অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামালের আজ ৫০ তম মৃত্যুবার্ষিকী


বাংলার কণ্ঠ প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৭ই এপ্রিল ২০২১ রাত ১১:৪৪

remove_red_eye

১৩৫৯

হাসনাইন আহমেদ মুন্না : আজ ১৮ এপ্রিল বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামালের ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৭১ সালের এই দিনে ব্রাম্মনবাড়িয়ার আখাউড়ায় দরুইন গ্রামে পাকবাহিনীর সাথে সম্মুখ যুদ্ধে শাহীদ হন তিনি। সেদিন তিনি একাই লাড়াই করে বাঁচিয়ে দিয়েছেন সহযোদ্ধাদের প্রাণ।
জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৬ এপ্রিল সিপাহী মোস্তফা কামালের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল ব্রাম্মনবাড়িয়ার দিকে এগিয়ে আসা পাকিস্তনি হানাদার বাহিনীকে ঠেকানোর জন্য আখাউড়ার দরুইন গ্রামে অবস্থান নেয়। সংখায় বেশি ও আধুনিক  অস্ত্রে সজ্জিত পাকাবাহিনীর সাথে মোকাবেলায় মুক্তিযোদ্ধাদের ছিলো অদম্য মনোবল। প্রচন্ড ঝুঁকির মধ্যেও মুক্তিযোদ্ধারা শত্রæর জন্য প্রস্তত থাকে অস্ত্র হাতে।
১৮ এপ্রিল সকাল থেকেই আকাশে মেঘ ছেয়ে রইল। ১১টার দিকে শুরু হলো প্রচন্ড বৃষ্টি। একইসাথে শত্রæর গোলাবর্ষণ। মুক্তিযোদ্ধারও পাল্টা গুলি করতে শুরু করল। শুরু হলো সম্মুখ যুদ্ধ। মেশিনগান চালানো অবস্থায় এক মুক্তিযোদ্ধার বুকে গুলি লাগল। মুহুর্তের মধ্যে মোস্তফা কামাল এগিয়ে এসে চালাতে লাগলেন মেশিনগান। গর্জণ করে উঠে তার হাতের অস্ত্র।
মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে কোন অত্যাধুনিক অস্ত্র ছিলোনা। সংখায়ও অনেক কম ছিলো তারা। আর পাকিস্তানি সৈন্যরা সংখায় ছিলো অনেক বেশি ও  ভারি অস্ত্র শস্ত্র সজ্জিত তারা। হয় সামনা সামনি যুদ্ধ করে মরতে হবে, নয় পিছু হটতে হবে। কিন্তু পিছু হটতে হলেও সময় দরকার। ততক্ষণ অবিরাম গুলি চালিয়ে শত্রæদের আটকিয়ে রাখতে হবে। কে নেবে এই মহান দ্বায়িত্ব?
এমন সময় আরোএকজন মুক্তিযোদ্ধার বুকে গুলি বিঁধল। মোস্তফা কামাল সকল সহযোদ্ধাদের সরে যেতে বল্লেন। পরিখার মধ্যে সোজা হয়ে চালাতে লাগলেন স্টেনগান। মুক্তিযোদ্ধারা তাকে ছেড়ে যেতে না চাইলে তিনি আবারো সবাইকে নিরাপদে যেতে বলেন। অবিরাম গুলি চালাতে থাকেন তিনি। তার গোলাবর্ষণে শত্রæদের থামকে যেতে হয়েছে। মারা পড়েছে বেশ কয়েকজন পাক সৈন্য।
ততক্ষণে দলের অন্য সদস্যরা নিরাপদে পিছু হটেছেন। একসময় মোস্তফা কামালের গুলি শেষ হয়ে যায়। হটাৎ করেই একটি গুলি এসে লাগে তার বুকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। মৃত্যুবরণ করেন মোস্তফা কামাল। তার এমন বীরত্বের কারণে সহযোদ্ধাদের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে। দরুইনের মাটিতে সমাহিত করা হয় জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তানকে।
এদিকে এবছর মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে কোন ধরনের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই দিবসটি পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন মোস্তফা কামালের ছোট ভাই’র ছেলে মো: সেলিম। তিনি জানান, যেহেতু করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ রুপ নিয়েছে, তাই এবছর পরিবারের উদ্যেগে আলীনগর ইউনয়নের মৌটুপি গ্রামের সাহেবের কাচারী এলাকার বাড়িতে সীমিত পরিসরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে মিলাদ-দোয়া মাহফিল এবং দরিদ্রদের মাঝে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করা হবে।