অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৪ই পৌষ ১৪৩২


চরফ্যাশনের জমির বিরোধ নিয়ে প্রতিপক্ষের হামলা


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২০ রাত ১০:৫৬

remove_red_eye

৭৫৮



নারী-পুরুষসহ  ৫ জন আহত


চরফ্যাশন প্রতিনিধি : চরফ্যাশনে জমিজমা বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের হামলায় একই পরিবারের ৫ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত ৩ জনকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করলেও বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহতরা হলেন- দয়াল চন্দ্র দাস (৭০), অমলক্ষী রানী দাস (৫০), সাধন চন্দ্র দাস (৩৫), গীতা রানী দাস (৪৮) সহ ৫ জন।  ২৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় চরফ্যাশন জিন্নাগড় ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে দয়াল চন্দ্র দাস গংদের ভোগ দখলীয় জমিতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তার ভাই খোকন চন্দ্র দাস বাদী হয়ে শ্রী হরি দাস, শ্রী কৃষ্ণ দাস সহ ৭/৮ জনকে বিবাদী করে চরফ্যাশন থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জিন্নাগড় ৪নং ওয়ার্ডের সতীশ চন্দ্র দাসের পূত্র দয়াল চন্দ্র দাস (৭০) গংদের সাথে একই বাড়িতে বসবাসকৃত প্রতিপক্ষ বিশম্বর চন্দ্র দাসের পূত্র দয়াল হরিচন্দ্র দাস গংদের দীর্ঘদিন যাবৎ জমি জমা নিয়ে মামলা মোকদ্দমা চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় দয়াল চন্দ্র দাস গং দয়াল হরিচন্দ্র দাস গংদের বিবাদী করে চরফ্যাশন সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করে। যার নং- ৪০/২০ইং। জমি বিরোধের ঘটনায় চরফ্যাশন থানায় অভিযোগ দাখিল করলে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় বিবাদীরা  উল্টো মিথ্যা মামলা হামলার হুমকি দেয় বলে আহতরা জানায়।
এ ছাড়াও আহতরা জানায়, বিবাদী দয়াল হরি চন্দ্র দাস গংরা জালিয়াতি করে বাবার নামের স্থলে চাচার নাম বসিয়ে ভুয়া ওয়ারিশ সনদ তৈরি করে। ঐ ভুয়া ওয়ারিশ সনদ দিয়ে চরফ্যাশন ভূমি অফিসকে ভুল বুঝিয়ে আর.এস ৩০৭নং খতিয়ানে জমি দলিল করলেও এস.এ ৪২৩ নং খতিয়ানে ভুয়া নামজারী করেন। যার নং- ৬১৭এফ/৮৪-৮৫। ওই নামজারী বাতিল চেয়ে গত ২৬/০৭/২০ইং তারিখে ভূমি অফিসে আবেদন করেন। ওই জালিয়াতির বিষয় নিয়ে জিন্নাগড় ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে উভয় পক্ষের কাগজ পর্যালোচনা করে ৬০ শতাংশ জমির কতেক অংশ ইউপি চেয়ারম্যান পরিমাপ করে পিলার করে দেয়।
দয়াল চন্দ্র দাস ও তার ছেলে সাধন চন্দ্র দাস জানান, পরিমাপের পর ৫নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার সুমন মোল্লা এই জমি কেনার জন্য প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ইউপি মেম্বার এর নেতৃত্বে বুধবার সকাল ৮টায় ওই জমির পিলার ফেলে দিয়ে বিবাদীরা স্থানীয় ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার মঞ্জু পঞ্চায়েত উপস্থিতিতে জমি দখলে নিতে বিরোধীয় জমিতে ধানের চারা রোপন করে। এতে দয়াল চন্দ্র দাসের ছেলে সাধন চন্দ্র দাস বাধা দিলে বিবাদী শ্রী হরিদাস, শ্রী কৃষ্ণ দাস ও ইউপি মেম্বার সুমন মোল্লা তাকে মারধর করে। তার ডাক চিৎকারে বাবা দয়াল চন্দ্র দাস, মা অমলক্ষী দাস, গীতা রানী দাস ছুটে আসলে তাদের উপরও হামলা চালায় প্রতিপক্ষরা। হামলায় তারা গুরুতর আহত হয়। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ঘটনায় মেম্বার সুমন মোল্লাকে ফোন করলে তিনি জানান, ওই বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। অভিযোগ সম্পর্কে অকথ্য ভাষায় তিনি বলেন, এমন অভিযোগ ঘোড়ায় ঘাস খায়। ৪নং ওয়ার্ড ইউপি মেম্বার মঞ্জু পঞ্চায়েত মোবাইলে জানান, আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু কোন প্রকার হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এ ঘটনায় জিন্নাগড় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ হোসেন মিয়া জানান, বিষয়টি সম্পর্কে জেনে আমি চরফ্যাশন হাসপাতালে গিয়ে তাদের খোজ খবর নিয়েছি। কিন্তু আমি কোন ফয়সালা দেইনি। ফয়সালার পূর্বেই তারা ৫২৮ করে মামলাটি আদালতে নিয়ে যায়। এছাড়াও তারা আবার চরফ্যাশন থানায়ও অভিযোগ করেন বলে জেনেছি।
চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনা শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।