসব বেশ কয়েকদিন কে পিটিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। এসময় কিছু সময়ের জন্য ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকলেও পরে স্বাভাবিক হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রায়হানুল ইসলাম জানান ,কেন্দ্রের বাইরে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ওই ২ মেম্বার প্রার্থীকে আটক করা হয়েছে ।
 ভোলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নে আবু তাহের মেম্বার ও লোকমান মেম্বার এর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দুপুর ২ টার দিকে সংঘর্ষ ককটেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে । ইলিশা ইউনিয়ন এর ৫ নং কেন্দ্রের বাইরে নিজামউদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া চলে। এসময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় মানুষের মধ্যে আতংক দেখা দেয়। পরে পুলিশ,কোস্টগার্ড ও র‌্যাব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। একই সময়ে ওই ইউনিয়নের গাজিরপুর মাধ্যমকি বিদ্যালয় কেন্দ্রে ২ মেম্বার প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধলে পুলিশ টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে সারাদিন গ্রæপে গ্রæপে সশস্ত্র মহড়া দেয়ায় এলাকাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করে।
অপর দিকে ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের নং ওয়ার্ডের মুরাদছবুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে  বেলা ১১ টার দিকে রফিক ও মালেক মেম্বার প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় তিন জন আহত হয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে রাজাপুর ইউনিয়নের শান্তিরহাট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার প্রতীকের সমর্থকরা জাল ভোট দেয়ার চেস্টা করলে প্রতিদ্ব›িদ্ব প্রার্থী মিঠু চৌধুরীর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। বিকালে এ কেন্দ্রে ২ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে ১০ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ওই ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ও ৫নং ওয়ার্ড কেন্দ্রে সতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল হক মিঠু চৌধুরীর এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। ৩নং ওয়ার্ডের পথে পথে সমর্থকরা সাধারণ ভোটাররে প্রবেশ বাঁধা দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। ভোটের শেষ সময়ে বাপ্তা ইউনিয়নে ৮নং ওয়ার্ড কেন্দ্রে মো. শাজাহান  ও মো. কামাল নামের দুই মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী আটক করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৮নং কেন্দ্রে সমর্থকের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এদিকে   সবগুলো কেন্দ্রেই ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে ছিল।
অন্যদিকে মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ভোলা সদর উপজেলা রাজাপুর ৩নং ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য ওহাব আলী ও সালামের সমর্থকদের মধ্যে বোমাবাজি ভাংচুর লুটপাট ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। অগ্নিসংযোগে ওহাব আলীর দুই সমর্থকের বাড়িঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পরে রাত ২টার দিকে ফায়ারসার্ভিসের ২টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।