অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, সোমবার, ১২ই মে ২০২৫ | ২৯শে বৈশাখ ১৪৩২


চরফ্যাসনের তাড়–য়া হতে পারে দেশের অন্যতম সমুদ্র সৈকত


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১ই ডিসেম্বর ২০২১ রাত ১০:২৫

remove_red_eye

১০৪৫





এম শরীফ  আহমেদ : বাংলাদেশের বৃহত্তম দ্বীপ জেলা ভোলার মূল ভ‚খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন দ্বীপ "ঢালচর" এর দক্ষিণ পাশটাই তাড়–য়া সমুদ্র সৈকত। উত্তাল মেঘনার কোলঘেষে ওঠা তিনদিকে মেঘনা একদিকে বঙ্গোপসাগর বেষ্টিত অপরুপ সৌন্দর্যের সাজে সজ্জিত লীলাভ‚মি  অপরুপ "তাড়–য়া সমুদ্র সৈকত"। এখানে না আসলে বুঝাই যাবে না  কি সৌন্দর্য লুকায়িত আছে।এখানে সকাল বেলার সূর্য যেমন হাসতে হাসতে উদিত হয়ে ডিমের লাল আভার মতো  আলো ছড়াতে থাকে,তেমনি  সন্ধ্যায় পশ্চিমা আকাশে লাল আভা ছড়াতে ছড়াতে মুখ লুকায়।ঢালচরে রয়েছে-প্রায় ৪কিঃ মিঃ দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত।লাল কাকড়া, ২৩০ফুট লম্বা কাঠের তৈরী ল্যান্ডিং স্টেশন।বিশাল তাড়–য়া বন।কেওড়া বাগান। ৩১.৩১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের দ্বীপটির ২৮.২০ বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বনাঞ্চল। এখানে গড়ান,রেইনট্রি, গেওয়াসহ নানা ধরনের দামীয় গাছ রয়েছে।শীত এলেই এই দ্বীপে অতিথি পাখিদের মিলনমেলা দেখা যায়।এখানে পরিকল্পিতভাবে বনাঞ্চল  শুরু হয় ১৯৭৬সালে। এ দ্বীপে ভয়ংকর প্রাণী না থাকলেও রয়েছে -শিয়াল,বন বিড়াল, সাপ সহ নানা প্রজাতির প্রাণী। এখানে সৈকতে সাদা বালির উপর পর্যটকদের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য  স্থাপন করা হয়েছে ছাতা এবং চেয়ার। পাশাপাশি দেখা মিলবে লাল কাঁকড়ার। ছোট ছোট পা দিয়ে দৌঁড়ে চলে এসব প্রাণী।তবে মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই বালির গর্তে লুকিয়ে যায় লাল কাঁকড়ার দল।ব্যস্তময় জীবনের একঘেয়েমি থেকে অবকাশ যাপনের জন্য অপরুপ সৌন্দর্যের  তাড়–য়া সমুদ্র সৈকতে ঘুরে আসতে পারেন। এখানের সমুদ্রের গর্জন, উত্তাল ঢেউ,কেওড়া বাগানের ঠেসমূল, নির্মল বাতাস, টাটকা সমুদ্রের মাছ দেখে যেকেউ প্রেমে পড়ে যাবে।প্রকৃতি প্রেমীরা এখানে ঘুরে আসলেও তাদের মন সেখানে রয়ে যাবে।মনে হবে কোনো কিছু এখানে রেখে আসছে বা যে কেউ তাকে সৈকতের দিকে ডাকছে।রাতের ঝকঝকে আকাশে মিট মিট করে তারার মেলা। সৌন্দর্যের এই আমেজে মেতে উঠে যেকেউ। কল্পনার চেয়েও সুন্দর তাড়–য়া সমুদ্র সৈকত।এখানের সৌন্দর্যের কথা লিখে শেষ করা যাবে না।তবে প্রচার-প্রচারণার অভাবে সমুদ্র সৈকত স¤পর্কে অনেকের অজানা।যেখানে এ সমুদ্র সৈকতের অবস্থানঃ ভোলা সদর থেকে প্রায় ১২০কিঃ মিঃ দক্ষিণে চরফ্যাশন উপজেলার  ঢালচর ইউনিয়নের দক্ষিণ প্রান্তেই বঙ্গোপসাগরের মোহনায় তাড়–য়া সমুদ্র সৈকত অবস্থিত।
যেভাবে যাবেন ঢাকা থেকে ঃ প্রতিদিন সদরঘাটের ১২/১৩ নাম্বার পল্টন থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে সোয়া ৮টার মধ্যে ফারহান -৫/৬।কর্নফুলী-১২/১৩।তাসরিফ-৩,৪ মোট তিনটি লঞ্চ চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। লঞ্চগুলো ভোরবেলায় ঘাটে পৌঁছে। অপরদিকে বেতুয়া ঘাট থেকে বিকাল ৫টার দিকে লঞ্চগুলো পর্যায়ক্রমে সদরঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।লঞ্চে সিঙ্গেল কেবিনে ভাড়া ১০০০-১২০০ টাকা এবং ডেক এ ভাড়া প্রতিজন ৩০০-৩৫০ টাকায় ভোলার চরফ্যাশনের বেতুয়া ঘাটে নেমে  ইজিবাইকে করে ১৫টাকা দিয়ে চরফ্যাশন বাজারে যাবেন। সেখান থেকে ৩০কিঃ মিঃ দূরে কচ্ছপিয়া ঘাটে বোরাক (ভাড়া ৪৫) টাকা ।এসব জায়গায় মোটরসাইকেলও চলে তবে সেক্ষেত্রে দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হবে।কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে প্রতিদিন বিকাল ৩টায়  ঢালচরের উদ্দেশ্যে একটি লঞ্চ(ছোট লঞ্চ) ছেড়ে আসে। অপরদিকে ঢালচর ঘাট থেকে সকাল ৯টায়  কচ্ছপিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে একটি লঞ্চ (ছোট লঞ্চ) ছেড়ে আসে।কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে ঢালচরে ইঞ্জিন চালিত ট্রলারে (ভাড়া ১০০) টাকা। ঢালচর লঞ্চঘাট থেকে সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার পথ দুটি। এর মধ্যে একটি উপায় বনের ভিতর দিয়ে হেঁটে অপরুপ সৌন্দর্যের সমুদ্র সৈকতে যেতে পারবেন। তবে এ ক্ষেত্রে আপনার জন্য অনেক কষ্ট হবে।কারণ সেখানে সরু বা মসৃন কোনো রোড নেই। বেশিরভাগ জায়গা জুড়ে কেওড়া বাগানে।  ঠেসমূল এর ভিতর দিয়ে নতুন কারও পক্ষে হাঁটা  অতোটা সহজ নয়।অপরদিকে ট্রলার দিয়েও তাড়–য়া সমুদ্র সৈকতে যেতে পারবেন। তবে ১০জনের অধিক টিম হলে কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলার ২৪ঘন্টার জন্য দরদাম করে (৩০০০-৩৫০০)টাকা দিয়ে ভাড়া করে নিলে সবচেয়ে ভালো হয়।এতে সরাসরি তাড়–য়া সমুদ্র সৈকতে গিয়ে নামা যায়।তখন আর বাড়তি কষ্ট পোহাতে হবে না। এই প্যাকেজে আপনি অপরুপ সৌন্দর্যের চরকুকরি-মুকরি ইকোপার্কও ঘুরে আসতে পারবেন। তখন এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো হয়ে যাবে।এসব জায়গায় আপনি ¯প্রীডবোটও ভ্রমণ করতে পারবেন।এক্ষেত্রে আপনাকে ২-৩গুন ভাড়া গুনতে হবে। বরিশাল থেকেঃপ্রথমে বরিশাল সদর ঘাট থেকে ভেদুরিয়া ঘাটে ছোট লঞ্চে (ভাড়া ১০০) টাকা অথবা ¯প্রীডবোট (ভাড়া ২৫০)টাকা। ভোলার ভেদুরিয়া ঘাট থেকে বাসস্ট্যান্ড বোরাক/মাহিন্দ্র (ভাড়া ৩০)টাকা। ভোলা বাসস্ট্যান্ডে থেকে চরফ্যাশন বাসস্ট্যান্ড ডাইরেক্ট সিটিং সার্ভিস  বাসে (ভাড়া ১৩৫-১৫০টাকা)। বাসস্ট্যান্ড থেকে চরফ্যাশন বাজার বোরাক/রিকশা (ভাড়া ১০) টাকা। চরফ্যাশন বাজার থেকে কচ্ছপিয়া ট্রলার ঘাট বোরাক (ভাড়া ৪৫ ) টাকা। কচ্ছপিয়া ঘাট থেকে তাড়–য়া সমুদ্র সৈকতে  যেতে  উপরের দেয়া পথ অবলম্বন করতে পারেন ।
কখন যাবেনঃ যেকোনো দ্বীপে শীতকাল ভ্রমনের উপযুক্ত সময়। বিশেষ করে তাড়–য়া সমুদ্র সৈকত বঙ্গোপসাগরের মোহনায় হওয়ায় এখানে শীতকাল ব্যতীত যাওয়া ঠিক হবে না।যা যা দেখবেনঃ প্রায় ৪কিঃ মিঃ দীর্ঘ  সমুদ্র সৈকত এখানের  দর্শনীয় স্থান। এছাড়া এ  দ্বীপে লাল কাঁকড়া, ২৩০ফুট লম্বা কাঠের তৈরী ল্যান্ডিং স্টেশন,কেওড়া বনসহ প্রকৃতির নানা সৌন্দর্য এখানে দেখতে পারবেন। যেসব প্রাণীর দেখা মিলবেঃ শিয়াল,বন বিড়াল,হরিণ,লাল কাকড়া, সাপসহ নানা জাতের প্রাণী।
যানবাহনঃ এ দ্বীপে স্থলপথে চলার কোনো যানবাহন নেই। আপনি হেঁটে হেঁটে স্থলে ঘুরতে পারবেন  অথবা ইঞ্জিন চালিত ট্রলার দিয়ে জলপথে ঘুরতে পারবেন।
কোথায় থাকবেনঃ এ সমুদ্র সৈকতে থাকার কোনো আবাসিক হোটেল, রেস্টহাউজ বা ডাক-বাংলোও নেই। তবে এখানে বেশ কিছু হোম স্টে সার্ভিস রয়েছে। এসব জায়গায় প্রতিজন ২০০-২৫০ টাকায় থাকতে পারবেন।তবে এখানে খোলা আকাশের নিচে তাঁবু করে থাকাটা উত্তম। স্থানীয়দের কাছ থেকেও তাঁবু ভাড়া নিয়েও আপনারা থাকতে পারবেন।ক্যা¤িপং এর জন্য আদর্শ জায়গায়ও বলা যেতে পারে এ সমুদ্র সৈকতকে।
কি খাবেনঃ এই দ্বীপে দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যায়।এছাড়া নদী ও সাগরের নানা প্রজাতির সুস্বাদু মাছ পাওয়া যায়।তবে এখানে হাঁসের মাংস ভুনা,মহিষের দুধের দই খুবই জনপ্রিয়।
কোথায় খাবেনঃ এখানে কোনো হোটেল বা রেস্টুরেন্ট নেই।হোম-স্টে সার্ভিসের মাধ্যমে আপনাদের ইচ্ছেমত  সেখানকার খাবার-দাবার রান্না করিয়ে খেতে পারবেন।অথবা  নিজেরাই রান্না করে খেতে পারবেন। তবে এখানে সবচেয়ে রাতের বেলায় বারবিকিউ পার্টি করাই উত্তম।পাশাপাশি যা যা দেখতে পারবেনঃ সময় থাকলে আর স্বল্প অর্থ ব্যয় করলেই আপনি ভোলা সদরের তুলাতলী পার্ক, স্বাধীনতা যাদুঘর, ভোলা কায়াকিং পয়েন্ট,নিজাম-হাসিনা ফাউন্ডেশন মসজিদ । চরফ্যাশনের জ্যাকব টাওয়ার, শেখ রাসেল শিশু পার্ক, চর কুকরি-মুকরি ইকোপার্কও ঘুরে আসতে পারবেন।
নিরাপত্তাঃ এ সৈকতে কঠোর নিরাপত্তা রয়েছে। এখানের পুলিশ এবং আনসারের সদস্যরা সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা দিয়ে থাকেন।পাশাপাশি বনবিভাগের কর্মকর্তারাও তত্ত¡াবধান করেন।ভালোলাগার কথা হলো এখানের স্থানীয় লোকজন আপনাকে বিরক্ত তো করবেই না,বরং আপনাকে আপ্যায়নে ব্যস্ত হয়ে পড়বে।অন্যজায়গার লোকজন পেলে তারা খুবই খুশি হয়।





জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর নায়েবে আমীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আজম ওবায়েদুল্লার চরফ্যাসনে দাফন সম্পন্ন

জামায়াতের চট্টগ্রাম মহানগর নায়েবে আমীর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. আজম ওবায়েদুল্লার চরফ্যাসনে দাফন সম্পন্ন

বোরহানউদ্দিনে রাতের আঁধারে ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন

বোরহানউদ্দিনে রাতের আঁধারে ফসলি জমি কেটে পুকুর খনন

দৌলতখানে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পালিত

দৌলতখানে প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পালিত

চরফ্যাশনে সমতায় তারুণ্য শীর্ষক ইন্টারঅ্যাকটিভ প্রশিক্ষণ

চরফ্যাশনে সমতায় তারুণ্য শীর্ষক ইন্টারঅ্যাকটিভ প্রশিক্ষণ

দৃশ্যমান হচ্ছে লালমোহন পৌরসভার সড়ক উন্নয়ন

দৃশ্যমান হচ্ছে লালমোহন পৌরসভার সড়ক উন্নয়ন

সন্তানদের সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানো গর্বিত পিতা আব্দুস সাত্তার আলমগীর

সন্তানদের সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছানো গর্বিত পিতা আব্দুস সাত্তার আলমগীর

ব্যক্তি বা সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

ব্যক্তি বা সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় গড়ে উঠে নৈতিক সমাজ: তারেক রহমান

মায়ের নিঃস্বার্থ ভালোবাসায় গড়ে উঠে নৈতিক সমাজ: তারেক রহমান

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ নির্দেশনা

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে প্রধান উপদেষ্টার পাঁচ নির্দেশনা

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে আমরা আনন্দিত: ফখরুল

আ.লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে আমরা আনন্দিত: ফখরুল

আরও...