অনলাইন সংস্করণ | ভোলা, রবিবার, ২৮শে ডিসেম্বর ২০২৫ | ১৩ই পৌষ ১৪৩২


জলবায়ু ঝুঁকিতে জেলেরা নেই প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী


চরফ্যাসন প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১১ই ডিসেম্বর ২০২৫ রাত ০৯:২২

remove_red_eye

৭৬

চরফ্যাশন প্রতিনিধ : চরফ্যাশন উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে কোস্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত  ❝জলবায়ু পরিবর্তন দুর্যোগ ঝুঁকিতে সমুদ্রগামী জেলেরা❞ নেই প্রয়োজনীয় সুরক্ষা সামগ্রী❞ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোস্ট ফাউন্ডেশনের এম.এ হাসানের উপস্থাপনায় সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লোকমান হোসেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন,উপজেলা কৃষি  কর্মকর্তা নাজমুল হুদা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জিএম ওয়ালিউল ইসলাম। সেমিনারে সমুদ্রগামী জেলে, ট্রলার মালিক, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশগ্রহণ করেন। এম.এ হাসান চরফ্যাশন উপজেলার মৎশ্যঘাট এর তথ্য বিশ্লেষনের ভিত্তিতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। জানা যায় মৎস্যঘাটের ট্রলারগুলো গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়, জিপিএস বাধ্যতামূলতক থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে রয়েছে মাত্র ৬% ট্রলারে। বড় ও মাঝাড়ি ১৩৭৮ টি ট্রলার সরকারি ভাবে নিবন্ধিত হওয়ার কথা থাকলে ও ৯০% ট্রলারের নিবন্ধন নেই। বড় ট্রলার গুলোতে ২০-২৫জন জেলের বিপরীতে লাইফ জ্যাকেট থাকে মাত্র ৩-৪টি, ২-৩টি ট্রলারে বয়া থাকেলেও বাকিগুলোতে নেই, এছারা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ১৭টি নিরাপত্তা সামগ্রীর সবই অনুপস্থিত।
জেলেরা অভিযোগ করেন, গভীর সাগরে জরুরি যোগাযোগ ডিভাইস ভিএইচএফ, ওয়ারলেস বা জিপিএস না থাকায় সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে তারা। ফলে প্রতিবছরই মৎস্য আহরণ করতে গিয়ে দুর্যোগে প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সমুদ্রে ঝড়ের কবলে পড়লে যে কটা লাইফ জ্যাকেট থাকে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারিও বাঁধে। তাদের অভিযোগ সরকার বা ট্রলার মালিকের পক্ষ থেকে এই ব্যপারে কোন উদ্যোগ নেই। এছাড়াও অনেক সময় যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে ট্রলারগুলো বিকল হয়ে যায় উদ্ধারের ব্যবস্থা থাকে না, এছারাও দুর্যোগের সময় স্রোতের টানে পাশ্ববর্তী দেশের আইন শৃংখলা বাহিনী কর্তৃক ধৃত হলেও উদ্ধার তৎপড়তা অনুপস্থিত। 
বক্তারা বলেন, জেলেদের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আধুনিক আবহাওয়া সতর্কীকরণ ব্যবস্থা, উপকূলের জেলেদের জন্য দ্রুত বার্তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা (এসএমএস এলার্ট ভিএইচএফ রেডিও) নিরাপদ নৌযান ও সরঞ্জাম সরবরাহ, সব নৌ ট্রলারে পর্যাপ্ত লাইফ জ্যাকেট, লাইফ বয়া, ফ্লেয়ার, জিপিএস বাধ্যতামূলক করা। পাশাপাশি নৌযানের কাঠামো শক্তিশালী করা ও নিয়মিত ফিটনেস পরীক্ষা করা। সমুদ্রগামী জেলেদের প্রশিক্ষণ দেয়া। দুর্যোগের সময় কীভাবে নিজেদের রক্ষা করবে এ বিষয়ে নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেয়া। জিপিএস, ভিএইচএফ যোগাযোগ, আবহাওয়া সংকেত বোঝার প্রশিক্ষন দেয়া। সুরক্ষিত আশ্রয়কেন্দ্র ও ঘাট উন্নয়ন করা। ঝড়ের সময় নৌকা রাখতে নিরাপদ ঘাট ও শেল্টার তৈরি করা। সামাজিক নিরাপত্তা ও বীমা সুবিধা দেয়া। জেলেদের জন্য বিশেষ জীবন বীমা, দুর্ঘটনা বিমা দেয়া। দুর্যোগে নৌকা নষ্ট হলে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা ও পরিবারগুলোর জন্য ভর্তুকি এবং বিশেষ সহায়তা দেয়া। বিকল্প জীবিকার জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া। ঘন-ঘন দুর্যোগ এলাকায় জেলেদের জন্য অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ সৃষ্টির উদ্যেগ গ্রহণ করা উচিত।