অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, বৃহঃস্পতিবার, ৩১শে অক্টোবর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


চরফ্যাশনে হারিয়ে যাচ্ছে মৌমাছি আর মৌচাক!


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ৩রা সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত ০৯:৫৬

remove_red_eye

২০৭৮

আমিনুল ইসলাম, চরফ্যাশন : ‘মৌমাছি মৌমাছি, কোথা যাও নাচি নাচি, দাঁড়াওনা একবার ভাই’ শৈশবে সুরে-সুরে ছন্দে-ছন্দে এ ছড়াটি পড়েননি এমন মানুষ হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। তবে বর্তমানে মৌমাছি যেন শুধু বইয়ের পাতায়ই রয়েছে, দৃশ্যত এ ক্ষুদ্র প্রাণীটিকে তেমন একটা আর দেখা যায় না চরফ্যাশনে। ক্রমে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছে মৌমাছির দল। হারিয়ে যাচ্ছে মৌমাছি আর মৌচাক।
মধু সংগ্রহকারী ওমর ফারুক জানান, অতীতে ফলবান বৃক্ষের ডালে, দালানের ছাদের নিচে, বন-জঙ্গলে, গাছের কোঠরে, মাটির গর্তে বা সুবিধাজনক স্থানে মৌমাছির বসবাস ছিল গ্রাম-গঞ্জে ও শহরে কিন্তু এখন আর তা দেখতে পাওয়া যায় না। ১৫-২০ দিন ঘোরা ফেরার পরও একটা মৌচাকও পাওয়া যায় না। যদিওবা কোথাও পাওয়া যায় তা আকারে ছোট। মৌমাছির সংখ্যাও আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। আগে যেমন মধু পাওয়া যেত এখন সেটা আর নেই।
চরফ্যাশন হামদর্দ ল্যাবরেটরিজ এর ডাঃ আষিশ কুমার জানান, মধুর মধ্যে প্রচুর পুষ্টি ও খাদ্য গুণ রয়েছে। মধু দুধ বা পানি মিশ্রণ করে খেলে নিমিষে হারানো শক্তি ফিরে পাওয়া যায়। দৈহিক গঠন ও সু-স্বাস্থ্য তৈরি ছাড়াও মধু বিভিন্ন রোগের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও কোমলতা বাড়ানোর জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এক কথায় মধু সর্বরোগের মহা ঔষধ হিসেবে কাজ করে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জানান, মৌমাছি ও মৌচাক বিলুপ্তি হওয়ার একটা বড় কারণ প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এছাড়া তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বসবাসের উপযোগ্য পরিবেশের অভাব, খাদ্যাভাব, ফসলের মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ, আনাড়ি মধু সংগ্রহকারীদের দিয়ে মৌচাকে অগ্নিসংযোগে মৌমাছি পুড়িয়ে হত্যা করাসহ নানান কারণে মৌমাছি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। সম্পতি মৌমাছির সংখ্যা আনাগোনা ও প্রাকৃতিক মৌচাক আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। এখন মুক্ত মৌমাছির ভোঁ-ভোঁ শব্দ শুনতে পাওয়া যায় না। কালের বিবর্তনে মৌমাছির সংখ্যা এতটাই কমেছে যে গ্রাম-গঞ্জে বিভিন্ন ফসল ও ফলফলাদি গাছে আগের মত আর মুক্ত মৌমাছি চাক বাসা বাঁধে না। মৌমাছির প্রজনন বৃদ্ধি ও বসবাসের পরিবেশের অভাবে মুক্ত মৌমাছি ও মৌচাক হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে বিভিন্ন ফসল ফলাদি পরাগায়নে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।