অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, শুক্রবার, ১লা নভেম্বর ২০২৪ | ১৬ই কার্তিক ১৪৩১


মনপুরায় ৯ মাসে ২৭ মামলা গ্রেফতার ৩১ আত্মসর্ম্পন ৬


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯শে সেপ্টেম্বর ২০১৯ রাত ০৮:২৬

remove_red_eye

৫২৩

মেহেদী হাসান নাহিদ, মনপুরা || ভোলার মনপুরা উপকূল জুড়ে মাদকের ছড়াছড়ি। হাত বাড়ালে পাওয়া যায় গাঁজা, ইয়াবা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে তরুন থেকে মধ্য বয়েসের মানুষ মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এই নিয়ে চিন্তিত উপকূলের বাসিন্দারা। আর সচেতন মহল মনে করছেন মাদকের ব্যাপারে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন না করতে পারলে পরিস্থিতি আরোও ভয়াবহ রুপ ধারন করতে পারে।

এদিকে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন হাট বাজারে মাদকের কুফল সর্ম্পকে সচেতন করতে করছে সভা-সেমিনার।

মনপুরা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত ৯ মাসে মাদকসেবী ৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ২৭ মামলা দেওয়া হয়। এছাড়াও বৃহস্পতিবার ২ মাদকসেবী আতœসর্ম্পন করে, এই নিয়ে উপকূলে ৬ জন মাদকসেবী পুলিশের কাছে স্বেচ্ছায় আতœসর্ম্পন করে। এদের গ্রেফতারকৃত মাদক আসামীদের মধ্যে স্কুল-কলেজ শিক্ষার্থী ও উঠতি তরুনদের সংখ্যা বেশি। তবে বেশিরভাগ গাঁজা সেবী। ইয়াবা সেবনকারীও আছে।

পুলিশ রির্পোটে সূত্রে গ্রেফতারকৃত মাদকসেবীরা হলেন, জানুয়ারী মাসে- আল-আমিন (২২), শাহীন (২৪), মোঃ বেলাল হোসেন (২২), মামলা দায়ের তিন, ফেব্রæয়ারী মাসে- আঃ রব (৪০), মোঃ মামুন (২০), মোঃ মেহেদী হাসান জীবন (২২), মামলা তিন, মার্চ মাসে- আঃ রহিম (৩৫), বেল্লাল (৩৫), নামুল হোসেন ইমন (২২), মোঃ সবুজ (২৫), মোঃ এনায়েতুর রহমান জীবন হাওলাদার (৪৬), হাবিবুল বাশার (৪০), মামলা- তিন, এপ্রিল মাসে- মোঃ রাসেল হাওলাদার (২১), মোঃ মিজানুর রহমান পাটোয়ারী (২৮), মোঃ আশরাফ (২৫), মিজান সিকদার (২৭), মামলা-৩, মে মাসে- মোঃ ইউনুচ বেপারী(২৮), মোঃ সোহেল (২৩), মোঃ হাশেম (৩৫), মামলা-৩, জুন মাসে- মোঃ কামাল উদ্দিন (৪০), মোঃ দুলাল হোসেন (২০), মোঃ বশির মাঝি (৪০), মামলা-৩, জুলাই মাসে- মোঃ নোমান (৩৫), মোঃ সোহাগ (২৩), মজনু খান (৩৮), মোঃ রিয়াজ (২৬), মামলা-৪, আগস্ট মাসে- মোঃ ফারুক (২৫), মোঃ ইউনুচ বেপারী (৩০), মোঃ সোহাগ (২৪), মামলা-৩, সেপ্টেম্বর মাসে এই পর্যন্ত দুই মামলা মোঃ শামীম হোসেন (২১) ও কেশব চন্দ্র দেবনাথ (৪৫ )কে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এছাড়াও বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টায় ২ মাদকসেবী থানায় এসে স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আতœসর্ম্পন করে। এনিয়ে ৬ মাদকসেবী স্বেচ্ছায় পুলিশের কাছে আতœসর্ম্পন করে। এরা হলেন, মোঃ ইব্রাহীম (২৮), মোঃ লোকমান (৩০), মোঃ আলী আজগর (৩৫), মন্টু লাল রবি দাস (৫৫), মোঃ ইউনুচ (২৮), সোহাগ (২৫)।

এদিকে কয়েকটি অসর্মথিত সূত্র থেকে জানা যায়, মনপুরা-হাতিয়া-নোয়াখালীর রুট ব্যবহার করছে ইয়াবা পাচারকারীরা। এই রুট দিয়ে দক্ষিণাঞ্চল হয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাচার হয় বলে জানান ওই সূত্র গুলো।

মনপুরা মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার আবুল কাশেম মাতাব্বর জানান, মনপুরায় মাদকের ছোবল ভয়াবহ রুপ ধারন করছে। স্কুল-কলেজর শিক্ষার্থীরা মাদকে আসক্ত হওয়ায় উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এখনই সবাই মিলে মাদকের ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহন না করলে ভবিষ্যতে আরো অবনতি হবে।

হাজিরহাট সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলমগীর হোসেন জানান, উপকূল হিসাবে মনপুরায় মাদকের বিস্তার বেশি। এখানে বেশিরভাগ মাদকসেবী গাঁজা সেবন করে। তবে কিছু সংখ্যক ইয়াবা সেবন করছে জানা যায়। তবে পুলিশ স্কুলে স্কুলে সচেতনতা সভা করায় অনেকে আতœসর্ম্পন করছে।

মনপুরা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জানান, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ও উধর্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী মনপুরা পুলিশ মাদকের বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা গত ৯ মাসে ২৭ মামলা ৩১ মাদক সেবী গ্রেফতার করেছি। এছাড়াও স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন হাট বাজারে সেমিনার সভা করেছি। এতে আজ(বৃহস্পতিবার) দুই মাদকসেবী সহ ৬ মাদকসেবী স্বেচ্ছায় আতœসর্ম্পন করে।