অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


অবশেষে ফিরছেন তারেক রহমান, উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা


বাংলার কণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২শে ডিসেম্বর ২০২৫ বিকাল ০৪:৫৬

remove_red_eye

৭৪

তারেক রহমান কি আসবেন, আসতে পারবেন, কেন আসছেন না, তার দেশে আসতে সমস্যাটা কোথায়? চায়ের আড্ডা কিংবা খাবার টেবিলে কিংবা কোনো জনপরিসরে অথবা কোনো টেলিভিশনের পর্দায় এমন সব প্রশ্নের সুরাহা হতে যাচ্ছে এবার। সব ঠিক থাকলে আগামী বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) দেশে ফিরছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে প্রবাস জীবন কাটানো তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে উচ্ছ্বসিত বিএনপির নেতাকর্মীরা। কীভাবে দলের শীর্ষ নেতাকে সংবর্ধনা দেবেন সে নিয়ে ব্যতিব্যস্ত তারা।

অবশেষে ফিরছেন তারেক রহমান, উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা

তারেক রহমানের দেশে ফেরা উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান আয়োজনে ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের অনুমতি পেয়েছে দলটি। দলনেতাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে চান তারা। রাজধানীর খিলক্ষেতের ৩০০ ফিট এলাকায় গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে। তারেক রহমানের জন্য ঠিক করা হয়েছে বাড়িও।

তারেক রহমান সবশেষ নিজেই দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। লন্ডনে দলের নেতাকর্মীদের কাছ থেকেও এক অনুষ্ঠানে বিদায় নেন তিনি। অনুরোধ করেন তাকে বিদায় জানাতে এয়ারপোর্টে কেউ যেন না যান। তারেক রহমানের সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন স্ত্রী-কন্যাসহ আরও পাঁচজন। সঙ্গে থাকছে তার আদরের পোষা বিড়াল ‘জেবু’।

 

অবশেষে ফিরছেন তারেক রহমান, উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা

জানা গেছে, বিমানের বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ২০২০ ফ্লাইটে টিকিট বুকিং করেছেন তারেক রহমান। ফ্লাইটটি ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার কথা রয়েছে। সব ঠিক থাকলে বোয়িং ৭৮৭-৯ মডেলের উড়োজাহাজটি ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে।

গত ২৩ নভেম্বর থেকে তারেক রহমানের মা, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে কেন তার ছেলে তারেক রহমান দেশে আসছেন না তা নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। অনেকেই সে সময় বলেন, ২০২৪ সালে গণঅভুত্থানের পর দেশে আসতে পারতেন তারেক রহমান কিন্তু আসলেন না, এখন মা অসুস্থ এরপরও আসছেন না, দেশের অনেক সংকটে তাকে কাছে পাননি তার সমর্থকরা। তবে এসব প্রশ্নের উত্তর পরে খোলাসা করেন তারেক রহমান নিজেই।

অবশেষে ফিরছেন তারেক রহমান, উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা

তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লেখেন, ‘সংকটকালে মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা যে কোনো সন্তানের মতো আমারও রয়েছে।’ তিনি এ-ও বলেন, এখনই দেশে ফেরার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ তার জন্য অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। স্পর্শকাতর এই বিষয়টি বিস্তারিত বর্ণনার অবকাশও সীমিত। রাজনৈতিক বাস্তবতার এই পরিস্থিতি প্রত্যাশিত পর্যায়ে উপনীত হওয়া মাত্রই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে আমার সুদীর্ঘ উদ্বিগ্ন প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে বলেই আমাদের পরিবার আশাবাদী।’ যদিও সে সময় অন্তর্বতী সরকারের প্রেস উইং জানায়, তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে সরকারের তরফে কোনো বাধা নেই।

গত ১২ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী ওসমান হাদিকে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর দেশের দুটি বড় গণমাধ্যম ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানে হামলার পর সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সচেতন নাগরিকরা মনে করছেন, তারেক রহমান আরও আগে ফিরলে পরিস্থিতি আরও ভিন্ন হতে পারতো।

অবশেষে ফিরছেন তারেক রহমান, উচ্ছ্বসিত নেতাকর্মীরা

বিএনপির নেতাকর্মীরা মনে করেন, তারেক রহমান ফিরলে দলের অভ্যন্তরে, এমনকি দেশের রাজনীতিতে একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। ভোটের পরিবেশ আরও ভালো হবে।

সচেতন নাগরিকদের অনেকে বলছেন, দীর্ঘ প্রবাস জীবন থেকে তারেক রহমান নিজেকে একজন পরিশীলিত নেতা হিসেবে গড়ে তুলেছেন। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকলেও দলের মধ্যে ঐক্য ধরে রেখেছেন।

তারেক রহমান ওয়ান/ইলেভেনের পর ২০০৮ সালে কারাগার থেকে বেরিয়ে সপরিবারে যুক্তরাজ্যে যান। ২০১২ সালে তারেক রহমান সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন এবং এক বছরের মধ্যেই সেটি গৃহীত হয়। তারপর আর দেশে ফেরা হয়নি তার। তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান প্রয়োজনে কয়েকবার দেশে আসতে পারলেও তিনি পারেননি।

অবশেষে বিএনপি নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সব প্রশ্নের অবসান ঘটতে যাচ্ছে আগামী ২৫ ডিসেম্বর। ফিরছেন তারেক রহমান।

 

 

সুত্র: জাগো নিউজ