অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


দৌলতখানে ঝড়ে বাতাসে মাথা গোঁজার ঠাঁই হারালেন রোসোনা


দৌলতখান প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩শে অক্টোবর ২০২০ রাত ০৯:৫৫

remove_red_eye

৬৭০



দৌলতখান প্রতিনিধি: রোসোনা বেগম বয়স ষাটোর্ধ্ব, স্বামী বৃদ্ধ খোরশেদ আলম। তাদের তিন ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বর্তমানে তিন ছেলে বিয়ে করে অন্যত্রে থাকেন। ছেলেরা তাদের খোঁজখবর রাখেন না। মেয়ের বিয়ের কয়েক বছর পর স্বামী তাকে রেখে চলে যান। ছেলেরা ভরন-পোষণ না দেয়ায় বৃদ্ধ খোরশেদ আলম ভিক্ষাবৃত্তি করে কোন রকম সংসার চালাতেন। গেল দুই বছর হলো খোরশেদ আলম অর্শ রোগে আক্রান্ত হয়ে ঘরে থাকেন। পরে সংসারের হাল ধরেন স্বামী পরিত্যক্তা তাদের মেয়ে সেফালী বেগম। সেফালী বিভিন্ন বাড়িতে গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজ করতেন। তার আয়ে দুমুঠো ভাত বৃদ্ধদম্পতির কপালে জোটে। ছেলেরা তাদের ছেড়ে চলে যাওয়ার পর একমাত্র সম্বল ছিলো ঘরটি। ওই ঘরে রোসোনা দম্পতিসহ তার বড় মেয়ে সেফালী বেগম বসবাস করেন।
টানা বর্ষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ভোলার দৌলতখানের মানুষের জনজীবন। শুক্রবার সকাল দশটায় রোসোনা দম্পত্তি ও তার মেয়ে সেফালী বেগম ঘরের রান্নাবান্নার কাজ করছিলো। হঠাৎ দমকা হাওয়ায় ঘরের পাশে থাকা রেন্ডিগাছ  উপড়ে পরে তাদের ঘরটি চুর্ণ-বিছিন্ন হয়ে যায়। এতে করে বৃদ্ধ দম্পতিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা ঘরের নিচে চাপা পড়লে, প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে। তবে তারা বর্তমানে সুস্থ আছেন। কিন্তু তাদের মাথা গোঁজার ঘরটি চুর্ণ-বিছিন্ন হয়ে গেছে।
রোসোনা বেগম দৌলতখান পৌরসভা ৩ নং ওয়ার্ডের মাছঘাট এলাকায় বসবাস করছেন। তিনি জানান, স্বামী খোরশেদ আলম ভিক্ষাবৃত্তি করে সংসার চালাতেন। তিনি দীর্ঘ ২ বছর যাবৎ অর্শ রোগে ভোগছেন। তার চিকিৎসার খরচ মেটাতে পারছিনা। বর্তমানে মেয়ে সেফালীর আয়ে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করি।
তিনি আরও জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আমি নিজে খেয়ে পরিবারের অন্য সদস্যসহ ঘরের ভিতর ঘুমিয়ে পরি। শুক্রবার সকালে ঘরের রান্নাবান্নার কাজে মশগুল ছিলাম। হঠাৎ দমকা হাওয়ায় ঘরের পাশে থাকা রেন্ডিগাছটি উপড়ে পরে আমাদের ঘরটি চুর্ণ-বিছিন্ন হয়ে যায়। এখন আমরা থাকবো কোথায়? আল্লাহ-ই ভালো জানেন। আমাদের এমন কষ্ট আল্লাহ ছাড়া, কেউ দেখেন না। ঘরের নিচে বৃদ্ধ রোসোনা বেগম, খোরশেদ আলম, মেয়ে সেফালী বেগম, নাতিন মিনারা ও নাতিনের জামাতা শরীফ চাপা পড়েন। পরে প্রতিবেশীরা তাদের ডাক-চিৎকার শুনে উদ্ধার করে। বর্তমানে অসহায় পরিবারটি মানবেতর জীবন-যাপন করছে। এদিকে খবর পেয়ে উপজেলা যুবলীগ নেতা হাসান মাহমুদ অসহায় পরিবারকে ২০ কেজি চাল বিতরণ করেন।      

স্থানীয়রা জানান, অসহায় রোসোনা দম্পত্তি পরিবার কয়েকদিন আগে রেন্ডিগছর মালিক সিরাজকে গাছটির ডাল-পালা কেটে দেয়ার কথা বলেছেন। যদি গাছটির ডাল-পালা কেটে দিতো, হয়তো রোসোনার ঘরটি ওপর এভাবে গাছটি উপরে পড়তোনা। রোসোনা বেগমের পরিবারটি অত্যন্ত অসহায়। আল্লাহ ছাড়া তাদের দেখার মতন কেউ নেই। তারা মনে করেন, অসহায় ওই পরিবারকে যদি সকলে সহযোগীতা করেন, তাহলে হয়তো আবার নতুন করে তাদের মাথা গোঁজার ঘরটি ফিরে পাবেন।