অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


ভোলায় বর্ষাকালীন তরমুজ আবাদ করে কৃষক সৌরভের সফলতা


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত ০৯:৫১

remove_red_eye

১৩৫৭

 

জুয়েল সাহা বিকাশ : ভোলায় বর্ষাকালীন সময় বøাক বেবি ও গোল্ডেন কুইন জাতের উচ্চ ফলনশীল তরমুজ চাষ করে কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছেন দৌলতখানের কৃষক সৌরভ চন্দ্র হাওলাদার। কোন প্রকার পোকার আক্রান না থাকায় ব্যাপক সফল পেয়েছেন তিনি। আর বাজারে বিক্রি করেও পাচ্ছেন লাভজনক অর্থ। বিভিন্ন রংয়ের এ তরমুজ দেখতে যেমন সুন্দর তেমনি খেতেও সু-স্বাধু। তাই এ তরমুদের চাহিদা অনেক বেড়েছে। এদিকে কৃষক সৌরভ চন্দ্র হাওলাদারের এ সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষদের মাঝে এ তরমুজ চাষের আগ্রহ বেড়েছে।
সরেজমিনের দিয়ে আলাপকালে জানা গেছে,ভোলা দৌলতখান উপজেলার চরপাতা ইউনিয়নের চরপাতা গ্রামের সৌরভ চন্দ্র হাওলাদার তার পরিত্যাক্ত ১০ শতাংশ জমিতে পরীক্ষা মূলক ভাবে আবাদ করে বর্ষাকালীন বেবী তরমুজ। অল্প খরচে মাত্র ৭০দিনে তার জমিতে ফল বড় হতে শুরু করে। তবে প্রথমে ফল চাষে পরিবারের সদস্যদের ভয় থাকলে ফলন আসার পর তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠে। ইতো মধ্যে একেক টি তরমুজের ওজন ২ থেকে আড়াই কেজি হয়ে উঠেছে। পাকতেও শুরু করেছে। বর্তমানে তার ক্ষেত্রে রয়েছে প্রায় এক হাজার তরমুজ। তার এ তরমুজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০/৭০ টাকা দামে।
কৃষক সৌরভ চন্দ্র হাওলাদার জানান, এক সময় তিনি বেকার ছিলেন। ধান চাষে তেমন ভাল না হওয়ায় অন্য কিছু একটা করার চিন্তা তার মাথায় সব সময় কাজ করতো। যাতে কম খরচে অধিক লাভবান হওয়া যায়। প্রায় বছরখানেক আগে বেসরকারি এনজিও গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার কৃষি ইউনিটের কর্মীরা তাকে এ তরমুজ চাষে জন্য উৎসাহিত করে। এতে তিনিও রাজি হয়ে যান। পরে ওই সংস্থা থেকে প্রশিক্ষণ ও বিনামূল্যে বীজ পেয়ে নিজেদের জমিতে শুরু করেন এই বর্ষাকালীন বেবী তরমুজ। এ তরমুজ চাষ করতে তার খরচ হয় মাত্র ৫০ হাজার টাকা।
তিনি আরো জানান, প্রথমে এ তরমুজ চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করলে তার পরিবারের সদস্য তাকে বাঁধা দেয়। তার পরিবারের সদস্যদের দাবী এ তরমুজ ভোলা জেলায় হয়না । এটি অন্য কোন জেলায় হয়। তাই এটি করলে লোকসানে পরতে হবে। কিন্তু তিনি কোন বাঁধা না মেনে চাষ করেন এ তরমুজ। যার ফলে মাত্র ৭০ দিনের মাথায় সফলতা পান তিনি। প্রতি কেজি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে বাজারে ৭০/৮০ টাকা। এ পর্যন্ত প্রায় ৬০ হাজার টাকা তরমুজ বিক্রি করেন তিনি। এ পর্যন্ত আরো ১ লাখ টাকার তরমুজ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি জানান।
এদিকে সৌরভ চন্দ্র হাওলাদারের এ তরমুজ চাষের স্বাফলতা দেখে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে এ তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় কৃষক আলী মিয়া ও ইউনুছ মিয়া জানান, এ কম খরতে ও কম পরিশ্রমে এত ভাল লাভজনক বেবী তরমুজ আগে জানতাম না। আগামীতে আমরা ব্যাপকভাবে এ তরমুজ চাষ করবো।
অন্যদিকে কৃষক সৌরভের ব্যতিক্রমী এ তরমুজ দেখার জন্য ও কেনার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ছুটে আসছে।
কলেক ছাত্রী অনামিকা জানান, আমরা বিষয়টি শুনে দেখার জন্য কলেজের বান্ধবীরা মিলে দেখার জন্য ক্ষেত্রে আসেছি। অনেক রংয়ের এ তরমুজ ক্ষেত্র দেখতে অনেক সুন্দর। এখানে এসে অনেক সেলফী তুলছি। তিনি আরো জানান, কয়েকটি কিনে খেয়েছি অনেক সু-স্বাধু এ তরমুজ।
ভোলা গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থার ভারপ্রাপ্ত নির্বহী পরিচালক মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের কৃষি ইউনিটের আওতায় গ্রামীন জন উন্নয়ন সংস্থা ভোলা জেলায় বেবী তরমুজের আবার শুরু করেছে। এ বছর তিন জন কৃষককে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ ও বীজ প্রদান করা হয়। তারা পরীক্ষা মূলকভাবে চাষ করে ব্যাপক স্বাফলতা পেয়েছেন। তিনি আরো জানান আমরা আগামীতে ব্যাপক হাড়ে এ তরমুজের আবাদ করার জন্য কৃষকদের উৎসাহিত করবো। ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ জানান, ভোলায় জেলায় এ তরমুজের আবাদ প্রথমবারের মত হয়েছে। মাটি ও আবহাওয়া উপযোগী হওয়ায় নতুন জাতের এই বেবী তরমুজ চাষ করে কৃষকরা সফল হয়েছেন।