অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


বোরহানউদ্দিনে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে নির্যাতন,স্বামীসহ ২ জন গ্রেফতার


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত ০৯:৫৫

remove_red_eye

৬৬০

 

বাংলার কন্ঠ প্রতিবেদক : ভোলা বোরহানউদ্দিন স্বামীর বাড়ীর দাবীকৃত যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা দিতে না পারায় পৌর ৯নং ওয়ার্ডের পঙ্গু মো: মফিজের মেয়ে আচমা বেগম (২২) কে শিকল দিয়ে বেঁধে স্বামীর বাড়ীর লোকজন অমানবিক নির্যাতন করেন। এ ঘটনায় সোমবার বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা হলে রাত ৩ টায় স্বামী সাহাবুদ্দিন (২৭) ও আনোয়ার (৫৫) কে আটক করেন থানা পুলিশ। এদিকে এ মেয়েটির শিকল বাধাঁ অবস্থায় ভিডি স্যোশাল মিডিয়া ভাইরাল হয়। এতে সবাই স্বামীর পরিবারের উপযুক্ত বিচার দাবী করেন।

আচমা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার বিয়ে হয় প্রায় ৩ বছর। বিয়ের পর যৌতুক বাবদ ৭০ হাজার টাকা নেয় আমার স্বামীর পরিবার। এরপরও আমার স্বামী মো: সাহাবুদ্দিন ও শ্বশুর বাড়ীর লোকজন প্রায়ই আরোও যৌতুকের টাকার জন্য নির্যাতন করে আসছে। আমার স্বামী ঢাকা ট্রাক চালায় আর নেশা খায়। গভীর রাতে নেশা খেয়ে প্রায়ই যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করতেন। কিন্তু আমার ৯ মাসের একটি কন্যা সন্তানের জন্য সকল কষ্ট সহ্য করে এসেছি। আমার স্বামী শনিবার আমার বাড়ীতে পাঠায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে। আমার বাবা একজন পঙ্গু মানুষ। বাড়ীতে এসে কান্নাকাটি করলে বাবা মা বুঝিয়ে রবিবার আমার শ্বশুর বাড়ীতে পাঠিয়ে দেয়। টাকা নিতে না পারায় রবিবার বিকাল থেকে আমাকে নির্যাতন শুরু করে আমার স্বামী সহ তার পরিবার। সন্ধ্যায় হাতে পায়ে শিকল বেধেঁ সারা শরীরে কাটা দিয়ে ক্ষত করে মরিচের গুড়া ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দেয়। এভাবে সারা রাত অমানবিক নির্যাতন করেন। ওরা আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। আমার ডাক চিৎকারে সকালে স্থানীয়রা এসে উদ্ধার করে আমার বাবা মাকে খবর দেন। তাদের সহযোগিতায় থানায় আসলে পুলিশ আমার হাতে পায়ের শিকল খুলে রাত ১২টায় হাসপাতালে এনে ভর্তি করেন। আমি আমার নির্যাতনের সুষ্ঠ বিচার দাবী করছি। এদিকে এ ঘটনায় বোরহানউদ্দিন থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার মামলা নং ৬ তারিখ ০২-০৯-২০১৯। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার দিবাগত রাত ৩টায় এস.এ আই হেমায়েত, এস.আই বিল্লাল সহ সংঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে স্বামী সাহাবুদ্দিন ও শ্বশুর আনোয়ার কে আটক করেন। তাদেরকে ভোলা জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এসময় তার ৯ মাসের কন্যা সন্তানকে উদ্ধার করেন পুলিশ।
এব্যাপারে আচমা বেগমের বাবা পঙ্গু মো: মফিজ বলেন, এরপূর্বে দারদেনা করে আমার জামাই কে যৌতুক বাবদ ৭০ হাজার টাকা দেই। আরোও যৌতুকের টাকা দাবী করেন। কিন্তু আমি পঙ্গু মানুষ কোন রকম ভাতা পেয়ে সংসার চালাই। ওরা আমার মেয়েটিকে মেরে ফেলতে চেয়েছে। সারা শরীরের কাটা দাগগুলো দেখলে গায়ের লোম দাড়িয়ে যায়। আমি ওদের উপযুক্ত বিচার দাবী করছি। আর যাতে আমার মেয়ের মত কোন মেয়েকে এরকম তার স্বামীর পরিবার নির্যাতন করতে না পারে।
এব্যাপারে বোহানউদ্দিন থানার অফিসার ইন-চার্জ ম.এনামুল হক জানান, মেয়েটিকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে মেয়েটির স্বামী ও শ্বশুরকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।