বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষ হামলা ককটেল বিস্ফোরণ ভাংচুর আহত ১০
লার কন্ঠ প্রতিবেদক : চতুর্থ ধাপের ইউপি নির্বাচনে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৭ ইউনিয়নে রবিবার আনন্দ আর উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও তার আগেই কনকনে শীত উপেক্ষা করে নারী ও পুরুষ ভোটাররা ভোর থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। ভোটারদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিতে পারায় ভোটাররা স্বস্তি প্রকাশ করেন এবং প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদেরকে ধন্যবাদ জানান।
অপরদিকে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাসান নগর, পক্ষিয়া ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন হামলা মারধর, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ককটেল বিস্ফোরণ, কেন্দ্র দখলের চেষ্টা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন অভিযোগে ৭ জনকে আটক করে ও ভ্রাম্যমান আদালত একজনকে জরিমানা করেছে। এদিকে ভোলা জেলা প্রশাসক মোঃ তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বোরহানউদ্দিনের বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর পৌনে ৩ টায় হাসান নগর ইউনিয়নের মির্জাকালু হাইস্কুল কেন্দ্রে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে, দাড়ালো অস্ত্রসহ কেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালায়। অভিযোগ রয়েছে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা এ হামলা চালায়। এসময় আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর সদস্যরা কেন্দ্রে গেইটগুলো বন্ধ করে দেয় এবং ধাওয়া করে। এসময় এক পর্যায়ে নৌকা ও সতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সাথে ও পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। ওই সময়ে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ এর অভিযোগ পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ৭/৮ জন আহত হয়। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার সময় ভোট গ্রহণ সাময়িক বন্ধ ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ভোট গ্রহণ শুরু হয়। পরে পুলিশ কোস্টগার্ড বিজিবি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় একজনকে আটক করা হয়। অপরদিকে পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৭ং ওয়ার্ডের পক্ষিয়া দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্র এলাকায় রবিবার দুপুরে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আলাউদ্দিন সর্দারের কর্মী-সমর্থকদের উপর আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী নাগর হাওলাদারের কর্মী-সমর্থকরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী মো. রাহান ও বাড়ুলসহ ২ জনকে পিটিয়ে আহত করা হয়। তাদেরকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বোরহানউদ্দিন হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। তবে আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী নাগর হাওলাদার পক্ষ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অন্যদিকে দেউলা ইউনিয়নের নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা সকালে লাঠিসোটা নিয়ে এলাকায় মহড়া দিয়ে প্রতিপক্ষ স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আনারস প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্রে আসতে বাঁধা দেয় এবং মারধর করে। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক বশির তালুকদারের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তারেক হাওলাদারের নেতৃত্বে র্যাব ও পুলিশ বাবুলের এজেন্টদের পুলিশ পাহাড়ায় কেন্দ্রে আনার চেষ্টা করে। তবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
এদিকে বোরহানউদ্দিনের পক্ষিয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে নৌকার এজেন্ট সবুজকে ৩৭ হাজার টাকাসহ কেন্দ্রে প্রবেশ করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে এবং ওই অবৈধ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে বলে জানান নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ রায়হানুল ইসলাম। হাসান নগর ইউনিয়নে মোবাইলসহ কেন্দ্রে প্রবেশ করায় আলাউদ্দিন নামে এক এজেন্টকে আটক করা হয়েছে। এছাড়াও নানা অভিযোগের ভিত্তিতে বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রেই আইন শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তা বেস্টুনি ছিল নজরে পড়ার মতো।