অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ২৯শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৫ই পৌষ ১৪৩২


কাচিয়া ইউনিয়নের জেলেদের মাঝে লাইফ জ্যাকেট ও বয়া বিতরণ


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৪ই ডিসেম্বর ২০২১ রাত ১০:৪০

remove_red_eye

৫৩৯



বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক : গেছে বৈন্নয়ায় সিডরের কালে সাগরের নামাদিয়া  দমার বাড়ির লগে ট্রলার কাইত কইরা লাইছে। হেইকালে দুইডা ছোড ছোড বাঁশ ধইরা আল্লাহ আল্লাহ করছি, এই বুঝু হাত ছুইটা গেলো। হাতের ধারে কিচ্ছু পাইনাই। ট্রলারের হগলে যে যার মতো দূরাইতাছে, কেউ কেউ পানিত ঝাপদিছে। হেইয়া মনে ওঠলে আইজও কান্দন আহে। স্যারেরা আইজ একটা ট্রলারের লইগা ২ ডা কইরা বয়া আর ৫ টা কইরা লাইব জ্যাকেট দিছে, এহন আর গাংঙ্গে আর সাগরে ভয়নাই। এ ভাবেই আবেগে আপ্লুত হয়ে অনেকটা অশ্রু চোখে কথা গুলো বলছিলেন ভোলা সদর উপজেলার ৪নং কাচিয়া ইউনিয়ন কাঠির মাথা মাছঘাট এলাকার মোতালেব মাঝি।
তার মতো  মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্পের আওতায় সদর উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ওই ইউনিয়নের ৭০জন জেলেদের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন 'লজিক''।

এ সময় কাচিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম নকিব এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোলা জেলা প্রশাসক কার্যালয় স্থানীয় সরকার শাখার উপ-পরিচালক রাজিব আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন ভোলা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, স্থানীয় সরকার শাখার সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নুসরাত ফাতেমা চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলার মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা প্রতীক দে, লজিক প্রকল্পের ভোলা ডিস্ট্রিক্ট ক্লাইমেট চেঞ্জ কোঅর্ডিনেটর  নুরুল মোমেন সিদ্দিকী রায়হান প্রমুখ। অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন লজিক প্রকল্পের ভোলা ডিস্ট্রিক্ট ক্লাইমেট ফাইন্যান্স এর জেলা কো-অর্ডিনেটর হেলাল উদ্দিন।
এ সময় কাচিয়া ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম নকিব বলেন, ভোলা জেলা একটি নদী মাতৃক এলাকা। এ জেলায় কিছু বিচ্ছিন্ন দ্বীপ-চর রয়েছে সেখানে বসবাস করা অধিকাংশ মানুষ  জেলে পেশা করে জীবিকা নির্বাহ করে। এই ঝরের সময় তারা নদী সাগরে মাছ শিকারে গিয়ে নানা প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়। তাদের কথা মাথায় রেখে সরকার লজিক প্রকল্পের মাধ্যমে যে সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে তাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। কিন্তু আমার কাচিয়া ইউনিয়নের মাঝের চরে যেই পরিমান মানুষ ঝরের সাথে যুদ্ধ করে জীবন যাপন করে তাদের শতকরা ১০% মানুষ ও এই লজিক এর সুযোগ সুবিধা পাচ্ছেন না, এতে করে ঝরের কবলে পরে শতভাগের মধ্যে ৮০ ভাগ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির সম্মক্ষীন হতে হচ্ছে। তাই তিনি সরকার প্রধানের কাছে বিশেষ করে দ্বীপ-চরে বসবাসরত বাসিন্দাদের শতভাগ এই লজিক প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার আহবান জানান। আর প্রধান অতিথি রাজিব আহমেদ বলেন,ক্লাইমেট চেঞ্জ এর ফলে আমরা যেই ক্ষতির মুখে পরছি তার থেকে প্রতিরোদের জন্য সরকার "লজিক" প্রকল্পের মাধ্যমে নানা রকমেরনকাজ করে আসছে। যেহেতু ভোলা জেলা একটি প্রাকৃতিক দুযোর্গপ্রবণ এলাকা। প্রতিনিয়ত দুযোর্গের সাথে যুদ্ধ করে নদী ও সমুদ্র মাছ করে এখানকার জেলেরা। দেখাযায় সমুদ্রে যে কোন সময় সাইক্লোন, টর্নেডো, জলোচ্ছ্বাস সৃষ্টি হয়। ঝরের কবলে পরে সাগরে থাকা অনেক মাছ ধরার ট্রলার নিখোঁজ হয়ে যায় তখন তাদের কাছে সুরক্ষা সামগ্রী থাকলে তারা অন্তত জীবন রক্ষা করতে সক্ষম হয়। এই দৃষ্টিকোন থেকে সমুদ্রের উপকূলীয় এলকায় লজিক এর মাধ্যমে জেলেদের সুরক্ষা সামগ্রী হিসেবে একটি ট্রলারে ২ টি করে বয়া ও ৫ টি করে লাইফ জ্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এই সুরক্ষা সামগ্রী দুযোর্গ সময় জেলেদের সুরক্ষা কবচ হিসাবে কাজ করবে ।উল্লেখ্য, সমুদ্র উপকূল অঞ্চলের মানুষের দুয়ারে জলবায়ু অভিযোজনের সুফল পৌঁছে দিতে সরকার ও উন্নয়ন অংশীদার সংস্থাগুলো জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে স্থানীয় সরকারের উদ্যোগে লোকাল গভর্নমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্প কাজ করে আসছে। ভোলা জেলার সমুদ্র তীরবর্তী উপকূলীয় মাঝঘাট ও জেলে পল্লিতে প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় ঝুঁকিপূর্ণ জেলেদের সুরক্ষার জন্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ ও তার ব্যবহার সম্পর্কে প্রশিক্ষন দিচ্ছে লজিক।।